অমনোযোগী: নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে কলকাতা পুরভোটের মনোনয়নপত্র জমা করছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরা। বাইরে শিকেয় উঠছে দূরত্ব-বিধি। ছবি: রণজিৎ নন্দী।
কালটা যে করোনার, দুর্গাপুজো থেকে জগদ্ধাত্রী পুজো পর্যন্ত উৎসবের দীর্ঘ পর্বে আমজনতার একটি বড় অংশ তার তোয়াক্কা করেনি। পুরভোটের কলকাতায় রাজনৈতিক শিবিরের একাংশও এখন তা মনে রাখতে চাইছে না বলে অভিযোগ। কোভিড বিধি মেনে কলকাতা পুরসভার আসন্ন ভোট এবং তার প্রচারের পদ্ধতি স্থির করে দিয়েছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। অভিযোগ, অনেক ক্ষেত্রেই সেই বিধি মানার তাগিদ দেখা যাচ্ছে না।
কমিশন সূত্রের খবর, আজ, বুধবার কলকাতা পুরসভা এলাকায় পর্যবেক্ষকেরা নজরদারি শুরু করবেন। সব দলেরই প্রার্থীরা যাতে বাইক মিছিল এবং গাড়ির কনভয় নিয়ে প্রচার নিয়ন্ত্রণ করেন এবং মাইক ব্যবহারের নির্দিষ্ট বিধি মেনে চলেন, তার উপরে চলবে নজরদারি। কলকাতার পুরভোট ঘোষণার দিনেই কমিশন ছোট মিটিং-মিছিলের উপরে জোর দিয়েছিল। বলা হয়েছিল, বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচারে সর্বাধিক পাঁচ জন থাকতে পারবেন প্রার্থীর সঙ্গে। কিন্তু বাস্তব চিত্র ভিন্ন। সংক্রমণে ভাটার টান, তবে কোভিড বিদায় নেয়নি। সর্বোপরি ওমিক্রনের রক্তচক্ষু নতুন করে আতঙ্ক বাড়াচ্ছে। স্বাস্থ্য-বিশেষজ্ঞদের মতে, এখন স্বাস্থ্যবিধি মেনে না-চললে উল্টো ফল হতে পারে। বিধানসভা ভোটের সময় কোভিড সংক্রমণ কী ভাবে বেড়েছিল, তা মনে করিয়ে দিচ্ছেন তাঁরা।
কমিশন সূত্রের খবর, মঙ্গলবারেই সব দলকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, বাইক মিছিল করা যাবে না। প্রচারে কনভয়ে সর্বাধিক পাঁচটি গাড়ি থাকতে পারে। কলকাতার পুরভোটে ১৬ জন (প্রতিটি বরোয় এক জন) পর্যবেক্ষককে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। থাকছেন চার জন বিশেষ পর্যবেক্ষকও (প্রত্যেকে চারটি বরোর দায়িত্বে)। ভোটের সাত দিন আগে থেকে পুরসভার ওয়ার্ড অফিসে স্বাস্থ্য দফতরের সহযোগিতায় টিকাকরণ কর্মসূচি হবে। যাঁদের টিকা বকেয়া রয়েছে, সেখানে তাঁরা টিকা নেওয়ার সুযোগ পাবেন। কমিশনের এক কর্তা বলেন, “কোভিড বিধি মেনে চলা হচ্ছে কি না, তার উপরে নজরদারি চালানোর জন্য অতিরিক্ত নির্দেশ দেওয়া হয়েছে প্রত্যেক পর্যবেক্ষককে। অভিযোগ জানানোর নির্দিষ্ট পদ্ধতিও রয়েছে। অভিযোগ পেলে সঙ্গে সঙ্গে পদক্ষেপ করা হবে।” জাতীয় নির্বাচন কমিশনের মতো রাজ্য নির্বাচন কমিশনও ভোটারদের জন্য অনলাইনে অভিযোগ জানানোর ব্যবস্থা করেছে। সেখানে আসা অভিযোগের নিষ্পত্তির জন্য এক ঘণ্টা সময় বরাদ্দ হয়েছে।
কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, রাত ৯টার পরে প্রচারে মাইক ব্যবহার করা যাবে না। দেওয়াল লিখনের ক্ষেত্রেও মানতে হবে বিধি। সরকারি ভবনের দেওয়াল প্রচারের কাজে ব্যবহার করা নিষিদ্ধ। ব্যক্তিগত বাড়ির দেওয়ালে লিখতে চাইলে মালিকের অনুমতি নেওয়া বাধ্যতামূলক। পুরভোটে কোনও ওয়ার্ডে প্রার্থীর এজেন্ট হতে হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে সেই ওয়ার্ডেরই ভোটার ও বাসিন্দা হতে হবে।