রাজ্য বিজেপি-র সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। —নিজস্ব চিত্র।
কলকাতা তথা রাজ্যে অগণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরি হয়েছে। এখানে নির্বাচন করানোর মতো পরিবেশই নেই। কলকাতা পুরভোটে শাসকদলের বিরুদ্ধে তোপ দেগে এ দাবি করলেন রাজ্য বিজেপি-র সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। পুরভোটে শাসকদলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের দাবি তুলে রবিবার রাজ্য জু়ড়ে জেলায় জেলায় বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে বিজেপি। তবে শাসকদলের দাবি, এ সবই বিজেপি-র নাটক।
রবিবার দক্ষিণ দিনাজপুর, দুই ২৪ পরগনা, দুই মেদিনীপুর, মুর্শিদাবাদ, হুগলি-সহ রাজ্যের একাধিক জেলায় বিক্ষোভ প্রদর্শন করে বিজেপি। দক্ষিণ দিনাজপুরে নিজের লোকসভা কেন্দ্র বালুরঘাটে দলীয় কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচিতে শামিল হন সুকান্তও। সংবাদমাধ্যমের কাছে তাঁর দাবি, ‘‘যে অগণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরি হয়েছে পশ্চিমবঙ্গে বিশেষ করে কলকাতায়, আমরা তার প্রতিবাদ জানাচ্ছি। কলকাতা বা রাজ্য পুলিশকে দিয়ে সুষ্ঠু ও অবাধ পুরভোট করানো সম্ভব নয়। তাই কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট করানোর জন্য রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে আগেই অনুরোধ করেছিলাম। তবে তা হয়নি। আমরা এই পুরভোটকে নির্বাচন বলেই মনে করছি না। সে পরিবেশই তো এখানে নেই।’’ সুকান্তের মতে, ‘‘সব ওয়ার্ডে পুনর্নির্বাচন হওয়া উচিত। কোথায় গণতন্ত্র? মীনাদেবী পুরোহিতের মতো বয়স্ক কাউন্সিলারের জামাকাপড় টেনে খুলে দেওয়া হয়েছে কলকাতায়। এটি লজ্জাজনক ঘটনা। গণতন্ত্রে এ ধরনের ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না।’’
পুরভোটে পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন সুকান্ত। তিনি বলেন, ‘‘বোমা পড়লে পুলিশ বলছে, চকোলেট বোমা। অথচ স্থানীয়েরা বলছেন, বোমায় আঘাতে আমরা আহত হতে পারতাম। তবে কলকাতা পুলিশের আধিকারিক বলছেন, ‘এ নিয়ে তদন্ত হবে, কেউ তো মারা যাননি!’ এই হচ্ছে কলকাতা তথা পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের বোমার সংজ্ঞা।’’ কলকাতা জুড়ে শাসকদলের সন্ত্রাসের অভিযোগও করেছেন তিনি। সুকান্তের কথায়, ‘‘বুথে ঢুকে সিসিটিভি-র মুখ ঢেকে দেওয়া হচ্ছে। আমাদের এজেন্টদের মারধর করে তাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। তার পরেও বলা হচ্ছে যে শান্তিপূর্ণ ভোট হচ্ছে।’’
যদিও সুকান্তের অভিযোগ নস্যাৎ করেছে তৃণমূল। চুঁচুড়ার তৃণমূল বিধায়ক অসিত মজুমদারের পাল্টা দাবি, বিজেপি জেলা জু়ড়ে অবরোধ করলেও তাতে জমায়েত দেখা যায়নি। তাঁর কটাক্ষ, ‘‘বিজেপি-র অবরোধে লোক নেই। গন্ডগোল ও সন্ত্রাস হচ্ছে বলে নাটক করছে বিজেপি। আমাদের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘ভোটের উৎসব হবে।’ উৎসব মানে কি গন্ডগোল? আমাদের গন্ডগোল করার কোনও প্রয়োজন নেই। ওদের তো বুথে বসারও লোক নেই। মানুষের মন ভোলাতে এ সব নাটক। মানুষ এদের সঙ্গে নেই। আরশোলা যদি বলে আমি পাখি! তা হলে আরশোলা কি পাখি হবে?’’