গরমে এলাকার জলকষ্ট কমাতে ধাপার ‘জয়হিন্দ’ জলপ্রকল্পের জলাধারের ধারণ ক্ষমতা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিল কলকাতা পুরসভা। ‘জয়হিন্দ’ জলাধারের প্রাত্যহিক জলধারণ ও জল সরবরাহের পরিমাণ ৩ কোটি গ্যালন থেকে বাড়িয়ে ৮ কোটি গ্যালন করতে ফের সমীক্ষা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে পুরসভার জল সরবরাহ দফতর সূত্রের খবর।
‘জয়হিন্দ’ জলাধার থেকে ই এম বাইপাস সংলগ্ন এলাকায় পানীয় জল সরবরাহ করা হয়। গরফা, শহিদনগর, পাটুলি, ঢাকুরিয়া ও বাঘা যতীন এলাকার একাংশেও জল সরবরাহ করা হয় এখান থেকে। পুরসভার জল সরবরাহ দফতরের এক আধিকারিক জানাচ্ছেন, বামফ্রন্ট আমলে উদ্বোধন হয়েছিল এই প্রকল্পের। পরে যে সমস্ত জায়গায় ওই জলাধার থেকে জল সরবরাহ করা হয়, সেখানে বহুতল এবং জনসংখ্যা অনেক বেড়ে যায়। ফলে জলের চাপ কমে। তাই প্রতি বছর গরমে এলাকায় শুরু হয় জলকষ্ট। সেই সমস্যার সমাধান করতেই গার্ডেনরিচ জলাধারের পাশাপাশি ধাপার ‘জয়হিন্দ’ জলাধারের জলধারণ ক্ষমতা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুরসভা। প্রসঙ্গত, গার্ডেনরিচ জলপ্রকল্প থেকে বর্তমানে প্রতিদিন ১৮ কোটি গ্যালন জল সরবরাহ করা হয়। সেখানে আরও ২ কোটি ৫০ লক্ষ গ্যালন জল সরবরাহের সংস্থান করা হচ্ছে। পলতা থেকে বর্তমানে পানীয় জল সরবরাহের পরিমাণ প্রায় ২২ কোটি।
পুরসভা সূত্রের খবর, ধাপার এই জলপ্রকল্পের জন্য বাগবাজারের মায়ের ঘাট থেকে জল তোলা হয়। এর পরে সেই অপরিশুদ্ধ জল পরিস্রুত করে এলাকায় সরবরাহ করা হয়। কিন্তু নতুন করে প্রতিদিন অতিরিক্ত ৫ কোটি গ্যালন জল পরিস্রুত করে সরবরাহ করতে যে পরিমাণ অপরিশুদ্ধ জল তোলা দরকার, তার পরিকাঠামো রয়েছে কি না, উঠছে সেই প্রশ্ন। তবে পুর কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, জয়হিন্দ জলাধার তৈরির সময়েই পরবর্তী ২০ বছরে এলাকায় জনসংখ্যা কত বাড়তে পারে, তার আনুমানিক পরিসংখ্যান করা হয়েছিল। ফলে গঙ্গা থেকে অতিরিক্ত অপরিশুদ্ধ জল তোলার মতো পরিকাঠামো এখানে রয়েছে। পুরসভার নতুন সমীক্ষার ভিত্তিতে প্রাথমিক ভাবে কত কোটি পরিস্রুত গ্যালন জল তৈরি করা হবে, সেই ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। প্রয়োজনে পর্যায়ক্রমে সেই পরিমাণ আরও বাড়ানোও হতে পারে।
‘জয়হিন্দ’ জলাধার তৈরির আগে গার্ডেনরিচ থেকে ঢাকুরিয়ার তেলিপাড়া জলাধারের মাধ্যমে জল সরবরাহ করা হত। কিন্তু সেই পরিমাণ ছিল অল্প। ‘জয়হিন্দ’ জলাধার থেকে তেলিপাড়া জলাধারে জল এলেও তা তুলনায় অপর্যাপ্ত। ফলে এলাকার বেশির ভাগ বাসিন্দাই পানীয় জল পান না। স্থানীয় কাউন্সিলর মধুছন্দা দেবের অভিযোগ, তেলিপাড়ার জলাধারে ‘জয়হিন্দ’ জলপ্রকল্পের পানীয় জল এলেও তা ৯২ নম্বর ওয়ার্ডের সব জায়গায় সরবরাহ করা যায় না। এর জন্য পরিকাঠামোগত ত্রুটি রয়েছে বলে তিনি জানান। ওই ওয়ার্ডে সব চেয়ে কম জল সরবরাহ করা হয় বলেও তাঁর অভিযোগ। যদিও পুর কর্তৃপক্ষ এ নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি।