অস্থায়ী হোর্ডিং লাগানোর ক্ষেত্রে বেশ কিছু কড়া পদক্ষেপ করতে চলেছে কলকাতা পুরসভা। —ফাইল চিত্র।
শারদোৎসবের সূচনার আর এক মাস বাকি নেই। উৎসবের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে কলকাতার সব পুজো কমিটি। এই প্রস্তুতির অঙ্গ হিসাবে পুজো কমিটিগুলি নিজ নিজ বিজ্ঞাপনদাতাদের জন্য অস্থায়ী হোর্ডিং লাগানোর বন্দোবস্ত করছে। গত কয়েক বছরের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে অস্থায়ী হোর্ডিং লাগানোর ক্ষেত্রে বেশ কিছু কড়া পদক্ষেপ করতে চলেছে কলকাতা পুরসভা। আর কয়েক দিনের মধ্যেই পুজোর সময়ের অস্থায়ী বিজ্ঞাপনে ছেয়ে যাবে কলকাতা পথঘাট। রাস্তার ধারে কিংবা রেলিংয়ের উপর বাঁশের খাঁচা তৈরির কাজ এখন প্রায় শেষের পথে। তার পর লাগানো হবে অস্থায়ী বিজ্ঞাপনের হোর্ডিং এবং ব্যানার। গত কয়েক বছরে দেখা গিয়েছে পুজোপর্ব মিটে যাওয়ার পর সেই সব হোর্ডিং এবং ব্যানার খোলার আর লোক পাওয়া যায় না। কোন পুজো কমিটির পক্ষ থেকে ওই হোর্ডিং ও ব্যানারগুলি লাগানো হয়েছে তা-ও জানতে পারে না কলকাতা পুরসভা। এ ক্ষেত্রে পুজোর পর শহর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করতে বেশ বেগ পেতে হয় কর্তৃপক্ষকে।
তাই এ বার সিদ্ধান্ত হয়েছে যে, পুজোর বিজ্ঞাপনের হোর্ডিং বা ব্যানারের তলায় বিজ্ঞাপনদাতা সংস্থা এবং সংশ্লিষ্ট পুজো কমিটির নাম রাখা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। সেই সঙ্গে কলকাতা পুরসভার তরফে জানানো হয়েছে, বিজয়া দশমীর সাত দিনের মধ্যে খুলে ফেলতে হবে সমস্ত অস্থায়ী বিজ্ঞাপন। তা না হলে পুরসভা বিজ্ঞাপনের হোর্ডিং এবং ব্যানার খুলে নিয়ে বাঁশ ও অন্যান্য সামগ্রী বাজেয়াপ্ত করবে। এমন সিদ্ধান্তের কারণ প্রসঙ্গে জানা গিয়েছে, গত বছর পুজো শেষ হওয়ার পর বিজ্ঞাপন না নামানোয় এক-দেড় মাস পর সেগুলি পুরসভাকেই খুলতে হয়েছে। যা মোটেই ভাল চোখে দেখেননি পুরসভা কর্তৃপক্ষ। তাই এ বার উৎসব পর্ব মিটে যাওয়ার পর তেমন কিছু বরদাস্ত করা হবে না। নিয়ম না মানলে জরিমানার পথেও হাঁটতে পারে পুরসভা।
পুজোয় সময় অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, প্যান্ডেলের সামনে বা কাছের কোনও জায়গায় বিজ্ঞাপনের হোর্ডিং এবং ব্যানার লাগানো হয়েছে। কিন্তু সেখান থেকে কোনও টাকা পায়নি সংশ্লিষ্ট পুজো কমিটি। এ ক্ষেত্রে পুজো কমিটিগুলিকে না জানিয়েই বিজ্ঞাপনের হোর্ডিং লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাই এ বার প্রত্যেক বিজ্ঞাপন এজেন্সিকে কলকাতা পুরসভার তরফে চিঠি দিয়ে বলা দেওয়া হয়েছে, পুজোর বিজ্ঞাপনে হোর্ডিংয়ে সংস্থার নাম এবং কোন পুজো কমিটির হয়ে তা লাগানো হয়েছে, তার উল্লেখ রাখতেই হবে। কোনও অভিযোগ এলে সেই হোর্ডিং বা ব্যানার নামানোর ব্যবস্থাও করতে হবে তাদেরকেই। পুরসভার এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘গত কয়েক বছরে পুজোর পর হোর্ডিং সরাতে কলকাতা পুরসভাকে যথেষ্ট বেগ পেতে হয়েছে। শহর জুড়ে সেই হোর্ডিং খোলাতে অনেক অর্থ খরচ করতে হয়েছে পুরসভাকে। তাই সেই দায় আর পুরসভাকে নিতে নারাজ। ফলে এ বার অনেক আগে থাকতেই নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে।’’