কলকাতা পুরসভার প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম। নিজস্ব চিত্র।
কলকাতার করোনা পরিস্থিতি নিয়ে নড়েচড়ে বসল পুলিশ-প্রশাসন। গত কয়েক দিন ধরেই রাজ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। তা নিয়ে আগেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন চিকিৎসকেরা। এ বার শহরে মাস্ক পরা এবং দূরত্ববিধি নিয়ে ফের কড়া পদক্ষেপ করতে চলেছে পুলিশ এবং পুরসভা।
বাজার, রাস্তাঘাটে, গণ পরিবহণে যাতায়াতের সময় অধিকাংশ মানুষের মুখেই মাস্কের দেখা মিলছে না। দূরত্ববিধিও শিকেয় উঠেছে। এই পরিস্থিতিতে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ফের চরিত্র বদলে ‘হামলা’ করছে করোনা। এ রাজ্যে পরিস্থিতি এখনও হাতের বাইরে না গেলেও, দিন দিন আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় ‘সিঁদুরে মেঘ’ দেখছেন চিকিৎসকেরা। তাঁদের বক্তব্য, এখনই কড়া হাতে পরিস্থিতি মোকাবিলা না করলে ‘দ্বিতীয় ঢেউ’ আছড়ে পড়বে বাংলায়।
শুক্রবার কলকাতা পুরসভার প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম বলেন, “আমি শহরবাসীর কাছে হাতজোড় করে অনুরোধ করছি, আপনারা করোনার বিধিনিষেধ মানুন। মাস্ক পরতে হবে এবং দূরত্ববিধি মানতেই হবে। শুক্রবার কলকাতায় ১৫০ জন আক্রান্ত হয়েছেন। যা দিন কয়েক আগে ৩০-এ নেমে গিয়েছিল।”
সবাইকে করোনার প্রতিষেধক নেওয়ার অনুরোধ জানান ফিরহাদ। তাঁর কথায়, “কোভিড টেস্ট বাড়ানোর চেষ্টা চলছে। আমার প্রত্যেককেই টিকা দেওয়ার বিষয়ে কেন্দ্রকে বলেছি। এখনও জবাব আসেনি। বয়স্ক এবং যাঁদের কো-মর্বিডিটি রয়েছে, তাঁদের টিকা নিতে অনুরোধ করছি।”
এক দিকে যেমন কলকাতা পুরসভার তরফে সচেতনতার বিষয়ে জোর দেওয়া হচ্ছে, তেমনই পুলিশের তরফে রাস্তাঘাটে নজরদারিও বাড়ানো হচ্ছে। শুক্রবার লালবাজারে সমস্ত ডিসি-দের নিয়ে বৈঠক করেন কলকাতা পুলিশের পদস্থ কর্তারা। ওই বৈঠকে মাস্ক এবং দূরত্ববিধি নিয়ে কড়া অবস্থান নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি থানা এলাকায় নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যাঁরা করোনার বিধি মানবেন না, তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করার পথে হাঁটতে চলেছে লালবাজার।
গত দু’দিন ধরে দৈনিক মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৩০০-র উপরে রয়েছে। এক সপ্তাহ আগেও এই সংখ্যা আড়াইশোর আশপাশে ছিল। বুধবার সেই সংখ্যা ৩০০ পেরিয়ে যায়। বৃহস্পতিবার এক লাফে সংখ্যাটা পৌঁছে গিয়েছে ৩২৩-এ। কলকাতা ছাড়াও হাওড়া এবং দুই ২৪ পরগনাতেও করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। ভোটের মরসুমে মিটিং-মিছিলে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি আরও বাড়িয়েছে বলে মনে করছেন চিকিৎসকেরা। তা নিয়ে ইতিমধ্যে নির্বাচন কমিশনের কাছে ওয়েস্ট বেঙ্গল ডক্টরস ফোরামের তরফে ই-মেল করা হয়েছে। তাদের বক্তব্য, মানুষকে যেমন সচেতন হতে হবে, তেমনই পুলিশ এবং প্রশাসনিক কর্তাদেরও কড়া হতে হবে। এ বার সেই পথেই হাঁটতে চলেছে কলকাতা পুরসভা এবং লালবাজার।