নিজস্ব চিত্র
‘খেলা হবে’ শব্দবন্ধে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। এ বার আদালতের ভিতরেও ‘খেলা হবে’ নিয়ে সরব এক অভিযুক্ত। সৌজন্যে তালতলা থানার পুলিশকে নিগ্রহ মামলা। অভিযোগের আঙুল সরাসরি পুলিশের দিকে।
মৌলালির কাছে দীনেশ মজুমদার ভবনের সামনে পুলিশকে নিগ্রহের ঘটনায় মঙ্গলবার গ্রেফতার হন দীপঙ্কর সেনগুপ্ত। বুধবার আদালতে তাঁকে পেশ করা হয়। পুলিশ হেফাজতের আবেদন করা হলেও, তা খরিজ করে দেয় ব্যাঙ্কশাল আদালত। অভিযুক্ত পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন। তাঁর অভিযোগ, পুলিশ তাঁকে গ্রেফতারের পর অকথ্য অত্যাচার চালিয়েছে। গাড়ির ভেতরেই শহরের একাধিক জায়গায় গাড়ি দাঁড় করিয়ে তাঁকে মারধর করা হয়েছে। তাঁর আরও অভিযোগ, সেই সময় তাঁকে এক পুলিশকর্মী বলেন, ‘‘এ বার তোকে নিয়ে খেলা হবে।’’
অভিযু্ক্তের কাছ থেকে এ কথা শুনে বিচারক নিজে আঘাত খতিয়ে দেখেন এজলাসের ভিতরে। শুধু তাই নয়, দীপঙ্করকে পুলিশ গ্রেফতারের পর মারধর করেছে কি না, তালতলা থানার ওসি-কে তদন্ত করে আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন তিনি। দীপঙ্কর বিচারককে জানান, তিনি যে গাড়ি চালান, সেটিও পুলিশ আটক করেছে। গাড়ির ভেতর গাঁজা রেখে দিয়ে তাঁর নামে মাদক মামলা দায়ের করার হুঁশিয়ারি দিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন দীপঙ্কর। এমনকি তার ছবি তুলে ভাইরাল করারও হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ।
অভিযুক্তের আইনজীবী বিচারককে বলেন, ‘‘পুলিশের মারে এক জনের মৃত্যু হয়েছে। আমরা চাই না আর এক জনের পুলিশি হেফাজতে মৃত্যু হোক। আদালত নিজের চোখে দেখুক, কী ভাবে মারা হয়েছে? আমরা জামিন চাইছি, যে কোনও শর্তে।’’
অন্য দিকে সরকারি আইনজীবী আদালতে বলেন, ‘‘ঘটনার সময় যে পুলিশ কর্মীরা মোতায়ন ছিলেন, তাঁরা আন্দোলনকারীদের সরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেছিলেন। যাতে যান চলাচল স্বাভাবিক থাকে। কিন্তু আন্দোলনকারীরা পুলিশের কথায় কান দেয়নি। পরিস্থিতি অনেক খারাপ হতে পারত। ধৃতকে হেফাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করলে এই ঘটনায় আরও কারা জড়িত আছেন, তাঁদের খোঁজ মিলতে পারে। তাই পুলিশ হেফাজত দেওয়া হোক।’’
দু’পক্ষের সওয়ালজবাব শুনে দীপঙ্করকে আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।