n বিপত্তি: বৃষ্টিতে ভেঙে পড়েছে কসবার পুরনো থানার একাংশ। গার্ডরেল দিয়ে বন্ধ করা হয়েছে পাশের রাস্তা দিয়ে চলাচল। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক
ঝিরঝিরে বৃষ্টির মধ্যে ভেঙে পড়ল পুরনো একটি থানার একাংশ। তবে মঙ্গলবার আর কে চ্যাটার্জি রোডে কসবার পুরনো থানারওই ঘটনায় কেউ হতাহত হননি। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে বিপজ্জনক হয়ে থাকা বাড়িটি কেন ভাঙা হচ্ছে না, সেই প্রশ্ন তুলেছেন এলাকার বাসিন্দারাই। তাঁরা জানিয়েছেন, ওই বাড়ির পাশ দিয়ে ঝুঁকি নিয়েই তাঁরা যাতায়াত করেন। আগেও বাড়িটির একাংশ ভেঙে পড়েছিল বলে জানাচ্ছেন বাসিন্দারা।
এ দিন দুপুর দেড়টা নাগাদ ঝিরঝিরে বৃষ্টি হচ্ছিল। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, তখনই আচমকা হুড়মুড়িয়ে কোনও কিছু ভেঙে পড়ার শব্দ কানে আসে। মিনতি নস্কর নামে এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, থানার পাশে ওই রাস্তার উপরেই তেতলা দেওয়ালের ইট হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়তে দেখেন তিনি। যেখানে দেওয়াল ভেঙে পড়ে, সেখানেই একটি গাড়ি দাঁড়িয়ে ছিল। গাড়িটি যথেষ্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে খবর। মিনতি বলেন, ‘‘দেওয়াল যখন ভাঙতে শুরু করল, তখনই দু’জন পথচারী ওই থানার পাশের রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলেন। এক জন সাইকেল নিয়ে, অন্য এক মহিলা ছাতা মাথায় হেঁটে যাচ্ছিলেন। তাঁরা দ্রুত সেখান থেকে সরে যাওয়ায় কোনও মতে বেঁচে যান। না-হলে আজ বড় অঘটন ঘটে যেত।’’ এ দিনের দুর্ঘটনার পরেই এলাকার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয় বলে জানান বাসিন্দারা।
সূত্রের খবর, বহু বছর ধরেই কসবার ওই পুরনো থানায় কাজকর্ম হয় না। এ দিকে, বিপজ্জনক রকম জীর্ণ তেতলা বাড়িটি তাঁদের কাছে আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাঁদের দাবি, স্থানীয় কাউন্সিলর, বিধায়ক, পুরসভা, পুলিশ— সকলের কাছেই বার বার তাঁরা লিখিত অনুরোধ জানিয়েছেন যে, ওই বাড়িটি ভেঙে ফেলা হোক। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। ওই বাড়ির পাশেই থাকেন সুপ্রিয়া দে। তিনি বললেন, ‘‘বাড়িটা আগাছায় ভরে গিয়েছে। সাপ আর বিভিন্ন পোকামাকড়ের আস্তানা হয়ে রয়েছে। ওই বাড়ির ছাদে বেড়ে ওঠা গাছ আমাদের বাড়িতে চলে এসেছে। এ জন্য আমরা জানলা খুলতে পারি না।’’
ওই জীর্ণ বাড়ি সংলগ্ন আরও এক বাসিন্দা পুষ্পল আঢ্য বললেন, ‘‘দুপুরে বিকট শব্দ শুনে আতঙ্কে বাড়ির বাইরে বেরিয়ে আসি। দেখি, রাস্তার অনেকটা অংশ জুড়ে দেওয়াল ভেঙে পড়ে আছে। এর আগে যখন এক বার ওই বাড়ির একাংশ ভেঙে পড়েছিল, সে বারেও কয়েক জন পথচারী অল্পের জন্য বেঁচে গিয়েছিলেন। এর পরে কি মৃত্যু হলে তবে প্রশাসনের টনক নড়বে?’’
এ দিন দেখা গেল, দেওয়াল জুড়ে গাছের শিকড় মাকড়সার জালের মতো ছড়িয়ে পড়েছে। তত ক্ষণে খবর পেয়ে কিছু ডাল ছাঁটার কাজও শুরু করেছে পুরসভা। স্থানীয়দের অভিযোগ, কিছু ঘটলে ওই বাড়ির দেওয়ালে গজিয়ে ওঠা গাছের ডাল ছেঁটে দায় সারার চেষ্টা হয়। কিছু দিন পরে ফের ডালপালা বেড়ে যায়। কেন বিপজ্জনক সত্ত্বেও ভেঙে ফেলা হচ্ছে না পরিত্যক্ত বাড়িটি? কলকাতা পুরসভার ডিজি (বিল্ডিং) অনিন্দ্য কারফর্মা বলছেন, ‘‘পুরসভার লোকজন গিয়েছেন। বাড়িটি ভেঙে ফেলার কাজ শুরু হয়েছে।’’