ওই লাইনে আপাতত একটি করেই ট্রেন চলবে। ফাইল চিত্র।
সব কিছু ঠিক থাকলে চলতি মাস থেকেই যাত্রী-পরিষেবা শুরু হতে পারে জোকা-তারাতলা মেট্রোয়। আগামী কাল, বৃহস্পতিবার চূড়ান্ত পর্বে ওই রুটের মেট্রো ব্যবস্থার যাবতীয় পরিকাঠামো খতিয়ে দেখার কথা রয়েছে রেলওয়ে সেফটি কমিশনারের। তাঁর সবুজ সঙ্কেত মিললেই পরিষেবা চালু হতে পারবে। সপ্তাহখানেক আগেই ওই মেট্রোয় যাত্রী-পরিষেবা শুরু করার বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করে প্রয়োজনীয় ছাড়পত্র চেয়ে পরিদর্শনের আর্জি জানানো হয়েছিল মেট্রো কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে।
গত ১৫ সেপ্টেম্বর প্রথম বার জোকা ও তারাতলার মধ্যে সাড়ে ছ’কিলোমিটার দীর্ঘ মেট্রোপথে মহড়া দৌড় অনুষ্ঠিত হয়। ওই পথে মোট ছ’টি স্টেশনকে নিয়ে প্রথম পর্যায়ে পরিষেবা শুরু করতে উদ্যোগী হচ্ছেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ। ওই ছ’টি স্টেশন হল: জোকা, ঠাকুরপুকুর, শখেরবাজার, বেহালা চৌরাস্তা, বেহালা বাজার এবং তারাতলা।
তবে তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে ওই লাইনে আপাতত একটি করেই ট্রেন চলবে। একটি ট্রেন প্রান্তিক স্টেশন থেকে ছেড়ে অন্য প্রান্তে পৌঁছনোর পরে ফের সেই ট্রেন উল্টোমুখে ফিরে আসবে। যাত্রী-পরিষেবা শুরু করার জন্য স্টেশন প্রস্তুত রাখা ছাড়াও আপ এবং ডাউন লাইনও ইতিমধ্যেই তৈরি রাখা হয়েছে। পরিদর্শনে এসে উত্তর সীমান্ত রেলের ভারপ্রাপ্ত রেলওয়ে সেফটি কমিশনার ওই মেট্রোপথে ট্রেন চালানোর পরিকাঠামো ছাড়াও স্টেশনগুলির অবস্থা খতিয়ে দেখবেন।
প্রথম ধাপে রেলওয়ে সেফটি কমিশনারের পরিদর্শন-পর্ব সামলানোর জন্য মোট ১২ জন মেট্রোকর্মীকে সাময়িক ভাবে বদলি করা হয়েছে। গত ৭ নভেম্বর থেকে আগামী ১১ নভেম্বরের মধ্যে এই পরিদর্শন-পর্ব সামাল দেবেন ওই ১২ জন কর্মী। ছ’টি স্টেশনের দায়িত্ব তাঁদের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। পরিদর্শন-পর্ব মিটলে স্টেশন পরিচালনার জন্য কর্মীদের সেখানে আনানোর ব্যবস্থা করা হবে বলে সূত্রের খবর। তবে এ ভাবে ওই রুটে সারা দিনে একটিমাত্র ট্রেন চালানোর ব্যবস্থা যাত্রীদের কতটা কাজে আসবে, সেই প্রশ্নটা থাকছেই।
প্রায় দশ বছর ধরে ওই প্রকল্পের নির্মাণকাজ অতি মন্থর গতিতে এগিয়েছে। তাই খানিক মুখরক্ষার তাগিদেই তড়িঘড়ি পরিষেবা শুরুর চেষ্টা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ ওয়াকিবহাল মহলের। জোকা-তারাতলা রুটে আধুনিক সিগন্যালিং ব্যবস্থা-সহ পুরোদস্তুর পরিষেবা শুরু করতে আরও অন্তত বছর দুয়েক লাগতে পারে বলে সূত্রের খবর। তত দিন যাত্রী-পরিষেবা থেকে সে ভাবে আয় না হলেও পরিষেবা সচল রাখার আর্থিক ভার বহন করতে হবে মেট্রোকে। তাই এমন পরিষেবা চালু করে কী লাভ, প্রশ্নটা থেকেই যাচ্ছে।