প্রতীকী ছবি।
খাস কলকাতায় বসেই চালানো হচ্ছিল জাল পাসপোর্ট ও ভিসা তৈরির কারবার। টাকা দিলেই তা পৌঁছে দেওয়া হত দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। অবশেষে দিল্লি পুলিশ ও কলকাতা পুলিশের যৌথ অভিযানে ধরা পড়ল সেই চক্রের চাঁই। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত ব্যক্তির নাম নন্দকিশোর প্রসাদ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েক দিন আগে দিল্লির চাণক্যপুরী থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছিলেন বিহারের বাসিন্দা এক ব্যক্তি। তাঁর অভিযোগ, বেশ কয়েক মাস আগে রুশ ভিসা পাওয়ার জন্য এক ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন তিনি। মোটা টাকার বিনিময়ে তাঁকে সেই ভিসা পাইয়ে দেওয়া হবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল ওই ব্যক্তি। এর বেশ কিছু দিন পরে রাশিয়ার ভিসা হাতে পান তিনি। কিন্তু সন্দেহ হওয়ায় দিল্লিতে রুশ দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। দূতাবাস ভিসা দেখে জানিয়ে দেয়, সেটি নকল।
ঘটনার তদন্তে নেমে দিল্লিরই এক বাসিন্দাকে গ্রেফতার করে সেখানকার পুলিশ। এর পরে ধৃতকে জেরা করতেই কলকাতার নন্দকিশোরের নাম সামনে আসে। নন্দকিশোরকে ধরতে কয়েক দিন আগে রাজধানী থেকে কলকাতায় এসে পৌঁছয় দিল্লি পুলিশের একটি বিশেষ দল। পুলিশ জানতে পারে, ওই ব্যক্তি হরিদেবপুর এলাকায় থাকতে শুরু করেছে। এর পরেই হরিদেবপুর থানা ও দিল্লি পুলিশের যৌথ অভিযানে শুক্রবার রাতে ধরা পড়ে নন্দকিশোর। ধৃতের ঘর থেকে বেশ কিছু নকল পাসপোর্ট, নকল স্ট্যাম্প, ভারত সরকারের হলোগ্রাম, ল্যাপটপ, প্রিন্টার, টাকা গোনার যন্ত্র উদ্ধার হয়েছে।
পুলিশ জেনেছে, নন্দকিশোর গত জুলাই মাস থেকে হরিদেবপুর এলাকায় ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে থাকছিল। কলকাতায় বসেই সে দেশ জুড়ে এই ব্যবসা চালাত বলে পুলিশের অনুমান। লক্ষ লক্ষ টাকার বিনিময়ে জাল পাসপোর্ট ও ভিসা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পৌঁছে দেওয়া হত বলেই মনে করছেন তদন্তকারীরা। দীর্ঘ দিন ধরেই এই চক্র সক্রিয় ছিল। এই চক্রে আরও কেউ কেউ জড়িত থাকতে পারে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। ধৃতকে জেরা করে বাকিদের সন্ধান পেতে চাইছে পুলিশ।
শনিবার নন্দকিশোরকে আলিপুর আদালতে তোলা হয়। দিল্লি পুলিশের আবেদনের ভিত্তিতে তিন দিনের ট্রানজ়িট রিমান্ডের নির্দেশ দেন বিচারক। পুলিশ এ বার তাকে দিল্লি নিয়ে যাবে।