উভমুখী হবে না লকগেট উড়ালপুল

টালা সেতুতে যান নিয়ন্ত্রণ শুরু হওয়ার পর থেকেই যন্ত্রণা বেড়েছে ওই এলাকার বাসিন্দাদের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০২০ ০২:২৯
Share:

সঙ্কীর্ণ: লকগেট উড়ালপুল সঙ্কীর্ণ। তাই সেখান দিয়ে উভমুখী গাড়ি চালানোর সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছে কলকাতা পুলিশ। নিজস্ব চিত্র

টালা সেতুতে যান নিয়ন্ত্রণ শুরু হওয়ার পর থেকেই যন্ত্রণা বেড়েছে ওই এলাকার বাসিন্দাদের। এমনকি, শ্যামবাজার দিয়ে যাতায়াতকারী নিত্যযাত্রীরাও সমস্যায় নাজেহাল। এই পরিস্থিতিতে অনেকেরই দাবি, চিৎপুর লকগেট উড়ালপুল দিয়ে গাড়ি চলাচল উভমুখী করলে সমস্যা কমতে পারে। অর্থাৎ, উড়ালপুলের এক দিক দিয়ে বি টি রোড থেকে বাগবাজারমুখী গাড়ি চলবে। অন্য দিক দিয়ে বাগবাজার থেকে বি টি রোডমুখী গাড়ি চলবে। বর্তমানে ওই উড়ালপুল দিয়ে এক বেলা বি টি রোড থেকে বাগবাজারের দিকে গাড়ি আসে। অন্য সময়ে উল্টো দিকে গাড়ি চলে।

Advertisement

কলকাতা পুলিশ অবশ্য বলছে, লকগেট উড়ালপুল দিয়ে উভমুখী গাড়ি চালানোর সম্ভাবনা নেই। কারণ, ওই উড়ালপুল এতটাই সঙ্কীর্ণ যে, উভমুখী ছোট গাড়ি চালানোও সম্ভব নয়। তা করতে গেলে বিপদের আশঙ্কা বাড়বে। দ্বিতীয়ত, বি টি রোড এবং বাগবাজারের দিকে উড়ালপুলে ওঠার রাস্তা এতটাই সরু যে, সেখানে দু’দিকের গাড়ি এলে পথ আটকে যানজট হবে। তাতে সমস্যা বাড়বে বই কমবে না।

তবে লালবাজারের একটি সূত্রের দাবি, টালা সেতু ভাঙা হলে ওই উড়ালপুল দিয়ে বাগবাজার থেকে বি টি রোডের দিকে বাস চালানো হতে পারে। সে ক্ষেত্রে উড়ালপুলটিকে ২৪ ঘণ্টাই একমুখী রাখা হবে। বি টি রোড থেকে খগেন চ্যাটার্জি রোড, কাশীপুর রোড, কাশীপুর সেতু হয়ে বাগবাজারের দিকে ছোট গাড়ি যাবে। তবে এ নিয়ে সরকারি ভাবে কোনও মন্তব্য করতে চাননি লালবাজারের ট্র্যাফিক বিভাগের কর্তারা।

Advertisement

আরও পড়ুন: শীঘ্রই মাঝেরহাট পরিদর্শনে রেলকর্তা, ৭ দিনের মধ্যে টালা ব্রিজের রিপোর্ট দেবে টাস্ক ফোর্স

প্রশাসনের কর্তারা জানাচ্ছেন, টালা সেতু যে ভাঙা হবে, সে ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হলেও ঠিক কবে থেকে সেই কাজ শুরু হবে, তার দিনক্ষণ এখনও ঠিক হয়নি। তাই সেতু ভাঙার পরে যান চলাচল কোন পথে হবে, তা নিয়ে পুলিশের তরফে এখনই কোনও ঘোষণা করা সমীচীন হবে না। তাতে বিভ্রান্তি আরও বাড়তে পারে। সেতু ভাঙার দিনক্ষণ স্থির হলে তবেই ওই এলাকার যান চলাচলের বিকল্প পথের ব্যাপারে ঘোষণা করা হবে।

টালা সেতু বন্ধ থাকায় লরি ও ট্রাকগুলিকে পাইকপাড়া বা দমদম রোড দিয়ে ঘুরিয়ে ইন্দ্র বিশ্বাস রোড হয়ে আর জি কর সেতুর দিকে পাঠানো হচ্ছে। সেখান থেকে যে সমস্ত লরি পাতিপুকুরের দিকে যেতে চায়, তাদের বাদ দিয়ে অন্য লরিগুলি ক্যানাল ইস্ট বা শ্যামবাজার দিয়ে ঘুরে কলকাতার নানা জায়গায় যেতে পারে। কিছু লরিকে আবার কাশীপুর বা চিৎপুর লকগেটের কাছের রাস্তা দিয়ে রবীন্দ্র সরণি হয়ে গঙ্গার পাড় ধরে স্ট্র্যান্ড রোড বা আর্মেনিয়ান ঘাটের দিকে পাঠানো হচ্ছে।

টালা সেতু লাগোয়া এলাকার বাসিন্দাদের বক্তব্য, পণ্যবাহী গাড়ি নিয়েও সমস্যা হচ্ছে। মূলত রাতের দিকে বহু পণ্যবাহী গাড়ি টালা-সহ আশপাশের বিভিন্ন জনবসতি এলাকার ভিতরে ঢুকে পড়ায় তীব্র যানজট হচ্ছে। আবার বেলগাছিয়া সেতুর উপরে ভারী গাড়ি চলাচলে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও রাতে প্রায়ই লরি বা কন্টেনার উঠে পড়ছে বলে অভিযোগ। অনেকেই বলছেন, টালা সেতু ভাঙা হলে ছোট গাড়ি এবং বাস ঘুরপথে চলবে। তার সঙ্গে পণ্যবাহী গাড়ি মিশলে সমস্যা জটিলতর হবে। টালা সেতুতে পণ্যবাহী ভারী গাড়ি নিষিদ্ধ হওয়ায় তা নিয়ে যে সমস্যা হচ্ছে, সেটাও মেনে নিচ্ছেন পুলিশের একাংশ। তাঁরা বলছেন, কাশীপুর রেল ইয়ার্ডে নুনের গুদামের কাছে লাইনের উপরে লেভেল ক্রসিং তৈরি করা হচ্ছে। সেটা তৈরি হয়ে গেলে ব্রজদয়াল শাহ রোড হয়ে লাইন পেরিয়ে শেঠপুকুর রোড ও পঞ্চানন মুখার্জি রোড ধরে বাগবাজারের দিকে লরি যাতায়াত করতে পারবে। ওই ক্রসিং তৈরি হওয়া পর্যন্ত এই জট চলতে থাকবে বলেও মনে করছেন পুলিশ আধিকারিকদের একাংশ। তবে লরি ঘুরপথে চললেও টালা সেতুর পুনর্নির্মাণের আগে সমস্যা পুরোপুরি মিটবে না বলেও অনেকের ধারণা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement