ফাইল চিত্র।
পুজোয় শহর সচল রাখা চিরকালই চ্যালেঞ্জ লালবাজারের। ফলে শহরের চারটি এলাকার উপরেই বিশেষ নজর রাখছে কলকাতা পুলিশ। লালবাজারের খবর, দ্বিতীয়া থেকেই রাসবিহারী অ্যাভিনিউ (কসবা-গড়িয়াহাট-দেশপ্রিয় পার্ক), চেতলা রোড, চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ ও উল্টোডাঙা এলাকায় ট্র্যাফিক পুলিশের একটি করে বিশেষ দল মোতায়েন থাকবে। পুলিশের দাবি, ওই চার এলাকা জটমুক্ত রাখতে পারলেই শহর অনেকটা সচল রাখা যাবে।
লালবাজারের খবর, এই নতুন পরিকল্পনার পিছনে গত বছরের অভিজ্ঞতা কাজ করেছে। গত বছর যান চলাচল ও ভিড় নিয়ন্ত্রণে পুলিশকে সব চেয়ে বেশি সমস্যায় ফেলেছিল চেতলা সেন্ট্রাল রোড। ভিড় ও গাড়ির চাপ সামলাতে সাময়িক ভাবে ওই রাস্তা বন্ধ করে দিতে হয়েছিল। লেক টাউনে শ্রীভূমির পুজোর ভিড় এবং ভিআইপি রোডে গাড়ির চাপও একই ভাবে উল্টোডাঙা চত্বরে প্রভাব ফেলেছিল। শহরের অন্যতম বড় রাস্তা চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ। ফলে সেই রাস্তা সচল রাখা জরুরি। এর পাশাপাশি রাসবিহারী অ্যাভিনিউ ও কসবা কানেক্টরে পুজোর ভিড় হলে দক্ষিণ কলকাতার বড় অংশে যানজট হয়। পুলিশ সূত্রের দাবি, চলতি মাসের গোড়ায় কলকাতা পুলিশের ডিসি (ট্র্যাফিক) সন্তোষ পাণ্ডে তাঁর বিভাগের এসি এবং ওসি-দের নিয়ে পর্যালোচনা বৈঠকে বসেন। সেই বৈঠক থেকেই এই নতুন পরিকল্পনা উঠে আসে।
নতুন পরিকল্পনা কী
উল্টোডাঙা: ভিআইপি রোড ও লেক টাউনের ভিড় সামলাতে বিধাননগর পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে, উল্টোডাঙা থেকে লেক টাউনের দিকে গাড়ি কিংবা বাস ঢুকতে পারলেও ঠাকুর দেখার জন্য দর্শকদের সেখানে নামতে দেওয়া হবে না। তাঁদের দমদম পার্ক থেকে বাঁ দিকে ঘুরে ঢুকতে হবে। বিমানবন্দরের দিক থেকে উল্টোডাঙামুখী রাস্তা দিয়ে গাড়ি সোজা লেক টাউনে ঢুকতে পারলেও, বাস উল্টোডাঙা হাডকো মোড় দিয়ে ঘুরিয়ে ফের লেক টাউনের দিকে পাঠানো হবে। চলতি সপ্তাহে আলোচনার পরে তা চূড়ান্ত করা হবে।
চেতলা: গত বছর ওই এলাকায় সব থেকে বেশি ভিড় হয়েছিল। এ বছর তার উপরে চেতলা লকগেট সেতু বন্ধ। তার ফলে যানজট আরও বাড়তে পারে। ওই এলাকায় এক হেভিওয়েট মন্ত্রীর পুজো রয়েছে। ফলে এ বছর চেতলা এলাকায় অতিরিক্ত বাহিনী ও নজরদারি প্রয়োজন।
কসবা-রাসবিহারী অ্যাভিনিউ: এস পি মুখার্জি রোড থেকে কসবা কানেক্টরের শেষ পর্যন্ত অন্তত ন’টি বড় মাপের পুজো রয়েছে। তার ফলে ওই এলাকায় ভিড় থাকে। তার উপরে গড়িয়াহাটের চারপাশে আরও কয়েকটি পুজো রয়েছে। সেই ভিড়ও ওই এলাকায় ঘোরে। এমনিতেই রাসবিহারী অ্যাভিনিউ দক্ষিণের গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা। তার জন্য ওই এলাকায় অতিরিক্ত বাহিনী থাকছে।
চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ: মধ্য ও উত্তর কলকাতার গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা। মহম্মদ আলি পার্কের পুজোর স্থান বদল হলেও গত কয়েক বছরে ওই রাস্তার পাশে কয়েকটি বড় মাপের পুজো হচ্ছে। তার ফলে ভিড়ও বাড়ছে। পুলিশের দাবি, চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ সচল রাখতে পারলে শহরের যানজট অনেক কমানো সম্ভব। তাই ওই রাস্তার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে অতিরিক্ত বাহিনী থাকবে।
পুলিশ জানিয়েছে, দ্বিতীয়া থেকে ট্র্যাফিকের অতিরিক্ত বাহিনী নামবে। চতুর্থী থেকে পুরোদমে নামবে লালবাজার। এ বার তারা চ্যালেঞ্জ কতটা সামলাতে পারে, সেটাই দেখার।