চিকিৎসকদের দাবি, বর্তমানে আক্রান্তের সংখ্যা খানিকটা কমেছে। য ফাইল ছবি
সপ্তাহ দুয়েক আগেও প্রায় সংক্রমণের আকারে শিশুদের মধ্যে ছড়াচ্ছিল ‘হ্যান্ড, ফুট অ্যান্ড মাউথ ডিজ়িজ়’ বা টোম্যাটো ফ্লু। কিন্তু চিকিৎসকদের দাবি, বর্তমানে আক্রান্তের সংখ্যা খানিকটা কমেছে। যদিও আবারও তা বাড়তে পারে বলে অভিমত তাঁদের। তবে এইরোগ হলে আতঙ্ক নয়, বরং সতর্ক থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা। তাঁদের বক্তব্য, এই রোগেও নিজেকে অন্যদের থেকে আলাদা করতেপারলে সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা থাকে না।
চিকিৎসকেরা জানান, এই রোগে মূলত হাতে-পায়ে-মুখে লালচে ফোস্কার মতো র্যাশ বেরোয়। যে কারণে অনেকে এটিকেটোম্যাটো ফ্লু বলেন। মূলত এতে আক্রান্ত হয় পাঁচ-ছয় কিংবা তার কম বয়সের শিশুরা। ফোস্কার মতো হওয়ায় চুলকানির চেয়েও ব্যথা বেশি হয় এতে।
কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের শিশুরোগ চিকিৎসক দিব্যেন্দু রায়চৌধুরীর মত, কোনও শিশু এই রোগে আক্রান্ত হলে তার অভিভাবকের প্রথম কাজ হবে সন্তানকে স্কুলে না পাঠানো। তিনি বলেন, ‘‘হাতের তালু, পায়ের পাতা, মুখের ভিতরে টাকরায় ফোস্কার মতো ওঠে। ড্রপলেট কিংবা ফোস্কা নিঃসৃত রস থেকে এই রোগ ছড়ানোর আশঙ্কা থাকে। সেই অবস্থায় শিশুকে স্কুলে পাঠালে তার থেকে দ্রুত সংক্রমিত হতে পারে অন্য শিশুরা। তাই এই রোগের উপসর্গ দেখা দিলে সাধারণ জ্বর ভেবে প্যারাসিটামল না খাইয়ে অভিভাবকদের উচিত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া।’’
চিকিৎসকেরা জানান, কক্সাকি নামক এক ধরনের ভাইরাস থেকে এই রোগ ছড়ায়। তবে জ্বর খুব বেশি ওঠে না। কয়েক দিনের মধ্যেই রোগী সুস্থ হয়ে যায়।
শিশুরোগ চিকিৎসক দ্বৈপায়ন ঘটক আবার ‘টোম্যাটো ফ্লু’ শব্দেই আপত্তি তুলেছেন। অভিভাবকদের আশ্বস্ত করে তাঁর দাবি, হাত-পা-মুখের এই রোগ আগেও শিশুদের মধ্যে ছিল। তবে করোনার কারণে গত দু’বছর স্কুল বন্ধ থাকায় এর প্রকোপ তেমন দেখা যায়নি। দ্বৈপায়নের কথায়, ‘‘এই রোগে কোনও শিশুর শারীরিক অবস্থার ভীষণ অবনতি হয় না বললেই চলে। রোগীকে প্রচুর জল খাওয়াতে হবে। গলা ভাত দেওয়া ভাল। না হলে মুখে যন্ত্রণা হতে পারে। এ বার এই রোগের প্রকোপ বেড়েছে ঠিকই। তবে দিন পনেরো আগেও যত শিশুরোগী পাচ্ছিলাম, এখন তার চেয়ে কম রোগী আসছে।’’