ফাইল চিত্র।
অতিমারি পরিস্থিতিতে অনলাইন পরীক্ষার সময়সীমা কত ক্ষণ হবে, তা নিয়ে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে বিতর্ক চলছে। এরই মধ্যে অনলাইন পরীক্ষা নিয়ে শিক্ষক সমিতি জুটা-র করা একটি সমীক্ষায় উঠে এসেছে, পরীক্ষা নেওয়া থেকে শুরু করে উত্তরপত্র জমা দেওয়া— এই গোটা সময়সীমার ক্ষেত্রে তিন ফ্যাকাল্টির মধ্যে সামঞ্জস্য থাকা জরুরি। তবে, ইন্টারনেট পরিষেবা না পাওয়া প্রত্যন্ত অঞ্চলের পড়ুয়াদের পরীক্ষায় অতিরিক্ত সময় দেওয়া হোক।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ও বিজ্ঞান ফ্যাকাল্টিতে নিয়ম মেনে পরীক্ষা নেওয়া হলেও ইঞ্জিনিয়ারিং ফ্যাকাল্টির কোনও কোনও বিভাগে ১২-২৪ ঘণ্টা ধরে পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। জুটা-র সাধারণ সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায় বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন, সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, অধিকাংশ শিক্ষক এমন চাইছেন না। তাঁদের বক্তব্য, এতে পরীক্ষার আসল উদ্দেশ্যই ব্যাহত হচ্ছে। পড়ুয়াদের ভবিষ্যতের ক্ষেত্রেও বিষয়টি ভাল প্রভাব ফেলবে না বলে তাঁদের মত।
কলা এবং বিজ্ঞান বিভাগের পড়ুয়ারা যেখানে ৩০-৪০ নম্বরের পরীক্ষা দিচ্ছেন তিন ঘণ্টায়, সেখানে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের পড়ুয়াদের দীর্ঘ সময় পরীক্ষা দেওয়ার পাশাপাশি সাপ্লিমেন্টারি না নিয়েই পাশ করিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে জুটা-র তরফে শিক্ষকদের মত চাওয়া হয়। সেখানে প্রায় সকলেই মনে করছেন, পরীক্ষার নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে ইউজিসি-র নির্দেশিকা মানা উচিত। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, তিন থেকে পাঁচ শতাংশ পড়ুয়া যথাযথ ইন্টারনেট পরিষেবা পাচ্ছেন না। আলাদা ভাবে তাঁদের বিষয়টি দেখার উপরে জোর দিয়েছেন শিক্ষকেরা। তাঁদের বক্তব্য, যাঁদের যথাযথ ইন্টারনেট সংযোগ রয়েছে, এই দীর্ঘ সময় পেয়ে তাঁরা সুযোগের অপব্যবহার করছেন। এ-ও দেখা গিয়েছে, দুই পরীক্ষার্থীর খাতা হুবহু এক। দীর্ঘ সময় ধরে পরীক্ষা নেওয়ার ফলে তাঁরা নকল করার সুযোগ পাচ্ছেন বলে অভিযোগ। শিক্ষকেরা মনে করছেন, এর ফলে মেধার পার্থক্য করা যাচ্ছে না। তাই অধিকাংশ শিক্ষকই মনে করছেন, সব বিভাগের পরীক্ষার ক্ষেত্রেই প্রশ্ন ডাউনলোড এবং উত্তরপত্র আপলোডের জন্য সর্বাধিক ৩০ মিনিট করে এক ঘণ্টা সময় দেওয়া যেতে পারে।
পার্থপ্রতিমবাবু বলেন, ‘‘আমরা উপাচার্যকে সমীক্ষা-রিপোর্ট দিয়েছি। কলা ও বিজ্ঞান ফ্যাকাল্টিতে নিয়ম মানা হলেও ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে মানা হচ্ছে না। তাই ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রথম সিমেস্টার শুরুর আগে ফ্যাকাল্টি কাউন্সিলের বৈঠক ডেকে বিষয়টি সংশোধন করার দাবি জানানো হয়েছে।’’
সমীক্ষায় আরও উঠে এসেছে, পড়ুয়াদের স্বার্থেই অনলাইন পরীক্ষা নেওয়ার পদ্ধতিতে পরিবর্তন দরকার। দেখা যাচ্ছে, অনলাইন পরীক্ষার ক্ষেত্রে কোনও ভূমিকাই নেই পরীক্ষা নিয়ামকের দফতরের। সমীক্ষার শিক্ষকেরা জানিয়েছেন, অবশ্যই ওই বিভাগকে পরীক্ষা সংক্রান্ত বিষয়গুলির দায়িত্ব নিতে হবে।