কথাবার্তা: এন আর এসে কলকাতা পুলিশ এবং স্বাস্থ্য ভবনের কর্তাদের যৌথ পরিদর্শন। বৃহস্পতিবার। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী
অনভিপ্রেত ভিড় আটকাতে প্রস্তাব তো ভালই। কিন্তু সরকারি হাসপাতালে ওই প্রস্তাব কত মসৃণ ভাবে কার্যকর হবে, বৃহস্পতিবার এন আর এস এবং এসএসকেএমে যৌথ পরিদর্শনের পরে সেই সংশয় থেকেই গেল।
সংশয় যাতে আর না বাড়ে, সে জন্য যে ৩১ জন জুনিয়র চিকিৎসকের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বৈঠক করেছিলেন, তাঁদের সঙ্গে আগামী মঙ্গলবার ফের স্বাস্থ্য ভবনে বৈঠক হবে বলে খবর।
স্বাস্থ্য ভবনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তাদের সঙ্গে কলকাতা পুলিশের যৌথ পরিদর্শনের বৃহস্পতিবার ছিল প্রথম দিন। স্বাস্থ্য ভবনের খবর, এন আর এসে দেওয়া প্রস্তাবগুলির মধ্যে রয়েছে— ১) দু’টি গেটের একটি প্রবেশ এবং অন্যটি বাহির পথ হিসেবে ব্যবহার। ২) সেন্টেনারি বিল্ডিংয়ের সামনে পুলিশ কিয়স্ক। ৩) ঢোকা-বেরোনোয় রিভলভিং গেট। ৪) ডেন্টাল কলেজের পাশে গলিপথ বন্ধ করে কাঁটাতারের বেড়া এবং ক্যামেরা বসানো। ৫) জরুরি বিভাগের পিছনে পার্কিংয়ে পাঁচটির বেশি অ্যাম্বুল্যান্স রাখায় নিষেধাজ্ঞা। সেগুলি শিয়ালদহ স্টেশন সংলগ্ন চত্বরে রাখার প্রস্তাব। ৬) অ্যানাটমি বিভাগের পাশে নতুন প্রবেশপথ দিয়ে শুধু শববাহী গাড়ি যাওয়ার অনুমতি।
অন্য দিকে এসএসকেএমে আউটডোর এবং ইন্ডোরে আসা রোগীদের সঙ্গে কত জন আছেন, তা নজরে রাখবেন বেসরকারি রক্ষীদের পাশাপাশি পুলিশও। ট্রমা কেয়ার বিল্ডিংয়ের নিরাপত্তা আঁটোসাঁটো করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখতে এক জনকে নিযুক্ত করতে হবে। ‘বহিরাগত’ গাড়ি আটকাতে ব্যবহার করতে হবে স্টিকার।
এ দিন এন আর এসে যত্রতত্র পার্কিং দেখে হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত কর্মীকে নোডাল অফিসার নভেন্দ্র সিংহ পাল প্রশ্ন করেন, ‘আগুন লাগার পরে সতর্ক হবেন?’ এসএসকেএমে আবার পরিদর্শন চলাকালীন কেন পাবলিক অ্যাড্রেস সিস্টেম বন্ধ, সেই প্রশ্ন ওঠে।
এরই মধ্যে রোগীর পরিজনেদের ভিড় ঠেকানো নিয়ে সংশয়ী প্রশাসনিক কর্তাব্যক্তিদের একাংশ। এন আর এসের ক্ষেত্রে এক কর্তার পর্যবেক্ষণ, বেসরকারি হাসপাতালের ধাঁচে সরকারি হাসপাতালে রোগীর আত্মীয়দের যাতায়াত নিয়ন্ত্রণ কঠিন। এসএসকেএমে আবার অ্যাম্বুল্যান্স দাঁড়িয়ে থাকলে জরিমানা করার প্রস্তাবও এসেছে। যার প্রেক্ষিতে এক আধিকারিকের প্রশ্ন, ‘‘অ্যাম্বুল্যান্স থেকে রোগীকে নামানোর পরে হয়তো শয্যার অভাবে ভর্তি নেওয়া হল না। অ্যাম্বুল্যান্স না দাঁড়ালে তিনি ফিরবেন কী ভাবে?’’
দিনের শেষে এন আর এসের এক কর্তা বলছেন, ‘‘শেষ পর্যন্ত কতটা প্রাপ্তি হবে, সেটা সময়ই বলবে।’’