আলিপুর চিড়িয়াখানার পাঠানো হচ্ছে জখম চখাকে। নিজস্ব চিত্র।
প্রতি শীতের ওরা লাদাখ আর তিব্বত থেকে ওরা উড়ে আসে বোলপুর লাগোয়া বল্লভপুর অভয়ারণ্যের জলাশয়ে। কয়েক মাস কাটিয়ে ফের ওই চখাচখি হাঁসের (রাডি শেলডাক) ফিরে যায় তাদের হিমালয়ের প্রজনন ক্ষেত্রে। এ বার সেই দলেরই একটি হাঁস বাজ জাতীয় কোনও শিকারি পাখির আক্রমণে গুরুতর আহত হয়েছিল। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি বল্লভপুরের রেঞ্জ অফিসার জয়নারায়ণ মণ্ডল জখম পাখিটিকে উদ্ধার করেন।
সে সময় বল্লভপুরের পাখি দেখতে গিয়েছিলেন কলকাতার পশুচিকিৎসক দম্পতি, শঙ্কর এবং সৃজিতা ঘোষ। জয়নারায়ণের অনুরোধে তাঁরা পাখিটির প্রাথমিক চিকিৎসা করেন। শঙ্কর জানিয়েছেন, শিকারি পাখির থাবার আঘাতে হাঁসটির বাঁ-ডানার হাড় (রেডিয়াস-আলনা) ভেঙে গিয়েছিল। তিনি বলেন, ‘‘হাঁসটিকে আমরা যে অবস্থায় পেয়েছিলাম, তাতে তাকে বাঁচানোর জন্য শল্য চিকিৎসার প্রয়োজন। কিন্তু বীরভূমে সেই পরিকাঠামো না থাকায় আমরা বনবিভাগের আধিকারিকদের কাছে পাখিটিকে কলকাতা আলিপুর চিড়িয়াখানা বা সল্টলেকের বন্যপ্রাণ উদ্ধারকেন্দ্রের পশু হাসপাতালে পাঠানোর আবেদন জানিয়েছিলাম।
বীরভূমের ডিএফও দেবাশিস প্রধান মঙ্গলবার জানান, প্রাথমিক চিকিৎসার পরে গত রবিবার তাঁরা জখম রাডি শেলডাকটিকে চিকিৎসার জন্য আলিপুর চিড়িয়াখানায় স্থানান্তরিত করেন। আলিপুর চিড়িয়াখানার অধিকর্তা আশিস মণ্ডল মঙ্গলবার বলেন, ‘‘আহত হাঁসটিকে পরীক্ষা এবং এবং পর্যবেক্ষণের পর আমাদের চিকিৎসকেরা অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আগামী এক-দু’দিনের মধ্যেই হবে অস্ত্রোপচার।’’
চিকিৎসায় সুস্থ হলেও ডানা-ভাঙা চখার পক্ষে এ বার তার ‘ভিটেয়’ ফিরে যাওয়া সম্ভব নয় বলেই মনে করেন শখের পাখি পর্যবেক্ষক শঙ্কর। তাঁর কথায়, ‘‘শীত চলে যাওয়ায় ইতিমধ্যেই যে ওর সঙ্গীরা হিমালয়ে ফিরতে শুরু করে দিয়েছে।’’