প্রতীকী ছবি
সকাল সওয়া ৮টা থেকে পৌনে ১১টা।
অভিযোগ, পাইলট আসতে দেরি হয়েছিল। তাই এই আড়াই ঘণ্টা ঠায় বিমানে বসে থাকলেন যাত্রীরা। বৃহস্পতিবার কলকাতা বিমানবন্দরে ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিমান সংস্থা ইন্ডিগোর উপরে ক্ষুব্ধ যাত্রীরা। শুধুমাত্র পাইলটের দেরির কারণে দেড়শোরও বেশি যাত্রীকে এ দিন হেনস্থার মুখে পড়তে হয়— ডিরেক্টরেট জেনারেল অব সিভিল এভিয়েশন-এর (ডিজিসিএ) কাছে এমন অভিযোগও করেন বিমানের এক যাত্রী। কলকাতা বিমানবন্দর সূত্রের খবর, পৌনে ১১টা নাগাদ পাইলট পৌঁছলে বিমানটি ছাড়ে।
নিয়মমতো, একটি বিমান ছাড়ার অন্তত এক ঘণ্টা আগে পাইলটের বিমানবন্দরে পৌঁছনোর কথা। সেখানে নিয়মমাফিক কিছু কাগজপত্রে সই করতে হয় তাঁকে। পুরো বিমান ঘুরে দেখে ইঞ্জিনিয়ারদের কাছ থেকে ছাড়পত্র নিয়ে তবেই ককপিটে গিয়ে বসেন দুই পাইলট। সাধারণত যাত্রীরা বিমানে ওঠার আগেই ককপিটে পৌঁছে যান পাইলট। কারণ, ককপিটে বসেও বিমান ছাড়ার আগে বেশ কিছু কাজ সেরে নিতে হয় তাঁকে।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক সাধন ঘোষ এ দিন ওই বিমানের যাত্রী ছিলেন। কলকাতা থেকে দিল্লি যাওয়ার কথা ছিল বিমানটির। আড়াই ঘণ্টা ধরে বিমানে বসে থেকে অনেক যাত্রীর মতো তিনিও ক্ষুব্ধ। ডিজিসিএ-কে তিনিই লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন। অভিযোগে তাঁর বক্তব্য, পাইলটের দেরির কারণে দেড়শোরও বেশি যাত্রীর এই হেনস্থা অনভিপ্রেত।
সাধনবাবু জানান, এ দিন সকাল পৌনে ৯টায় কলকাতা থেকে দিল্লির উদ্দেশে উড়ে যাওয়ার কথা ছিল ইন্ডিগোর ওই বিমানটির। যাত্রীদের প্রায় সওয়া ৮টা নাগাদ বিমানে তুলে দেওয়া হয়। তাঁদের মধ্যে বৃদ্ধ-বৃদ্ধা এবং শিশুরাও ছিল। সাধনবাবু জানান, বিমানের ভিতরে তাঁরা অপেক্ষা করার সময়েই ঘোষণা করা হয়, পাইলট আসতে দেরি হচ্ছে। পাইলট এলে বিমান ছাড়বে।
সাধনবাবুর অভিযোগ, ‘‘বিমানের ভিতরে একে তো স্বল্প পরিসর। সিটগুলোও ছোট ছোট। তার উপরে বিমান দাঁড়ানো অবস্থায় বদ্ধ জায়গায় এত জন যাত্রী। হাঁসফাঁস অবস্থা। শিশুদের সামলাতে গিয়ে বাবা-মায়েদের করুণ অবস্থা।’’ সাধনবাবুদের প্রশ্ন, পাইলটের দেরির খবর জেনেও কেন উড়ান সংস্থা যাত্রীদের আগে থেকে বিমানে উঠিয়ে দিল? তাঁর কথায়, ‘‘বিমানবন্দরে লাউঞ্জে অপেক্ষা করলে এতটা খারাপ পরিস্থিতি হত না। বিমান বিভিন্ন কারণে দেরিতে ছাড়তে পারে।’’
ইন্ডিগো সূত্রের খবর, ওই বিমানের পাইলটের এ দিন সকালেই দিল্লি থেকে কলকাতায় আসার কথা ছিল। কিন্তু, কলকাতার আবহাওয়া খারাপ হওয়ায় ওই পাইলটের দিল্লির উড়ানটি ভুবনেশ্বরে চলে যেতে বাধ্য হয়। বিকল্প পাইলট জোগাড় হয়নি। পরে ওই পাইলটই ভুবনেশ্বর থেকে কলকাতায় এসে দিল্লির উড়ান নিয়ে যান। পাইলটের ভুবনেশ্বর পৌঁছনোর খবর আসার আগেই যাত্রীদের দিল্লির উড়ানে তোলা শুরু হয়ে যায় বলে ইন্ডিগোর দাবি।