—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
দূরপাল্লার ট্রেনে শৌচাগারের অপরিচ্ছন্নতা নিয়ে যাত্রীদের কাছ থেকে প্রায়ই নানা অভিযোগ আসে। শৌচাগার ঠিক মতো পরিষ্কার না হওয়া ছাড়াও মাত্রাতিরিক্ত দুর্গন্ধে
জেরবার হওয়ার অভিযোগ করেন যাত্রীদের অনেকেই। ট্রেনে ওবিএইচএস (অন বোর্ড হাউসকিপিং স্টাফ) ব্যবস্থা চালু হওয়ার পরেও এই সমস্যা নির্মূল করা যায়নি বলে অভিযোগ। এ বার এই সমস্যা মেটাতে শৌচাগারের পরিচ্ছন্নতার উপরে ডিজিটাল নজরদারি চালাতে
চায় রেল। তার জন্য একাধিক সেন্সর সংবলিত ‘রিয়েল টাইম হাইজিন মনিটরিং সিস্টেম’ নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু করছে তারা।
মধ্য রেলের মুম্বই লাগোয়া একাধিক স্টেশনের শৌচাগারে নতুন এই ব্যবস্থার সফল পরীক্ষার পরে চলন্ত ট্রেনেও সেটির কার্যকারিতা যাচাই করতে নামছে রেল। সেই লক্ষ্যে পূর্ব রেলের শিয়ালদহ এবং হাওড়া ডিভিশনের তিনটি করে দূরপাল্লার ট্রেন, মালদহ ও আসানসোল ডিভিশনের দু’টি করে দূরপাল্লার ট্রেন বেছে নিয়ে এই ব্যবস্থার মহড়া শুরু করতে চলেছে সংস্থা।
আইওটি (ইন্টারনেট অব থিংস)-নির্ভর এই প্রযুক্তি একাধিক সেন্সরের সমন্বয়ে কাজ করে। দুর্গন্ধ চিহ্নিত করার সেন্সর ছাড়াও অ্যামোনিয়া, হাইড্রোজেন সালফাইড,
মিথেনের মতো দুর্গন্ধ সৃষ্টিকারী গ্যাসের পরিমাণ বাড়ছে কিনা, তা-ও পরিমাপ করবে সেন্সর। এ ছাড়াও, উষ্ণ এবং আর্দ্র আবহাওয়ায় একাধিক ব্যাক্টিরিয়া বা জীবাণু সক্রিয়
হয়ে পচন ত্বরান্বিত করে। তাতেও দুর্গন্ধ বাড়ে। সেই কারণে এই ব্যবস্থায় শৌচাগারের আর্দ্রতা এবং উষ্ণতা পরিমাপ করার জন্যও বিশেষ সেন্সর থাকছে। সব ক’টির সমন্বয়ে গড়ে ওঠা এই ব্যবস্থা শৌচাগারের দুর্গন্ধ সহনমাত্রা ছাড়ালেই
রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তির কাছে বার্তা পাঠাবে। ওই বার্তা সংশ্লিষ্ট সেই কর্মীর মোবাইল ছাড়াও নির্দিষ্ট সিস্টেমে পৌঁছে যাবে। ফলে, রেলের উচ্চপদস্থ কর্তারাও তা জানতে পারবেন।
রেলের কর্তাদের আশা, পরীক্ষা সফল হলে শৌচালয়ের পরিচ্ছন্নতার উপরে রেলের নজরদারি ব্যবস্থা অনেক বেশি নিরবচ্ছিন্ন ও নির্ভরযোগ্য হবে। পাশাপাশি, এই ব্যবস্থা চালু হলে ট্রেনের যাত্রী এবং রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা কর্মীদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি কমে আসবে বলেই মনে করছেন রেলের শীর্ষ কর্তারা।