কর্মকাণ্ড: পুরোদমে কাজ চলছে মাঝেরহাট সেতুতে। বুধবার। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক
ছোট এবং হাল্কা যানবাহনের জন্য মাঝেরহাট সেতু চতুর্থীর মধ্যেই খুলে দিতে চায় পূর্ত দফতর। সে জন্য দিনরাত কাজ চলছে। অথচ শিয়ালদহ শাখার রেললাইনের উপরে নির্মীয়মাণ ওই সেতু নিয়ে রাজ্যের পরিকল্পনা সম্পর্কে কিছুই জানে না বলে অভিযোগ রেলের। যদিও সেতু চালুর আগে তার নির্মাণে সুরক্ষা সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয় খতিয়ে দেখার কথা তাদেরই।
এই অবস্থায় বাধ্য হয়েই রাজ্যের পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে পূর্ত দফতরের সচিবকে গত মঙ্গলবার চিঠি দিয়েছেন পূর্ব রেলের প্রিন্সিপ্যাল চিফ ইঞ্জিনিয়ার অনিলকুমার দুবে। চিঠিতে জানানো হয়েছে, নকশা এবং নির্মাণের খুঁটিনাটি দেখে ২৮ ফেব্রুয়ারি রেলওয়ে সেফটি কমিশনার চার লেনের ওই সেতুর কাজ সম্পূর্ণ করার ছাড়পত্র দেন। পুজোর মুখে সেতুকে আংশিক ভাবে খুলে দিতে গেলে শর্ত পূরণের বিষয়গুলি নতুন করে দেখতে হবে। যদিও বুধবার রাত পর্যন্ত রাজ্যের কাছে থেকে ওই চিঠির কোনও জবাব রেল পায়নি বলেই দাবি।
সেতু নির্মাণের বিভিন্ন সমস্যা দ্রুত মেটাতে রেলের তরফে সহযোগিতার বার্তা দিয়ে ২৮ অগস্ট রাজ্যকে চিঠি দেওয়া হয়। সেখানে রেল ও রাজ্যের আধিকারিকদের মধ্যে সমন্বয় রাখতে সপ্তাহে এক দিন ভিডিয়ো বৈঠকের প্রস্তাব দেওয়া হয়। কিন্তু রেলের অভিযোগ, এ ক্ষেত্রে রাজ্যের কাছ থেকে সাড়া মেলেনি। পূর্ব রেলের এক আধিকারিক বলেন, “রাজ্যের পরিকল্পনা জানতে পারলে রেলও প্রয়োজনীয় শর্ত পূরণ নিয়ে তৎপর হতে পারে।”
আরও পড়ুন: দিনভর ছুটেও বিজ্ঞাপনের প্রতীক্ষায় পুজোর ‘হটস্পট’
লকডাউন শিথিল হওয়ার পরে গত মে মাসের মাঝামাঝি থেকে সেতুর নির্মাণকাজে গতি এসেছে। প্রায় সাড়ে ছ’শো মিটার লম্বা মাঝেরহাট সেতুর মূল অংশ কেব্ল স্টেড (ঝুলন্ত) প্রযুক্তিতে তৈরি করা হচ্ছে। মাঝের ২২৭ মিটার অংশ ঝুলন্ত কেব্লের উপরে থাকবে। এর ১০০ মিটার অংশে সেতুর নীচে রেলপথ রয়েছে। দু’দিকে ইস্পাতের মোট ৮৪টি কেব্লের উপরে সেতুর মূল অংশের ভার থাকবে। এ পর্যন্ত ৪০টির বেশি কেব্ল বসানোর কাজ শেষ হয়েছে। বাকি কেব্ল বসাতে আরও দিন বারো লাগতে পারে বলে পূর্ত দফতর সূত্রের খবর। নির্মীয়মাণ সেতুটি সর্বোচ্চ ৩৮৫ টন ভার বহনের উপযোগী।
আরও পড়ুন: দাদা-দিদির দেহ ঘরে নিয়েই দশ দিন বিছানায় শুয়ে প্রৌঢ়া
গত কয়েক মাসে দিনরাত কাজ চললেও এখনও সেতুর দু’পাশে ক্র্যাশ ব্যারিয়ার ও পাটাতনে বিটুমিন কংক্রিটের কাজ বাকি। পূর্ত দফতরের আধিকারিকেরা ওই কাজ দ্রুত সম্পূর্ণ করতে আশাবাদী। তার পরেও সেতু খুলে দেওয়ার আগে তার ভারবহন ক্ষমতা যাচাইয়ের বিষয়টি থাকবে।
আরও পড়ুন: ৩১ বছর পার, মাদক মামলায় মুক্ত বৃদ্ধা
সেতুর স্বাস্থ্যে নজরদারি চালাতে কেব্লে কিছু যন্ত্র ও বেয়ারিংয়ে সেন্সর বসানোর কথা বলেছে রেল। যাতে সেতুর ভারবহন ক্ষমতায় চাপ পড়ছে কি না, তা নজরে রাখা যায়। পূর্ত দফতর সূত্রের খবর, সেতুর ভারবহন ক্ষমতার তুলনায় চার চাকা ছোট গাড়ির ভার এমন কিছুই নয়। ফলে পুজোর মুখে ছোট গাড়ির জন্য সেতু খুলে দেওয়া গেলে ব্যস্ত ডায়মন্ড হারবার রোডের চাপ কমবে।