KMC

হেলে যাওয়া বহুতল কি পুর নজরদারির ‘উদাসীনতা’র ফল

বিধাননগর পুরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে রাস্তার উপরেই রয়েছে সংশ্লিষ্ট বহুতলটি। বিপজ্জনক ভাবে সেটিএক দিকে হেলে আছে। যার ফলে দুশ্চিন্তায় রাতের ঘুম উড়ে গিয়েছে আশপাশের বাড়ির বাসিন্দাদের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ মে ২০২৩ ০৮:৩১
Share:

প্রতীকী ছবি।

বন্দর এলাকা নয়। এ বার একটি বহুতল হেলে পড়েছে বিধাননগর পুরসভার হাতিয়াড়া অঞ্চলের তালবাগানে। স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে উপযুক্ত ছাড় না দিয়েই তৈরি হয়েছে ছ’তলা ওই বহুতলটি। অথচ, তা ঠেকাতে তৎপরতা দেখা যায়নি পুর প্রশাসনের তরফে। নির্মাণ বিশেষজ্ঞদের দাবি, ঠিক ভাবে মাটি পরীক্ষা না হলে বাড়ি হেলে পড়তে পারে।

Advertisement

বিধাননগর পুরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে রাস্তার উপরেই রয়েছে সংশ্লিষ্ট বহুতলটি। বিপজ্জনক ভাবে সেটিএক দিকে হেলে আছে। যার ফলে দুশ্চিন্তায় রাতের ঘুম উড়ে গিয়েছে আশপাশের বাড়ির বাসিন্দাদের। চিত্তরঞ্জন মণ্ডল নামে এক বাসিন্দা জানান, তাঁর বাড়ির নীচের দিকে ফাটল ধরেছে। প্রোমোটারের তরফে ওই বহুতলটি সোজা করার কাজ করানো হচ্ছে।

উল্লেখ্য, রাজারহাট অঞ্চলে বিভিন্ন বহুতল নির্মাণ নিয়ে বিতর্ক নতুন নয়। অভিযোগ, ওই সব বহুতল তৈরি হয়েছে বাতিল কিংবা জাল নকশার ভিত্তিতে। তালবাগানের হেলে পড়া এই বহুতলটিও তেমনই বাতিল কিংবা জাল নকশার ভিত্তিতে তৈরি কি না, তা নিয়েই এখন জোর জল্পনা ছড়িয়েছে এলাকায়।

Advertisement

বিধাননগর পুর কর্তৃপক্ষের দাবি, গত ফেব্রুয়ারিতেই ওই বহুতলের প্রোমোটারকে নোটিস পাঠানো হয়েছিল সেটির কাগজপত্র জমা দেওয়ার জন্য। কিন্তু আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, এখনও পর্যন্ত কোনও কাগজপত্র জমা পড়েনি।

স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রায় সাত-আট মাস ধরে বহুতলটি নির্মাণের কাজ চলেছে। অথচ, কাজ চলার সময়ে নিয়মমাফিক উপযুক্ত ছাড় দেওয়া হয়নি। বাসিন্দাদের বক্তব্য, সেই সময়েই পুরসভা ব্যবস্থা নিলে এখন এ ভাবে বিপদ মাথায় নিয়ে তাঁদের বাস করতে হত না। কী ভাবে সমস্ত কিছু স্থানীয় পুরপ্রতিনিধি কিংবা তাঁর লোকজনেরও নজর এড়িয়ে গেল, সেই প্রশ্ন তুলছেন তাঁরা।

এ ব্যাপারে স্থানীয় ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের পুরপ্রতিনিধি, কংগ্রেসের গীতা সর্দারকে ফোনে পাওয়াযায়নি। তাঁর স্বামী মৃণাল সর্দার বলেন, ‘‘মাস দুয়েক আগে বহুতলটি নিয়ে সমস্যা দেখা দিয়েছিল। আমরা প্রোমোটারকে বলেছিলাম, মানুষের অসুবিধা করে কিছু করা যাবে না। বরো এবং পুরসভায় বাড়ি হেলে পড়ার বিষয়টি জানিয়েছি। আমার ধারণা, বহুতলটির নকশায় গোলমাল আছে।’’

যদিও প্রোমোটার ঝন্টু নাথের দাবি, ‘‘আমার সব কাগজপত্র স্বচ্ছ। পুরসভায় সে সব জমা দেওয়ার পরেই নির্মাণের অনুমতি মিলেছে। এলাকায় যাঁরা কম টাকায় আমার থেকে ফ্ল্যাট চেয়ে পাননি, তাঁরা এখন এমন কথা বলছেন। আমি বাড়িটি সোজা করার কাজ শুরু করেছি।’’

তবে স্থানীয় তিন নম্বর বরোর চেয়ারপার্সন পিয়ালী সরকার কিংবা বিধাননগরের মেয়র কৃষ্ণা চক্রবর্তী সাফ জানিয়েছেন, বহুতলটি হেলে পড়া নিয়ে স্থানীয় পুরপ্রতিনিধিতাঁদের কিছুই জানাননি। পিয়ালী বলেন, ‘‘বাড়ি হেলে পড়ার কোনও খবর আমার কাছে নেই। তবে কোথায়, কী ভাবে বাড়ি তৈরি হচ্ছে, সেটা বরো থেকে দেখা হয় না।’’ অন্য দিকে মেয়র বলেন, ‘‘বহুতল হেলে পড়ার খবর আমাকে স্থানীয় কাউন্সিলর জানাননি। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement