ফাইল ছবি
করোনার পাশাপাশি ডেঙ্গি আক্রান্তের লেখচিত্রও ঊর্ধ্বমুখী। বিক্ষিপ্ত ভাবে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। ফলে চিন্তার ভাঁজ স্বাস্থ্যকর্তাদের কপালে। ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে রাজ্যে ইতিমধ্যেই তিন জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। তাই স্বাস্থ্য দফতরের সিদ্ধান্ত, ডেঙ্গিতে মৃত্যু হলে অডিট করা হবে। রাজ্যে ডেঙ্গির সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে আজ, শুক্রবার স্বাস্থ্য-সহ অন্যান্য দফতরের শীর্ষ কর্তাদের সঙ্গে মুখ্যসচিবের বৈঠক রয়েছে বলে খবর।
স্বাস্থ্যকর্তাদের কথায়, ‘‘ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণ ও ব্যবস্থাপনা নিয়ে মাসিক পর্যালোচনা বৈঠক হয়। তবে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টিতে ডেঙ্গির বাড়বাড়ন্ত নজরে আসায় প্রথম থেকেই নিয়ন্ত্রণ করার পরিকল্পনা হচ্ছে।’’ করোনার পাশাপাশি ডেঙ্গির সচেতনতাতেও গুরুত্ব দিতে চাইছে স্বাস্থ্য ভবন। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, গত জানুয়ারি থেকে চলতিমাসের গত সপ্তাহের পরিসংখ্যান বলছে, রাজ্যে প্রায় ১৮০০ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন। অন্যান্য বছর এই সময়কালে সংখ্যাটি ৮০০-৯০০-র মধ্যে থাকে। ২০১৮-’১৯ সালে রাজ্যের ডেঙ্গি পরিস্থিতির উল্লেখ করে স্বাস্থ্য আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, ওই দু’বছরে যত জন আক্রান্ত হয়েছিলেন, তার তুলনায় বর্তমানে সংখ্যাটা কম। তবে সংখ্যার হিসেবে ডেঙ্গিকে জরিপ করতে নারাজ স্বাস্থ্য ভবন।
এক স্বাস্থ্য আধিকারিকের কথায়, ‘‘বিক্ষিপ্ত এলাকায় হলেও সামগ্রিক ডেঙ্গির লেখচিত্র ঊর্ধ্বমুখী। কয়েক মাসের মধ্যে করোনার প্রকোপ কমলেও, ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধির আশঙ্কা করা হচ্ছে। কারণ, পুরোদমে বর্ষা এখনও নামেনি। ভরা বর্ষায় ডেঙ্গি ব্যাপক হারে ছড়ালে সমস্যা বাড়বে।’’ স্বাস্থ্য দফতরের পর্যবেক্ষণ, শহরের তুলনায় গ্রামাঞ্চলে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গির প্রভাব বেশি। যেমন, ডোমজুড়, মালবাজারে ডেঙ্গি আক্রান্ত বৃদ্ধি পেয়েছিল। এখন তা নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনে রাজ্যের অধিকর্তার জারি করা নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, ডেঙ্গিতে প্রতিটি মৃত্যুর অডিট করা হবে। সেই কমিটিতে রাখা হয়েছে স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা, স্বাস্থ্য অধিকর্তা, জনস্বাস্থ্য বিষয়ক দফতরের অধিকর্তা এবং যুগ্ম অধিকর্তা (জনস্বাস্থ্য ও কমিউনিকেবল ডিজ়িজ)-কে। প্রয়োজনে অন্যান্য বিশেষজ্ঞদেরও কমিটিতে যুক্ত করা হবে। জানানো হয়েছে, মৃতের চিকিৎসা নথি, পরীক্ষার রিপোর্ট, ডেথ সার্টিফিকেট-সহ অন্যান্য নথি খতিয়ে দেখবেন কমিটির সদস্যেরা। ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হলে প্রতিটি হাসপাতালকেও ওই সব নথি কমিটির কাছে জমা করতে বলা হয়েছে।