জলের জারে স্পিরিট পাচার

কুড়ি লিটারের জলের জার। যেমনটা বাজারে পাওয়া যায়। সিল করা। আপাত ভাবে মনে হবে, জলই রয়েছে। কিন্তু, এক-একটি জারের বাজারদর ৪ হাজার টাকা! ভিতরে জল নেই, রয়েছে স্পিরিট।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ মার্চ ২০১৭ ০২:২০
Share:

বেআইনি: আটক করা স্পিরিট। নিজস্ব চিত্র

কুড়ি লিটারের জলের জার। যেমনটা বাজারে পাওয়া যায়। সিল করা। আপাত ভাবে মনে হবে, জলই রয়েছে। কিন্তু, এক-একটি জারের বাজারদর ৪ হাজার টাকা! ভিতরে জল নেই, রয়েছে স্পিরিট। ছোট ম্যাটাডর এমনকী ট্যাক্সির ডিকিতে চাপিয়ে তা অনায়াসে পাচার হয়ে যায় এক জেলা থেকে অন্য জেলায়। এতটাই নিখুঁত সেই সিল যে মাঝপথে তল্লাশি চালালেও আপাত ভাবে জারে জল রয়েছে বলেই মনে হবে।

Advertisement

তারাতলার গোরাগাছা রোড থেকে এমনই ৩২টি জার উদ্ধার করেছে রাজ্য আবগারি দফতর। গ্রেফতার হয়েছে তিন জন। ধৃত এক জন রমেশ রাও আদতে অন্ধ্রপ্রদেশের বাসিন্দা। এখন থাকে কামারহাটিতে। আজ, সোমবার তাকে আদালতে তোলার কথা।

আবগারি দফতরের কলকাতার কালেক্টর সুব্রত বিশ্বাস জানান, মিনারেল ওয়াটারের বোতলে স্পিরিট পাচার হওয়ার খবর তাঁরা ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝি পান। বেলেঘাটার একটি ডেরা থেকে স্পিরিট ভরা কয়েকটি মিনারেল ওয়াটারের বোতলও তখন উদ্ধার হয়েছিল। সব ১ লিটারের বোতল। তার পর থেকেই তক্কে তক্কে ছিলেন আবগারি অফিসারেরা। ক্রেতা সেজে জাল ফেলে গত শুক্রবার প্রথম ধরা পড়ে আনোয়ার ঘরামি নামে এক ব্যক্তি। তার কাছ থেকেই একটি ২০ লিটার স্পিরিটের জার মেলে। আনোয়ারকে জেরা করে রমেশের নাম জানতে পারেন আবগারি অফিসারেরা।

Advertisement

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, রমেশের থেকে উদ্ধার হয়েছে ৩২টি জার। সব মিলিয়ে ৬৫০ লিটার স্পিরিট। রমেশের সঙ্গে গ্রেফতার হয়েছে তার এক শাগরেদও।

সুব্রতবাবুর কথায়, ‘‘স্পিরিট তৈরি করে বড় ট্যাঙ্কারে তা পাঠানো হয় ক্রেতাদের কাছে। মাঝপথে ট্যাঙ্কার চালকদের সঙ্গে যোগসাজশে বেআইনি ভাবে স্পিরিট চুরি করে একদল। এমন কয়েক জন আগেও ধরা পড়েছে। এখন দেখা যাচ্ছে সেই স্পিরিট দ্বিতীয় একটি দলের কাছে পাঠানো হচ্ছে, যারা মিনারেল ওয়াটারের জারে সেই স্পিরিট ভরে তা সিল করার কাজ করছে। দ্বিতীয় দলের থেকে সিল করা জার আসছে রমেশের কাছে।’’ সুব্রতবাবু জানান, রমেশ আদতে দালালের কাজ করে। বিভিন্ন জায়গায় ওই জার সরবরাহ করাই তার কাজ। ‘‘রমেশ আসলে বড় চক্রের অংশমাত্র’’— বলছেন তিনি

যারা স্পিরিট জারে ভরে সিল করছে, তাদের কাছে এখন পৌঁছতে চাইছেন আবগারি অফিসারেরা। সুব্রতবাবু জানান, রমেশের থেকে কয়েক জনের ফোন নম্বর মিলেছে। তাদের খোঁজ চলছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement