প্রতীকী ছবি।
প্রায় এগারো বছর আগে পরিকল্পিত ভাবে স্ত্রীকে খুনের অপরাধে যাবজ্জীবন সাজা হল স্বামীর। শনিবার হাওড়ার প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক সর্বাণী মল্লিক চট্টোপাধ্যায় এই সাজা ঘোষণা করেন। যাবজ্জীবনের সঙ্গেই দশ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। যা অনাদায়ে আরও ছ’মাস জেলে থাকতে হবে।
আদালত সূত্রের খবর, ২০১০ সালের ১৮ মে বালির বসুকাটি জামতলার রামচন্দ্রপুরে ভাড়াবাড়ির ঘরের ভিতরে একটি চার বাই আড়াই ফুটের টিনের বাক্সের ভিতর থেকে উদ্ধার হয় সোমা নস্কর নামে এক গৃহবধূর পচাগলা দেহ। দেহটি তোশকে মুড়ে ব্লিচিং ছড়িয়ে রাখা হয়েছিল। ময়না-তদন্তে জানা গিয়েছিল, বিষক্রিয়ায় মৃত্যু হয়েছে ওই বধূর। ওই ঘটনায় সোমার স্বামী রাজেশ সিংহের বিরুদ্ধে খুনের মামলা দায়ের করে পুলিশ। ঘটনার পর থেকেই সে পলাতক ছিল। তদন্তে নেমে দু’বছর পরে উত্তরপ্রদেশের গাজ়িয়াবাদ থেকে রাজেশকে গ্রেফতার করে হাওড়া সিটি পুলিশ। ধৃতকে জেরা করে জানা গিয়েছিল, ২০০৪ সালে বালির বাসিন্দা সোমার সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল দুর্গাপুরের কেব্ল ব্যবসায়ী রাজেশের। তবে বিয়ের কয়েক বছর পরে ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় স্ত্রীকে নিয়ে বালির ভাড়াবাড়িতে চলে আসে সে।
তদন্তে পুলিশ জেনেছিল, প্রতি রাতে মত্ত অবস্থায় ফিরে সোমাকে মারধর করত রাজেশ। মা-বাবার বাড়ি থেকে ব্যবসার জন্য টাকা নিয়ে আসতে চাপ দেওয়া হত ওই
বধূকে। কিন্তু তিনি তাতে রাজি হননি। এর পরেই পরিকল্পনা করে স্ত্রীকে খুন করে রাজেশ। বিষয়টি কেউ যাতে সহজে টের না পায়, তার জন্য দেহটি তোশকে মুড়ে তাতে ভাল মতো ব্লিচিং ছড়িয়ে টিনের বাক্সে ভরে রাখে সে। তার পরে চম্পট দেয়। স্থানীয় বাসিন্দারা বুঝতে পারছিলেন না, আচমকা ওই দম্পতি কোথাও উধাও হয়ে দেলেন। বেশ কয়েক দিন পরে পচা গন্ধ পেয়ে তাঁরাই পুলিশে খবর দিয়েছিলেন। তার পরে পুলিশ গিয়ে দেহটি উদ্ধার করেছিল।