—প্রতীকী চিত্র।
এক তরুণীর অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় রহস্য দানা বেঁধেছে। মৃতার নাম বাসন্তী মান্না (২৫)। রবিবার রাত ১১টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে বজবজ থানা এলাকার ধর্মতলা রোডে। এই ঘটনায় ওই বধূর স্বামী ও শ্বশুরকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, বাসন্তী একটি বিউটি পার্লারে চাকরি করতেন। তাঁর বাবার বাড়ি বিষ্ণুপুর থানার বাখরাহাট এলাকায়। তদন্তকারীরা জানান, মাস তিনেক আগে নন্দদুলাল মান্না নামে এক যুবকের সঙ্গে বাসন্তীর বিয়ে হয়েছিল। নন্দদুলাল স্থানীয় একটি চিকিৎসা কেন্দ্রে চাকরি করেন। এটি ছিল বাসন্তীর দ্বিতীয় বিয়ে। প্রথম স্বামীর সঙ্গে বছরকয়েক আগে তাঁর বিবাহ-বিচ্ছেদ হয়ে যায়। নন্দদুলালের সঙ্গে বাসন্তীর পরিচয় হয়েছিল সমাজমাধ্যমে। তরুণীর পরিবার দাবি করেছে, বাসন্তী ও নন্দদুলালের সম্পর্ক বেশ কয়েক বছরের। বাসন্তী একাধিক বার নন্দদুলালকে বিয়ের প্রস্তাব দিলেও তিনি টালবাহানা করছিলেন। শেষে নন্দদুলাল বিয়ে করার জন্য এক লক্ষ টাকা পণ দাবি করেন। সেই টাকা দেওয়া হয়। কিন্তু তা সত্ত্বেও বাসন্তীকে বিয়ে করতে রাজি হননি নন্দদুলাল। অভিযোগ, এর পরে আরও চার লক্ষ টাকা পণ বাবদ দাবি করেন তিনি। সেই টাকাও তাঁকে দেওয়া হয়। তার পরেও বাসন্তীকে বিয়ে করতে রাজি হচ্ছিলেন না নন্দদুলাল। এর পরে মাস ছয়েক আগে বাসন্তী নন্দদুলালের বাড়িতে এসে বসবাস শুরু করেন। মাস তিনেক আগে তাঁদের বিয়ে হয়।
বাসন্তীর পরিজনদের অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই তাঁকে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করা হত। কয়েক সপ্তাহ আগে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগও দায়ের করেছিলেন বাসন্তী। স্থানীয় একটি ক্লাবের সদস্যদেরও বিষয়টি জানানো হয়। রবিবার বিকেলেও বাসন্তী ওই ক্লাবে গিয়ে জানান, তাঁর উপরে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন হচ্ছে। ওই ক্লাবের সদস্যেরা জানান, সেই রাতেই নন্দদুলাল ও তাঁর বাবা গোপনে বাসন্তীর মৃতদেহ বাড়ি থেকে বার করে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। ক্লাবের সদস্যেরা তাঁদের ধরে ফেলেন। বজবজ থানায় খবর দেওয়া হয়। পুলিশ বাসন্তীর দেহ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
ওই বধূর পরিজনদের অভিযোগ, বাসন্তীকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে।
তদন্তকারী অফিসারেরা জানান, বাসন্তীর গলায় একটি ছোট কালশিটে দেখা গিয়েছে। এ ছাড়া, দেহের কোনও অংশে আঘাতের আর কোনও চিহ্ন নেই। মৃতদেহটি ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। পুলিশি জেরায় নন্দদুলাল ও তাঁর বাবার দাবি, গলায় দড়ির ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন বাসন্তী। মৃতার পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। পুলিশের বক্তব্য, ময়না তদন্তের রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পরেই মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট হবে।