জনসমাগম: বড়দিনের দুপুরে নিউ টাউনের ইকো পার্কে মানুষের ভিড়। শুক্রবার। ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য
করোনা পরিস্থিতিতেও মানুষের ঢল নামল পথে। কলকাতার বিভিন্ন জায়গার পাশাপাশি বিধাননগর, নিউ টাউনের ইকো পার্ক, এমনকি লেক টাউনের সার্ভিস রোডেও মানুষের ভিড় দেখা গেল বড়দিনে। দর্শকদের অধিকাংশই সতর্কতা মেনে মাস্ক পরে দুরত্ব বজায় রেখেছেন ঠিকই। আবার একাংশ কিছুই করেননি। শুক্রবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত এমনই ছবি দেখা গেল বিধাননগর ও নিউ টাউনে।
প্রশাসন অবশ্য সতর্কই ছিল। যান চলাচলে নিয়ন্ত্রণ ও নজরদারি যেমন ছিল, পাশাপাশি করোনা পরিস্থিতিতে সব রকমের বিধি যাতে সকলে মেনে চলেন, সে দিকেও নজর রাখা হয়।
গত কয়েক বছরে ইকো পার্কে এমন দিনে হাজার হাজার মানুষের ভিড় দেখা গিয়েছে। এ দিন সকাল থেকে অবশ্য সেই পরিচিত ভিড়ের ছবিটা ছিল না। তবে দুপুরের পর থেকে ভিড় কয়েক গুণ বেড়ে যায়। ইকো পার্কের বাইরে পার্কিংয়ের ব্যবস্থা, সিসি ক্যামেরার নজরদারি, পুলিশি নিরাপত্তা, নজরদারির ব্যবস্থা ছিল আঁটোসাঁটো। তবে ইকো পার্কের ভিড়কে কেন্দ্র করে সংলগ্ন রাস্তায় যানজটও ছিল। গাড়ির গতি শ্লথ হয়েছিল বলে স্থানীয়দের একাংশ জানান। এ দিন সেখানে ৫৬ হাজার মানুষের জমায়েত হয়েছিল বলেই প্রশাসন সূত্রের খবর।
ইকো পার্কে আসা পর্যটকেরা যাতে মাস্ক পরেন এবং শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখেন, সে ব্যাপারে সচেষ্ট ছিল প্রশাসন। সে চেষ্টা অনেকটা সফল হলেও অনেকে আনন্দের আতিশয্যে সে নিয়মের ধার ধারেননি বলেও অভিযোগ। মধ্যমগ্রামের বাসিন্দা সায়ন্তন সেন সপরিবার এসেছিলেন ইকো পার্কে। তিনি জানান, দুপুর পর্যন্ত ভিড় কিছুটা কম ছিল। তাঁর কথায়, ‘‘দীর্ঘ কয়েক মাস পরিবারের লোকজন ঘরে বন্দি। আজ পার্কে এসে অনেকটাই ভাল লাগছে। করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি আছে জেনেও বেরোনো হল। তবে সবটাই নিয়ম মেনে। কিন্তু অনেককেই দেখা গেল, মাস্কও পরেননি। দূরত্ব বজায় রাখারও কোনও রকম চেষ্টা নেই।’’
হিডকোর এক শীর্ষ কর্তা জানান, ভিড় হয়েছিল ঠিকই, তবে গত বারের তুলনায় কম। নিরাপত্তা এবং নজরদারি ছিল। পাশাপাশি করোনা পরিস্থিতিতে সকলে যাতে নিয়ম মেনে চলেন সে চেষ্টাও করা হয়েছে।
বিধাননগরের বাসিন্দাদের একাংশ জানিয়েছেন, এ দিন অসংখ্য মানুষের সমাগম ঘটেছিল বিধাননগরে। তাই আশঙ্কা, সংক্রমণ ফের বাড়তে পারে।
বৃহস্পতিবার রাতেই লেক টাউন-ভিআইপি রোডের সার্ভিস রোডে মানুষের যথেষ্ট ভিড় ছিল। পার্ক স্ট্রিটের মতো ওই জায়গা এ বারেও সাজানো হয়েছে। বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শুরু হয়েছে বড়দিনের উৎসবকে ঘিরে। গত কাল উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু, বিধাননগর পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারপার্সন কৃষ্ণা চক্রবর্তী, বিধাননগরের পুলিশ কমিশনার মুকেশ ও অন্য পুলিশকর্তারা। সেখানেও কমবেশি ছবিটা ছিল এক। সংক্রমণের কথা মাথায় না রেখে অনেককেই উৎসবে মেতে উঠতে দেখা গিয়েছে।
সল্টলেকের বিনোদন পার্ক, বনবিতান, শপিং মল থেকে শুরু করে রেস্তরাঁতেও ভালই ভিড় দেখা যায়।