Durga Puja 2021

Durga Puja 2021: বিপুল ভিড় বৃষ্টি থামতেই

মাস্ক নামিয়ে নিজস্বী তোলার হিড়িকেও কিছু কমতি দেখা গেল না। গায়ে গা লাগিয়ে করোনাবিধি শিকেয় তুলেই মণ্ডপমুখী হল জনতা।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০২১ ০৫:৪১
Share:

ফাইল চিত্র

সকাল-দুপুরের হালকা বৃষ্টিতে কিছুটা থতমত খেয়ে ঘরে ঢুকে পড়েছিল যে ভিড়, নবমী নিশিতে তা উপচে পড়ল রাস্তায়। মণ্ডপে মণ্ডপে জমায়েত হল ভালই। মাস্ক নামিয়ে নিজস্বী তোলার হিড়িকেও কিছু কমতি দেখা গেল না। গায়ে গা লাগিয়ে করোনাবিধি শিকেয় তুলেই মণ্ডপমুখী হল জনতা।

Advertisement

উৎসবের আমেজ মধ্যগগনে পৌঁছতে লেকটাউনের বুর্জ খলিফা দর্শনের উন্মাদনায় লাগাম পরানোর চেষ্টা দেখা গিয়েছে প্রশাসনের তরফে। কিন্তু এত দেরিতে ঘুম ভাঙার দরুন সেই ভিড়টাই ছড়িয়ে পড়েছে শহরের অন্যত্র। উত্তরের টালা পার্ক বা হাতিবাগানে ভিড় ছিল ধারাবাহিক ভাবেই। নবমীতে তা আরও বেড়েছে। দক্ষিণের চেতলা, নিউ আলিপুর বা বেহালা, ঠাকুরপুকুরও বুঝিয়ে দিচ্ছে অতিমারির দিনেও ভিড়ের টক্করে তারা জমি ছাড়তে নারাজ। অষ্টমীর মধ্যরাতের বৃষ্টিও নবমীর উন্মাদনাকে এক ফোঁটা কমাতে পারেনি। উল্টে উৎসবের সাজে, গুমোটে মাস্ক পরে থাকা নিয়ে এক ধরনের ক্লান্তি চোখে পড়ছে, যা উদ্বেগজনক বলে মনে করছেন চিকিৎসকেরা।

নবমীর সন্ধে থেকে গৌড়বঙ্গের মালদহ ও দুই দিনাজপুরে পুজো মণ্ডপগুলিতে ভিড় উপচে পড়ে। বিকেল তিনটে থেকে ভিড় নিয়ন্ত্রণে নামতে হয় পুলিশকে। দর্শনার্থীদের বেশির ভাগের মাস্ক ছিল না। শারীরিক দূরত্ব-বিধির তো প্রশ্নই নেই। কোচবিহারেও একই পরিস্থিতি। শিলিগুড়ির পুজো মণ্ডপগুলিতেও ভিড় ছিল সকাল থেকে। আলিপুরদুয়ার শহরের বিএফ রোডে শুধু কালো মাথার সারি। দিনভর গাদাগাদি ভিড় ছিল বৈকুণ্ঠপুর রাজবাড়িতে।

Advertisement

উপচোনো ভিড় ছিল নিতুড়িয়া-সহ পুরুলিয়া শহরের মণ্ডপগুলিতেও। সন্ধিপুজো শুরুর পরেই পুরুলিয়া টাউনে দেদার আতসবাজি ফেটেছিল। নবমীর সকালে হালকা বৃষ্টিও দর্শনার্থীদের দমাতে পারেনি। বাঁকুড়া, বিষ্ণুপুরে নবমীর দুপুরের পর থেকে হালকা বৃষ্টি হওয়ায় ভিড় ছিল তুলনায় কম।

স্বাস্থ্যবিধি উড়িয়ে উত্তর ২৪ পরগনার বেশির ভাগ প্রান্তেও জমজমাট ভিড়। বিকেল থেকে আকাশ মেঘলা। তাতে উৎসাহে ভাটা পড়েনি। রেস্তরাঁ বা খাবারের দোকানগুলিতেও থিকথিকে ভিড় ছিল।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডায়মন্ড হারবার, কাকদ্বীপে বিকেলে ভালই ভিড় ছিল। সন্ধের পরে তা একটু কমেছিল। ভাঙড়ের ভিড়টা আবার সন্ধের পরেই বেড়েছে। তবে দর্শনার্থীদের মাস্ক ব্যবহারে অনীহা প্রকট। মণ্ডপে স্যানিটাইজ়ারের ব্যবস্থাও নেই বললেই চলে। দুপুরে নদিয়ার কিছু জায়গায় বৃষ্টি হয়েছে। তবে বিকেলের পর থেকে জমায়েত বাড়তে থাকে। বাদকুল্লাগামী রাস্তায় ছিল গাড়ির ঢল। ফুলিয়া, বাদকুল্লায়, কয়েকটি পুজো মণ্ডপের সামনে পাঁচ-ছ’শো লোকের লাইন। বেশির ভাগেরই মাস্ক নেই। দুপুর দেড়টাতেও হুগলির শ্রীরামপুরে মল্লিকপাড়ার একটি মণ্ডপের সামনে লম্বা লাইন। রাস্তাঘাটে বাইকের দাপাদাপি।

নবমীর ভোর থেকে দিনভর দফায় দফায় বৃষ্টি হয়েছে মুর্শিদাবাদের নানা প্রান্তে। সন্ধ্যার পর থেকে আবহাওয়ার উন্নতি হওয়ায় ভিড় বেড়েছে। করোনা সুরক্ষাবিধি বা মাস্ক ছিল না। বেলডাঙ্গা, রেজিনগর, লালবাগ, জিয়াগঞ্জ, জঙ্গিপুর, ফরাক্কা, ধুলিয়ান, শমসেরগঞ্জে এক ছবি।

কিছুটা ব্যতিক্রম পূর্ব মেদিনীপুরে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে কয়েক পশলা বৃষ্টি হয়েছে। তাতে ভিড় কিছুটা হালকা। কাঁথি শহর ছাড়াও তমলুক, হলদিয়া, এগরায় নবমীর ভি়ড়ের চেনা ছবি দেখা যায়নি। পশ্চিম মেদিনীপুরেও বৃষ্টিতে অনেকেই ঘরবন্দি ছিলেন। রাঙামাটি, বার্জটাউন থেকে বিধাননগর, শরৎপল্লি- সর্বত্রই ভিড় তুলনায় কম। বিকেলে আধ ঘণ্টা হালকা বৃষ্টির পরে ঝাড়গ্রামে উৎসাহীরা বেরিয়ে পড়েন।

বিধি আছে কিন্তু মেনে চলার বালাই নেই বীরভূমে। নবমীর সকালে জেলার নানা জায়গায় বজ্রপাত-সহ বৃষ্টির পরেই দুপুর থেকে মণ্ডপগুলি থিকথিক করছে। অঞ্জলি দেওয়ার সময়েও ঘেঁষাঘেঁষি। রামপুরহাটে একটি বড় বাড়ির পুজোয় দিনের বেলা অস্বাভাবিক ভিড় হয়। অষ্টমীতে ভিড়ের চাপে পড়ে গিয়ে এক মহিলা জখম হন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement