ধর্মতলায় সাধারণ মানুষের ভিড়। —নিজস্ব চিত্র।
শনিবার সন্ধ্যায় জামিনে মুক্তি পান ত্রিধারাকাণ্ডের ন’জন আন্দোলনকারী। রবীন্দ্র সরোবর থানা থেকে তাঁদের ছাড়া হয়। তার পর সেখান থেকে জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে ছ’জন আসেন ধর্মতলার অনশনমঞ্চে। সেখানেই অনশনরত চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলেন তাঁরা। খোঁজখবর নেন সকলের। জুনিয়র ডাক্তারেরা ওই আন্দোলনকারীদের হাতে ‘বিচার চাই’ লেখা ব্য়াজও পরিয়ে দেন। কিছু ক্ষণ সেখানে থাকার পর ধর্মতলা ছাড়েন ওই ছ’জন আন্দোলনকারী।
ধর্মতলার অনশনমঞ্চ থেকে সাদা বেলুন ওড়ানো হল। সব বেলুনের গায়ে লেখা ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’।
শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা নাগাদ জামিনে মুক্তি পেলেন ত্রিধারাকাণ্ডে ধৃত ন’জন। গত বুধবার রাতে ত্রিধারা সম্মিলনী পুজোমণ্ডপের সামনে ‘বিচার চাই’ স্লোগান দিয়েছিলেন তাঁরা। সেই অভিযোগে প্রথমে তাঁদের আটক করা হয়, পরে গ্রেফতার করে পুলিশ। শুক্রবার কলকাতা হাই কোর্ট ধৃত ন’জনকেই জামিনে মুক্তি দেওয়ার নির্দেশ দেয়। কিন্তু কিছু জটিলতার কারণে শুক্রবার জেল থেকে ছাড়া হয়নি তাঁদের। শনিবার বিকেলের দিকে লালবাজারের সেন্ট্রাল লকআপ থেকে রবীন্দ্র সরোবর থানায় নিয়ে আসা হয়। সেখান জামিনে মুক্তি দেওয়া হয় ধৃতদের।
পুজোর আগে ধর্মতলা চত্বর ভিড়ে ঠাসা থাকে। কেনাকাটা করতে দূরদূরান্ত থেকে মানুষ এসে ভিড় করেন ধর্মতলায়। কিন্তু পুজোর কয়েকটা দিন ধর্মতলা চত্বর কার্যত ফাঁকাই থাকে। কারণ ওই চত্বরে কোনও পুজো নেই। তবে এ বারের ছবিটা আলাদা। পুজোর কয়েকটা দিন অন্যান্য পুজোরমণ্ডপের মতো ভিড় দেখা গিয়েছে ধর্মতলা চত্বরেও। বিশেষত, জুনিয়র ডাক্তারদের অনশনমঞ্চের সামনে।
দশমীর সন্ধ্যায় ধর্মতলা চত্বরে সাধারণ মানুষের ভিড় চোখে পড়ার মতো। শুধু কলকাতার মানুষ নন, জেলা থেকেও লোক এসে ভিড় করছেন জুনিয়র ডাক্তারদের অনশনমঞ্চের সামনে। চিকিৎসকদের আন্দোলনকে সমর্থন করতেই আসা, এমনই জানাচ্ছেন ধর্মতলায় আগত মানুষেরা।
গত শনিবার, ৫ অক্টোবর ঠিক রাত সাড়ে ৮টার সময় ‘আমরণ অনশনে’র কথা ঘোষণা করেছিলেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। কলকাতার বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজের ছয় জন পড়ুয়া ধর্মতলায় অনশনে বসেন। তবে ঘটনাচক্রে, তাঁদের মধ্যে আরজি করের কেউ ছিলেন না। যে আরজি কর নিয়ে এত বড় আন্দোলন, দু’মাসের বেশি সময় ধরে যা গোটা বাংলাকে আলোড়িত করছে, সেখানে আরজি করের কেউ কেন অনশনে রইলেন না তা নিয়ে বিভিন্ন মহল থেকে প্রশ্ন ওঠে। তার পর ৬ অক্টোবর অনশনে বসেন আরজি করের জুনিয়র ডাক্তার অনিকেত মাহাতো। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার তিনি অসুস্থ হয়ে পড়ায় আরজি করে ভর্তি করানো হয়েছে তাঁকে। অন্য দিকে, শুক্রবার রাতেই আরও দু’জন জুনিয়র ডাক্তার অনশন শুরু করেছেন।