ফাইল ছবি
বছরখানেক আগে চেতলা হাট রোডে একটি বাড়ির সিসি ক্যামেরার ফুটেজে ধরা পড়েছিল, ট্যাক্সি করে এসে এক ব্যক্তি রাস্তায় থাকা ম্যানহোলের সামনে নামলেন। তার পরে ম্যানহোলের লোহার ঢাকনা এবং স্ল্যাব শাবল দিয়ে খুলে ট্যাক্সিতে তুলে নিলেন। সিসি ক্যামেরার সেই ফুটেজ নিয়ে ৮১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অভিযোগও দায়ের করেছিলেন স্থানীয় থানায়।
কিন্তু বিক্ষিপ্ত এমন চুরি ও অভিযোগ সত্ত্বেও শহরে ম্যানহোলের ঢাকনা লোপাট থামছে না। বার বার এমন ঘটনা চিন্তায় ফেলেছে পুরসভাকে। পুর নিকাশি দফতর সূত্রের খবর, শহরের ম্যানহোলগুলি কী অবস্থায় রয়েছে, তার সমীক্ষা করতে বলা হয়েছে। প্রতিটি বরোর এগ্জিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ারেরা তাঁর বরোয় ম্যানহোলের রিপোর্ট দেবেন। যেখানে ঢাকনা মেরামত দরকার, সেখানে শীঘ্রই সংস্কার করা হবে।
সম্প্রতি কলকাতা পুরসভার মাসিক অধিবেশনেও ৯৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অভিযোগ করেন, রাস্তা ও ফুটপাত থেকে ব্যাপক হারে ম্যানহোলের ঢাকনা চুরি যাচ্ছে। আচমকা ম্যানহোলের ঢাকনা চুরি হওয়ায় যে কোনও পথচারীর সেখানে পড়ে অঘটন ঘটার আশঙ্কা প্রবল। কলকাতা পুলিশ সূত্রের খবর, শহরের সর্বত্র— বড়বাজার, কাশীপুর, বাগবাজার, বেহালা-সহ বিভিন্ন এলাকা থেকে ম্যানহোলের ঢাকনা চুরির অভিযোগ আসছে। উদ্বিগ্ন কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ (নিকাশি) তারক সিংহ বুধবার বলেন, ‘‘পুরসভার তরফে লেক থানায় এই নিয়ে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। পুলিশ ম্যানহোলের ঢাকনা উদ্ধারও করেছে। জানা যাচ্ছে, নেশাগ্রস্ত যুবকেরা ঘটনায় জড়িত। আমরা পুলিশকেও সতর্ক করেছি।’’
গত নভেম্বরে পুরসভার দু’নম্বর ওয়ার্ডে দমদম রোডের সেভেন ট্যাঙ্কসে খোলা ম্যানহোলে পড়ে মৃত্যু হয়েছিল এক অটোচালকের। তার পরেই সমস্যাটি আলোচনায় গুরুত্ব পায়। কিন্তু তাতেও যে কোনও সমাধানসূত্র মেলেনি, ম্যানহোলের ঢাকনা চুরির ঘটনা বৃদ্ধিই তার প্রমাণ। পুর নিকাশি দফতরের আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, শহরের কিছু জায়গায় ম্যানহোলের ঢাকনা চুরির পরে সেগুলি ঢালাই স্ল্যাব দিয়ে ঢাকা হচ্ছে। এখন বর্ষা চলছে। এই পরিস্থিতিতে ম্যানহোলের ঢাকনা চুরি গেলে পা ফস্কে সেই গর্তে পড়ে বড় বিপদ ঘটার আশঙ্কা থাকছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, ম্যানহোলের ঢাকনা চুরি নতুন নয়। কিন্তু ফের এই চুরির ঘটনা যে ভাবে মাথাচাড়া দিয়েছে, তাতেই বাড়ছে চিন্তা। মেয়র পারিষদ (নিকাশি) তারকের দাবি, ‘‘খোলা ম্যানহোল দেখলেই সেটি ঢাকার ব্যবস্থা করছি। পুলিশের সঙ্গে সমন্বয় রেখে কাজ করছি।’’