পড়ে রয়েছে মৃত পাখি। বেড়াচাঁপা চৌমাথায়। নিজস্ব চিত্র
বেশ জোরে ফটাস্ করে একটা শব্দ। তার পরেই দেখা যাচ্ছে, বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে টুপ করে রাস্তার উপরে পড়ছে পাখি। তার পরে সেখানেই ছটফট করতে করতে মরে যাচ্ছে। বারাসত-টাকি রোডে এমন দৃশ্য হামেশাই দেখা যাচ্ছে। অভিযোগ, একটি বিশাল ট্রান্সফর্মার থেকে প্রচুর ভোল্টের হাইটেনশন তার টানা হয়েছে নিয়ম না মেনে। আর সেই বিদ্যুতের তারেই প্রতিদিন তড়িদাহত হচ্ছে কাক, শালিখের মতো বিভিন্ন পাখি। স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, বিষয়টি নিয়ে হেলদোল নেই বিদ্যুৎ দফতরের। সেখানে জানিয়েও কোনও সুরাহা হয়নি বলেই দাবি স্থানীয়দের।
বারাসত-টাকি রোডের বেড়াচাঁপা চৌমাথায় চারটি খুঁটির উপরে ওই ট্রান্সফর্মারটি লাগানো হয়েছে। সেখান থেকেই ১১ হাজার ভোল্টের তিনটি বিদ্যুতের তার হাড়োয়া রোডে চলে গিয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী, ওই তারগুলি ত্রিভুজের আকারে যাওয়ার কথা। আগে তেমনটাই ছিল। বছর তিনেক আগে ওই চৌরাস্তার মোড়ে একটি তিনতলা বাজার ও আবাসন গড়ে ওঠে। অভিযোগ, আবাসনটির জন্যই ত্রিভুজের বদলে সমান্তরাল ভাবে তার লাগায় বিদ্যুৎ দফতর। ওড়ার সময়ে সেই তারে ডানা আটকে বিদ্যুতস্পৃষ্ট হয়ে মাটিতে, ট্রান্সফর্মারের খাঁচায় মরে পড়ে থাকছে পাখি।
বেড়াচাঁপা কলেজের কর্মী গফ্ফর আলি মণ্ডল বলেন, ‘‘যাতায়াতের পথে প্রায় দিনই বিকট শব্দ হতেই দেখি, রাস্তার উপরে ছিন্নভিন্ন পোড়া শরীর নিয়ে ছটফট করতে করতে মারা যাচ্ছে কাক, শালিখ।’’ স্থানীয় মানুষ জানান, প্রতিদিন তারে জড়িয়ে তিন-চারটি করে পাখি মারা যাচ্ছে। দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী সাদিয়া সুলতানা বলেন, ‘‘যেন মরণ-ফাঁদ। এ ভাবে পাখি মরতে থাকলে এখানে আর পাখির দেখা মিলবে না।’’ ইতিহাসের শিক্ষক প্রদীপ শাসমল বলেন, ‘‘অযৌক্তিক ভাবে তার টানা নিয়ে বিদ্যুৎ দফতরে জানানো হয়েছে। তাও বোধোদয় হচ্ছে না।’’
এ বিষয়ে বেড়াচাঁপা বিদ্যুৎ দফতরের আধিকারিক সুপ্রিয় দত্ত বলেন, ‘‘১১০০ হাজার ভোল্টের বিদ্যুতের দেখভাল আমাদের এক্তিয়ারে নেই। বিষয়টি উপর মহলে জানানো হচ্ছে।’’ স্থানীয় মানুষ অবশ্য জানিয়েছেন, এ ভাবে পাখি মরতে থাকলে তাঁরা একজোটে বিদ্যুৎ দফতরের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামবেন।