Health Department

রক্ত সংগ্রহে নামছে রাজ্যের দশটি বাস

শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বাসে জেনারেটরের ব্যবস্থা থাকছে। যাতে বিদ্যুৎ না থাকলেও রক্ত সংগ্রহে অসুবিধা না হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ জানুয়ারি ২০২০ ১১:০০
Share:

প্রতীকী ছবি।

দশ বছর পরে নামতে চলেছে দশটি বাস! ভ্রাম্যমাণ শিবিরের মাধ্যমে রক্ত সংগ্রহের প্রশ্নে ২০১০ সালে কেন্দ্রের কাছ থেকে পাওয়া প্রমাণ সাইজের বাসই এত দিন স্বাস্থ্য ভবনের কাছে ছিল সবেধন নীলমণি। শেষ পর্যন্ত কেন্দ্রীয় বাসের উপরে নির্ভরতা কমিয়ে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে দশটি ভ্রাম্যমাণ বাস নামাতে চলেছে স্বাস্থ্য ভবন।

Advertisement

রক্ত সংগ্রহের কাজে গতি আনতে ২০১০ সালে ‘ন্যাশনাল এডস কন্ট্রোল সোসাইটি’ (ন্যাকো) ১২ মিটার লম্বা ভলভো বাসটি অন্য রাজ্যের পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গকেও দেয়। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, বিশালায়তনের ভলভো বাস নিয়ে সব জায়গায় রক্তদান শিবির করায় অসুবিধা হয়। রক্ষণাবেক্ষণের খরচ নিয়ে টানাপড়েনের ফলে দীর্ঘদিন বাসটি পড়েছিল।

এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রের ভাবনাটুকু নিয়ে রাজ্য নিজেদের বাসের গঠনে বেশ কিছু বদল করেছে। স্বাস্থ্য ভবন সূত্রের খবর, রাজ্যের বাসগুলি ১২ মিটারের পরিবর্তে লম্বায় সাড়ে সাত মিটার করা হয়েছে। ন্যাকোর বাসে বায়ো-টয়লেট, খাবার-পানীয় রাখার ফ্রিজ এবং মাইক্রোওয়েভ ওভেন ছিল। রাজ্যের বাসে সে সব থাকছে না। তা ছাড়া চার জনের বদলে তিন জনের রক্ত সংগ্রহের ব্যবস্থা থাকছে। স্বাস্থ্য ভবনের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘এক-একটি বাসের গঠন বদলাতে খরচ পড়েছে প্রায় পঞ্চাশ লক্ষ টাকা। ন্যাকোর বাসে অনেক বিলাসিতা ছিল। প্রত্যন্ত এলাকায় যাতে পাঠানো যায়, আমাদের বাসগুলি সে ভাবে তৈরি হয়েছে।’’

Advertisement

শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বাসে জেনারেটরের ব্যবস্থা থাকছে। যাতে বিদ্যুৎ না থাকলেও রক্ত সংগ্রহে অসুবিধা না হয়। স্বাস্থ্য ভবনের এক কর্তা জানান, রক্তদান শিবিরের যেখানে পরিকাঠামো নেই সেই এলাকায় এমন বাস খুব উপযোগী। রক্তের সঙ্কটের সময়ে স্কুল-কলেজে বাস নিয়ে তাৎক্ষণিক প্রচার শিবির আয়োজনের পরিকল্পনাও রয়েছে। ওই কর্তা বলেন, ‘‘ব্লাড ব্যাঙ্কে যে ভাবে রক্ত সংরক্ষণ করা হয় তা ওই বাসে সম্ভব, ফলে সংগৃহীত রক্ত নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা নেই।’’

এত কিছুর পাশাপাশি দৃষ্টিভঙ্গিতেও বদল আনা জরুরি বলে মনে করছেন রাজ্য রক্ত সঞ্চালন পর্ষদের পরিচালন সমিতির সদস্য অচিন্ত্য লাহা। তাঁর কথায়, ‘‘বাসগুলির সাহায্যে কত রক্ত সংগ্রহ করা হবে অবশ্যই তার লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা উচিত। নইলে ন্যাকোর বাসের মতো অবস্থা হবে।’’

জাতীয় রক্ত সঞ্চালন পর্ষদের সদস্য অপূর্ব ঘোষ জানান, সারা দেশের মধ্যে স্বেচ্ছায় রক্তদান শিবির সংগঠনে পশ্চিমবঙ্গ দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। তবে শিবিরের গুণগত মানের মাপকাঠিতে রাজ্যের অবস্থান পিছনের সারিতে। অপূর্ববাবুর কথায়, ‘‘রাস্তার ধারে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে আয়োজিত শিবিরের বিকল্প হতে পারে এই বাসগুলি। জাতীয় স্বাস্থ্য মিশন এ ধরনের মোবাইল বাস অনেক আগেই দিতে চেয়েছিল। সে সব বাসের মাধ্যমে বিভিন্ন রাজ্য শিবির করে লাভবান হয়েছে। রাজ্য রক্ত সঞ্চালন পর্ষদের এত দেরিতে কেন ঘুম ভাঙল সেটাই প্রশ্ন।’’

যার প্রেক্ষিতে স্বাস্থ্য ভবনের এক কর্তা বলেন, ‘‘অতীত ঘেঁটে লাভ নেই। সামনের দিকে তাকাতে হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement