প্রতীকী ছবি
হাওড়া শহর জুড়ে লাফিয়ে বাড়ছে ডেঙ্গি আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। হাওড়া পুর এলাকার ৬৬ নম্বর ওয়ার্ডের প্রায় প্রতিটি এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে এই রোগ। ডেঙ্গি সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার জন্য পুরসভাকে দুষছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। দফতরের অভিযোগ, মশা নিয়ন্ত্রণ বিভাগ বা ভেক্টর কন্ট্র্রোল টিম ঠিক মতো কাজ না করায় শহর জুড়ে ছড়িয়েছে সংক্রমণ। যদিও ওই অভিযোগ অস্বীকার করে হাওড়ার পুর কমিশনার বিজিন কৃষ্ণ দাবি করেছেন, পুরসভার মশা নিয়ন্ত্রণ বিভাগ নিয়মিত কাজ করছে। আসলে গত বছর সংক্রমণ কম হওয়ায় নিয়ম মেনেই ডেঙ্গি এ বার বেশি হচ্ছে।
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের হিসেব বলছে, এখনও পর্যন্ত গোটা জেলায় ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় দেড় হাজার মানুষ। গত বছরের তুলনায় যা প্রায় দ্বিগুণ। এদের মধ্যে ৮৫ শতাংশ রোগী হাওড়া পুর এলাকার। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, হাওড়া পুর এলাকায় গত এক সপ্তাহে নতুন করে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন ২৩৭ জন। অর্থাৎ প্রতিদিন গড়ে ৩০ জনেরও বেশি মানুষের ডেঙ্গি ধরা পড়েছে। যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক বলে মনে করছেন জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা। তবে চলতি সপ্তাহে এর প্রকোপ কিছুটা কম রয়েছে।
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের বক্তব্য, এ বছর ডেঙ্গি মোকাবিলায় প্রথম থেকেই কার্যত ঝাঁপিয়ে পড়েছিল রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। ডেঙ্গি নির্ণয়-কেন্দ্র বাড়ানোর পাশাপাশি পর্যাপ্ত মাত্রায় ব্লিচিং, লার্ভিসাইট তেল, মশা তাড়ানোর কামান এমনকি বেশি দামের বায়ো লার্ভিসাইট তেল কিনে জেলা স্বাস্থ্য দফতরে পাঠানো হয়। ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণের জন্য বদলে দেওয়া হয় পুরো পদ্ধতিই। স্বাস্থ্য ভবনের নির্দেশ ছিল, একটি বাড়ির পর্যবেক্ষণ শেষ হলে তার পরেই মশা নিয়ন্ত্রণ বিভাগ কাজ শুরু করবে। আবর্জনা থাকলে তা পরিষ্কার করবে পুরসভার সাফাই দফতর।
কিন্তু জেলা স্বাস্থ্য দফতরের অভিযোগ, হাওড়া পুরসভার স্বাস্থ্য দফতর সেই নির্দেশ মেনে কাজ করছে না। উপরন্তু, তা নজরদারি করার লোকও নেই। ফলে মশার লার্ভা নষ্ট করা হচ্ছে কি না, সেটাই দেখা হচ্ছে না। গত বছরের তুলনায় তাই এ
বছর লাফিয়ে বাড়ছে রোগীর সংখ্যা। স্বাস্থ্য দফতরের বক্তব্য, অক্টোবর শেষ হতে এখনও বাকি। এর পরে শীত আসার আগে ডেঙ্গি আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা।
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘পুরসভার ভেক্টর কন্ট্রোল টিম রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশ ঠিক মতো মানছে না বলে আমাদের কাছে অভিযোগ এসেছে। শীত পড়ার আগে পর্যন্ত মশার প্রজনন বাড়বে। তাই নিয়মিত লার্ভা ধ্বংস করা প্রয়োজন।’’
অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে হাওড়ার পুর কমিশনার বলেন, ‘‘এটা ঠিকই, এ বছর ডেঙ্গি আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা গত বছরের তুলনায় বেশি। তবে ভেক্টর কন্ট্রোল টিম কাজ করছে না, এই অভিযোগ ঠিক নয়। ওই দলের নজরদারি আরও বাড়ানো যায় কি না, তা দেখা হবে।’’