বাক্স্বাধীনতা নিয়ে তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য বাংলার রাজ্যপালের। — ফাইল ছবি।
লোকসভায় সদস্যপদ খারিজ হয়েছে রাহুল গান্ধীর। তা নিয়ে দেশ জুড়ে সংকল্প সত্যাগ্রহ আন্দোলনে নেমে পড়েছে কংগ্রেস। তৃণমূল-সহ বিজেপি বিরোধী প্রায় সমস্ত দল এই প্রসঙ্গে রাহুলের পাশে। এই প্রেক্ষিতে বাক্স্বাধীনতা নিয়ে তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য শোনা গেল বাংলার রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের গলায়। জানিয়ে দিলেন, বাক্স্বাধীনতার সঙ্গে কোনও রকম আপস অনুচিত।
গণতন্ত্রের সবচেয়ে মহার্ঘ অলঙ্কার বাক্স্বাধীনতা। ইদানীং সেই বাক্স্বাধীনতা নিয়েই গোটা দেশে তোলপাড়। পাদপ্রদীপের তলায় কংগ্রেসের সদ্য বরখাস্ত সাংসদ রাহুল। ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের সময় কর্নাটকের একটি জনসভায় করা মোদী-মন্তব্যের প্রেক্ষিতে তাঁর বিরুদ্ধে গুজরাতের একটি আদালতে মানহানির মামলা করেন এক বিজেপি বিধায়ক। সেই মামলায় রাহুলকে দোষী সাব্যস্ত করে ২ বছরের সাজা শুনিয়েছে আদালত। তার জেরেই বাতিল হয়েছে রাহুলের লোকসভার সাংসদ পদ। স্বভাবতই নতুন করে প্রাসঙ্গিকতা ফিরে পেয়েছে বাক্স্বাধীনতার প্রসঙ্গ। রবিবার সকালে কলকাতা প্রেস ক্লাবে একটি অনুষ্ঠানে গিয়ে সেই বাক্স্বাধীনতা নিয়ে মন্তব্য করলেন রাজ্যপাল বোস। অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে বললেন, ‘‘ভারতের মতো গণতান্ত্রিক দেশে বাক্স্বাধীনতার সঙ্গে কোনও রকম আপস হওয়া উচিত নয়।’’ যদিও তিনি সরাসরি রাজনীতির প্রসঙ্গে ঢোকেননি। রাজনীতি নিয়ে প্রশ্ন করার সময়েই বেরিয়ে যান রাজ্যপাল। তা সত্ত্বেও এই আবহের রাজ্যপালের বোসের এই মন্তব্যের মধ্যে ভিন্ন ব্যঞ্জনা খুঁজে পাচ্ছেন অনেকে।
বাক্স্বাধীনতার গণ্ডি কতটা বিস্তৃত, তা নিয়ে তর্ক রয়েছে। যা নতুন করে প্রাসঙ্গিকতা পেয়েছে রাহুল-বিতর্কের প্রেক্ষিতে। জনসভায় দাঁড়িয়ে বলা মন্তব্যের প্রেক্ষিতে রাহুলের সাংসদ পদ খারিজ হলে, সেই দোষে কি বাকি রাজনৈতিক দলও দুষ্ট নয়, এই প্রশ্ন উঠছে। ঠিক তেমনই জনসভায় বলা কথার মাধ্যমে কোনও নির্দিষ্ট জাতি, সম্প্রদায় বা ব্যক্তিকে নিশানা করাও ভারতের সংসদীয় রাজনীতির ইতিহাসে নতুন নয়। সে ক্ষেত্রে বাক্স্বাধীনতার দোহাই দেওয়া যায় কি? সেই প্রশ্নও অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক। এই আবহেই রাজ্যপালের বাক্স্বাধীনতা নিয়ে মন্তব্যে গভীর তাৎপর্য খুঁজে পাচ্ছেন অনেকে।