গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
তৃণমূলনেত্রী ‘কাটমানি’ প্রসঙ্গে সতর্ক করে দিয়েছিলেন গোটা দলকে। তার পর রাজ্য জুড়ে কার্যত হুলুস্থুল অবস্থা। কেউ তা ফেরত দিচ্ছেন। কেউ আবার ফেরতের প্রতিশ্রুতিতে পিঠ বাঁচাচ্ছেন। তারই মধ্যে নতুন করে ‘কাটমানি’ চাওয়ার অভিযোগ উঠল খাস কলকাতায়। শুধু তাই নয়, ‘কাটমানি’ না দিলে খুন করার হুমকিও দেওয়া হল এক ব্যবসায়ীকে। ভয়ে তিনি কাজ বন্ধ করে দিতে বাধ্য হন। থানায় অভিযোগ জানাতে গেলেও পুলিশ প্রথমে কোনও গুরুত্ব দিতেও রাজি হয়নি।
হাওড়ার শিবপুরের বাসিন্দা তুষার ঘোষ পেশায় ব্যবসায়ী। সম্প্রতি তিনি বেনিয়াপুকুর থানা এলাকার একটি বহুতল রং করার কাজের বরাত পান। তুষারের অভিযোগ, কাজ শুরু হতেই দিদার শেখ নামে এক ব্যক্তি তাঁর কাছে ‘কাটমানি’ দাবি করে। কখনও ২০ হাজার, কখনও ৩০ হাজার টাকা দাবি করতে থাকে অভিযুক্ত। পরে ২ লাখ টাকাও দাবি করে সে। কিন্তু তিনি তা দিতে রাজি হননি। এর পর তাঁকে খুনের হুমকি দেওয়া হয়। এমনকি, গত ১ জুলাই দলবল নিয়ে ওই বহুতলের সামনে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে চলে আসে দিদার। বন্দুক দেখিয়ে তাঁকে হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ তুষারের। এ বিষয়ে তুষার বেনিয়াপুকুর থানায় গেলেও, প্রথমে তাঁর অভিযোগ নিতে অস্বীকার করেন কর্তব্যরত পুলিশ কর্মীরা। পরে অবশ্য বিষয়টি পদস্থ পুলিশ কর্তারা জানতে পেরে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার নির্দেশ দেন।
এর পরই তৎপরতা শুরু হয় বেনিয়াপুকুর থানার তরফে। বুধবারই থানায় ডেকে ওই ব্যবসায়ীর বক্তব্য শুনেছেন পুলিশ অফিসারেরা। অভিযুক্তকে গ্রেফতারের আশ্বাসও দেওয়া হয়েছে। এ দিন তুষারের করা এফআইআরের ভিত্তিতে মামলা রুজু হয়েছে। তবে ওই এফআইআর পুরনো তারিখে লেখা হয়েছে বলে পাল্টা অভিযোগ করেছেন ওই ব্যবসায়ী। এ দিন তুষার ঘোষ বলেন, “আমার অভিযোগ জিডি আকারে ছিল। এ দিন পুরনো তারিখ দিয়ে এফআইআর করা হয়েছে। যদিও আমি পুলিশের খাতায় ৩ জুলাই তারিখ দিয়েই সই করেছি। কিন্তু এফআইআরে অভিযোগকারীর যে সই রয়েছে, সেটা আমার নয়। জানতে পারছি, আমাকে না জানিয়ে ওটা কোনও পুলিশকর্মী করেছেন। ওই সইয়ের তলায় ২ জুলাই লেখা রয়েছে। আবার এফআইআরের ইনফর্মেশন রিসিপ্টে ১ জুলাই লেখা রয়েছে, সেটাই আমার হাতে ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমি কিছুই বুঝতে পারছি না।”
এফআইআর-এর কপিতে তারিখ এবং সই নিয়ে বিতর্ক।
আরও পডু়ন: রাজ্যের নাম পাল্টে ‘বাংলা’এখনই নয়, সংবিধান সংশোধনী বিল পেশ হয়নি, জানিয়ে দিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক
আরও পডু়ন: মালদহ ছেড়ে এ বার করিডর সরছে দিনাজপুরে! জালে ৩, উদ্ধার সাড়ে ৬ লাখের জাল নোট
ওই এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, দিদার শেখ বিভিন্ন নেতার নাম নিয়ে এলাকায় তোলাবাজি করে। এ বিষয়ে বেনিয়াপুকুর থানায় অভিযোগ এলেও তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয় না পুলিশকর্মীরা। তুষারের দাবি, তাঁকে দিদার বলেছিল সে স্থানীয় সিন্ডিকেটের মাথা। এই এলাকায় কাজ করতে হলে ‘কাটমানি’ দিতে হবে। নিজেকে সে তৃণমূলের কর্মী বলেও পরিচয় দেয় তুষারের দাবি।