গার্ডেনরিচ জল প্রকল্পের পরিষেবা প্রসারের কাজ চলছে। ছবি: সুদীপ ঘোষ
পরিস্রুত জল উৎপাদনে টালা প্রকল্পের কাছাকাছি পৌঁছে যাওয়ার পথে গার্ডেনরিচ জল প্রকল্প। মাসখানেকের মধ্যেই গার্ডেনরিচ জল প্রকল্প থেকে দৈনিক ২১ কোটি গ্যালন পরিস্রুত জল উৎপাদন করা শুরু হবে। বর্তমানে টালার জল প্রকল্প থেকে দৈনিক ২৪ কোটি গ্যালন পরিস্রুত জল উৎপাদিত হয়।
আশির দশকে গার্ডেনরিচ জল প্রকল্প মাত্র চার কোটি গ্যালন পরিস্রুত জল উৎপাদনে সক্ষম ছিল। ২০১১ সালের আগে তা বেড়ে দাঁড়ায় ১০ কোটি। গত আট বছরে তা আরও ১১ কোটি গ্যালন বেড়েছে। অর্থাৎ, গার্ডেনরিচ প্রায় ছুঁয়ে ফেলছে টালার উৎপাদন ক্ষমতা। পুরসভার জল সরবরাহ দফতরের এক আধিকারিক জানান, ২০১১ সালের আগে গার্ডেনরিচ প্রকল্প কে এম ডব্লিউ এস এ-র অধীনে ছিল। তৃণমূল বোর্ড ক্ষমতায় আসার পরে পুরসভার হাতে আসে গার্ডেনরিচ জল প্রকল্প। ওই প্রকল্প থেকে মূলত যাদবপুর, টালিগঞ্জ, বেহালা-সহ মহেশতলা, বজবজ, পূজালি এলাকায় জল সরবরাহ হয়।
মাটির নীচের জলস্তর বিপজ্জনক সীমায় পৌঁছনোর সতর্কবার্তা সত্ত্বেও যে শহরে অবাধে ভূগর্ভস্থ জল তোলা চলছে, তা মানছেন কলকাতা পুর কর্তৃপক্ষ। তথ্য বলছে, পুরসভার নিজস্ব গভীর নলকূপ প্রায় ৪০০টি। গভীর নলকূপ বেশি রয়েছে যাদবপুর, টালিগঞ্জ এলাকায়। পরিস্রুত পানীয় জল সরবরাহ বাড়লে কমবে এই প্রবণতা বলে দাবি কর্তৃপক্ষের।
এক পুর আধিকারিক জানান, বেহালায় জল সরবরাহ শুরু হয়েছিল পরিস্রুত পানীয় জল দিয়ে। জনবসতি বাড়তে থাকায় গভীর নলকূপ বসিয়েছিল পুরসভাই। জল সরবরাহের পরিমাণ বাড়ায় বেহালার ১৩১, ১৩২ ওয়ার্ডের গোটা ছয়েক গভীর নলকূপ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে জানাচ্ছে পুরসভা। অন্য দিকে, জোকা গ্রাম পঞ্চায়েতের কিছু এলাকা নিয়ে কলকাতা পুরসভায় সংযুক্ত তিনটি ওয়ার্ড ১৪২-১৪৪ এর পানীয় জলের সমস্যা মেটাতে ছ’টি গভীর নলকূপ বসানো হয়েছে।
২১ কোটি গ্যালন জল সরবরাহ শুরু হলে জোকার ওই সব নলকূপ এবং যাদবপুর ও টালিগঞ্জের কয়েকটি নলকূপ বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে পুর প্রশাসন সূত্রের খবর। ইতিমধ্যেই গার্ডেনরিচ থেকে জল সরবরাহের জন্য ৭২ ইঞ্চি ব্যাসের পাইপ বসানোর কাজ শেষ পর্যায়ে। জল প্রকল্প থেকে তারাতলা পর্যন্ত ওই পাইপ মাইক্রো টানেল পদ্ধতিতে বসান হয়েছে। জল সরবরাহের চাপ যাতে ভাল থাকে সে জন্য বেহালা, যাদবপুর ও টালিগঞ্জ এলাকার কয়েকটি ওয়ার্ডে বুস্টার পাম্পিং স্টেশন করা হয়েছে। আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যে আরও বুস্টার পাম্পিং স্টেশন করার পরিকল্পনা রয়েছে।
মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানান, পুরসভার উদ্দেশ্যে, শহরবাসীকে পরিস্রুত পানীয় জল সরবরাহ করা এবং মাটির নীচের জলের ব্যবহার বন্ধ করা। সে পথেই এগোচ্ছে পুর প্রশাসন।