মল্লিকা সাগর। ছবি: আইপিএল।
গত বছর প্রথম আইপিএলের নিলামে সঞ্চালক হিসাবে দেখা গিয়েছিল মল্লিকা সাগরকে। ২০২৩ সালে তাঁর সঞ্চালনায় ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) কর্তারা এবং দলগুলির মালিকেরা খুশি হয়েছিলেন। এ বারের মেগা নিলামের সঞ্চালনার দায়িত্ব তাই তাঁকেই দিয়েছেন বোর্ড কর্তারা। নিলামের প্রথম দিন সেই মল্লিকার জোড়া ভুলেই গুজরাত টাইটান্সের ২৫ লাখ এবং সানরাইজার্স হায়দরাবাদের ৪০ লাখ টাকা নষ্ট হয়েছে।
মল্লিকা প্রথম ভুল করেন ইংল্যান্ডের উইকেটরক্ষক-ব্যাটার জস বাটলারের নিলামের সময়। লখনউ সুপার জায়ান্টসের সঙ্গে তীব্র লড়াইয়ের পর বাটলারকে ১৫ কোটি ৭৫ লাখ টাকায় কেনে গুজরাত। মল্লিকা ভুল না করলে ২৫ লাখ টাকা কমে ইংরেজ ক্রিকেটারকে পেয়ে যেতেন গুজরাত কর্তৃপক্ষ।
বাটলারকে নিয়ে দুই দলের লড়াইয়ের সময় গুজরাত কর্তৃপক্ষ ১৫.৫০ কোটি টাকা দাম দেওয়ার পর মল্লিকা লখনউ কর্তৃপক্ষকে প্রশ্ন করেন, তাঁরা আরও বেশি দাম দিতে রাজি কি না। বাটলারকে নিতে হলে লখনউকে ১৫.৭৫ কোটি টাকা দাম দিতে হত। কিন্তু সঞ্জীব গোয়েন্কার দল আর এগোতে রাজি হয়নি। তাঁরা লড়াই থেকে সরে যাওয়ার কথা জানান। অথচ মল্লিকা ঘোষণা করে বসেন ১৫.৭৫ কোটি টাকা দাম উঠেছে বাটলারের। সম্ভবত ভুলে গিয়েছিলেন, গুজরাত শেষ ১৫.৫০ কোটি দাম দিয়েছে এবং লখনউ ১৫.৭৫ কোটি টাকা দিতে রাজি কি না, সেটাই শেষ প্রশ্ন ছিল তাঁর। কিন্তু বাটলারের দাম মল্লিকা ১৫.৭৫ কোটি টাকা ঘোষণা করে দেওয়ায় সেই দামেই নিতে হয় গুজরাতকে। না হলে ১৫.৫০ কোটি টাকাতেই বাটলারকে পাওয়া উচিত ছিল আশিস নেহরাদের।
মল্লিকা দ্বিতীয় ভুলটি করেন অভিনব মনোহরকে নিলামে তুলে। ভারতের তরুণ ব্যাটারকে দলে নিতে লড়াই হয় বেশ কয়েকটি দলের মধ্যে। প্রথমে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু এবং চেন্নাই সুপার কিংসের মধ্যে লড়াই শুরু হয়। বেঙ্গালুরু ছেড়ে দেওয়ার পর চেন্নাইয়ের সঙ্গে লড়াই শুরু হয় গুজরাতের। পরে লড়াইয়ে আসেন সানরাইজার্স হায়দরাবাদ কর্তৃপক্ষ। কাব্য মারানেরা অভিনবের জন্য ২.৪০ কোটি টাকা পর্যন্ত ওঠার পর আবার লড়াইয়ে ফেরে চেন্নাই। তারা ২.৬০ কোটি টাকা দাম দেয়। হায়দরাবাদ পাল্টা ২.৮০ কোটি টাকা দাম দেয়। তখন চেন্নাই লড়াই থেকে সরে যায়।
এর পরেই ভুল করে বসেন মল্লিকা। হায়দরাবাদ ২.৮০ কোটি টাকায় অভিনবকে পাচ্ছে বলেও দুঃখ প্রকাশ করে জানান, কলকাতা নাইট রাইডার্স ৩ কোটি টাকা দাম দিয়েছে। তিনি দেরিতে দেখার জন্য ক্ষমাও চান। তাঁর এই কথা শুনে কিছুটা বিস্মিত হন কেকেআর কর্তৃপক্ষ। কারণ, তাঁরা অভিনবের জন্য কোনও আগ্রহই দেখাননি। কিন্তু মল্লিকার ঘোষণায় হায়দরাবাদ কর্তৃপক্ষ ভাবেন কেকেআর ৩ কোটি টাকা দাম দিয়েছে। ফলে বাধ্য হয়ে তাঁরা ৩.২০ কোটি টাকা দাম দেন। শেষ পর্যন্ত সেই টাকা দিয়েই অভিনবকে নিতে হয় হায়দরাবাদকে। মল্লিকার চোখের ভুলের জন্য অকারণে ৪০ লাখ টাকা বেশি খরচ হয় কাব্যদের।
আইপিএল নিলামের প্রথম দিন মল্লিকার এই দুই ভুল নিয়ে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। দ্রুততার সঙ্গে নিলাম করতে গিয়েই ভুল করেছেন মল্লিকা। দলগুলির প্রতিনিধিদের ইশারা বুঝতে ভুল করেছেন কয়েক বার। বাকি ক্ষেত্রে অবশ্য দলগুলির আর্থিক ক্ষতি হয়নি।