Garbage Collection Vehicles

পড়ে থেকে জঞ্জালে ভরেছে আবর্জনা সংগ্রহের গাড়িই

প্রকল্পের গাড়িগুলিই এখন ঢাকা পড়ে গিয়েছে আবর্জনায়। আর সাফাইকর্মীরা আবর্জনা নিয়ে যাচ্ছেন ঠেলাগাড়িতে চাপিয়েই।

Advertisement

দেবাশিস দাশ

শেষ আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৩:০৬
Share:

অকেজো: বেলিলিয়াস পার্কে পড়ে রয়েছে কোটি টাকার সেই গাড়িগুলি।    ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার

শহরকে ভ্যাটমুক্ত করতে বছর দুয়েক আগে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের কাজ শুরু করেছিল হাওড়া পুরসভা। সে জন্য হরিয়ানার গুরুগ্রাম থেকে কয়েক কোটি টাকা দিয়ে টোটোর মতো দেখতে বিশেষ আবর্জনা সংগ্রহের ২৫২টি গাড়ি কেনা হয়েছিল। গাড়িগুলিতে পচনশীল ও অপচনশীল বর্জ্য আলাদা করার ব্যবস্থা রয়েছে। অভিযোগ, শহরের একটি মাত্র ওয়ার্ডে বছরখানেক আগে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কাজে মাত্র ১০-১৫টি গাড়িকে কাজে লাগানো হলেও অধিকাংশই পড়ে রয়েছে বেলিলিয়াস পার্কে, খোলা আকাশের নীচে। দিনের পর দিন গাড়িগুলি এ ভাবে পড়ে থাকায় অধিকাংশই অকেজো হয়ে গিয়েছে। বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের গাড়িগুলিই এখন ঢাকা পড়ে গিয়েছে আবর্জনায়। আর সাফাইকর্মীরা আবর্জনা নিয়ে যাচ্ছেন ঠেলাগাড়িতে চাপিয়েই।

Advertisement

বর্তমানে পুরসভার ৬৬টি ওয়ার্ডে ভ্যাট রয়েছে মোট ৩০৫টি। পুরসভার সাফাইকর্মীরা বাসিন্দাদের ফেলা আবর্জনা বিভিন্ন অলিগলি থেকে তুলে ওই ভ্যাটগুলিতে ফেলতেন। এটাই ছিল নিয়ম। বছর দুয়েক আগে ঠিক হয় শহরের সমস্ত ভ্যাট ধাপে ধাপে তুলে দেওয়া হবে। পরিবর্তে পুরসভার সাফাইকর্মীরা বিশেষ গাড়ি করে বাড়ি বাড়ি গিয়ে আবর্জনা সংগ্রহ করবেন। তার আগে প্রতিটি বাড়িতে দু’টি করে নীল ও সবুজ রঙের ডাস্টবিন দেওয়া হবে। সেখানে বাসিন্দারাই পচনশীল আবর্জনা ও অপচনশীল আবর্জনা আলাদা করে ফেলবেন। সাফাইকর্মীরা আবর্জনা আলাদা করার বিশেষ গাড়ি নিয়ে এসে বাড়ি থেকে আবর্জনা সংগ্রহ করবেন।

মডেল হিসেবে এ বছরের প্রথম দিকে ২২ নম্বর ওয়ার্ডের এই প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। লক্ষ্য ছিল, শহরকে জঞ্জাল ও দূষণমুক্ত করা। পুরসভা সূত্রের খবর, ঠিক ছিল এ বছর ৩০টি ওয়ার্ডে এই ব্যবস্থা চালু করা হবে। এ জন্য পুরসভার ইঞ্জিনিয়ারদের একটি দলকে গুরুগ্রামে পাঠানো হয় ব্যাটারিচালিত সবুজ-বান্ধব ওই গাড়ি কেনার জন্য। কয়েক কোটি টাকা খরচ করে গাড়ি কেনাও হয়। ধাপে ধাপে সমস্ত গাড়ি চলে আসার পরে সেগুলিকে রাখা হয় ইস্ট-ওয়েস্ট বাইপাসের পাশে বেলিলিয়াস পার্কের ভিতরে।

Advertisement

অভিযোগ, কোনও ছাউনির নীচে না রেখে নতুন গাড়িগুলিকে প্লাস্টিকের ত্রিপল টাঙিয়ে রাখা হয় পার্কের আগাছা ভরা জায়গায়। রোদে জলে বর্তমানে প্লাস্টিকের ছাউনি ছিঁড়ে পড়েছে। নতুন আনা গাড়িগুলিতে ঘাস জন্মে গিয়েছে।

কিন্তু কেন গাড়িগুলির এমন অবস্থা হল?

হাওড়া পুরসভার সাফাই দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘ওই গাড়িগুলি রাখার জায়গা ছিল না। ঠিক ছিল প্রতিটি ওয়ার্ডে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। সেখানে ছাউনি তৈরি করে রাখা হবে। কিন্তু গত দু’ছর ধরে ভোট না হওয়ায় এবং নির্বাচিত প্রতিনিধিরা না থাকায় কোনও কাজই হয়নি।’’

পুরসভার এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘আর কিছু দিনের মধ্যেই উত্তর হাওড়ার ৫, ৮, ৯ ও ১২ নম্বর ওয়ার্ডে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কাজ শুরু হবে। এ ছাড়া মধ্য হাওড়ার ১৮, ২৪, ২৫, ২৬, ২৮ ও ৩২ নম্বর ওয়ার্ডেও বাড়ি বাড়ি গিয়ে শুরু হবে জঞ্জাল সংগ্রহ। তখন অনেক গাড়ি কাজে লাগবে। কিন্তু গাড়িগুলি কেন এ ভাবে ফেলে রাখা হল খোঁজ নেওয়া হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement