—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
সব ঠিকঠাক চললে আগামী ডিসেম্বরে পরীক্ষার পরেই তাঁদের বিয়ে হওযার কথা ছিল। দীর্ঘদিনের বন্ধুত্ব তাঁদের, ডাক্তারি পড়ারও আগে থেকে। আরজি কর থেকে ফোন পেয়ে কল্যাণী জেএনএম হাসপাতালে স্নাতকোত্তর তৃতীয় বর্ষের সেই ছাত্রকে খবর দিয়েছিলেন ছাত্রীর বাবা।
বন্ধু-পরিজনের একাংশের দাবি, আরজি কর থেকে ছাত্রীর বাবাকে ফোন করে বলা হয়েছিল, তাঁর মেয়ের মৃত্যুর কথা। সেই খবর পেয়ে তাঁরা সেখানে গেলেও ঘণ্টা দুই তাঁদের দেহ দেখতে দেওয়া হয়নি।
নিহত ছাত্রীর বন্ধু যে বিভাগের ছাত্র, জেএনএমের সেই মনোরোগ বিভাগের প্রধান কৌস্তভ চক্রবর্তী সোমবার দুপুরে বলেন, “ওরা দু’জনই আমার খুব কাছের। ঘটনার রাতে দু’জনের মধ্যে স্বাভাবিক কথোপকথন হয়েছিল। ছাত্রটি আমাকে নিজের হোয়াটসঅ্যাপ দেখিয়েছে।” তাঁর আক্ষেপ, “আরজি কর থেকে মেয়েটির বাবাকে ফোন করে মৃত্যু সংবাদ দেওয়া হয়। কিন্তু কারও মৃত্যু সংবাদ তাঁর বাবাকে জানাতে যে ভদ্রতা, নম্রতা থাকা উচিত, তা ছিল না।”
শিক্ষক জানান, দুই পরিবারের মধ্যে বিয়ের পাকা কথা হয়েছিল। মাস কয়েক আগে কেরলে কনফারেন্সে যাওয়ার সময়ে তিনি ছাত্রটিকেও সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলাম। তাঁর কথায়, “ফেরার আগে ও বান্ধবীর জন্য কেরল থেকে শাড়ি আনতে চেয়েছিল। আমি পছন্দ করে কিনে দিয়েছিলাম। আসছে ডিসেম্বর পরীক্ষা শেষ হলেই ওদের বিয়ে হত।”
ছাত্রীর বাবা যখন ছাত্রটিকে ফোন করে খবর দেন, তখনও তিনি কল্যাণী মেডিক্যালে বিভাগীয় প্রধানের সঙ্গেই ছিলেন। কৌস্তভ বলেন, “ছাত্রের বাড়ি ব্যারাকপুরে আর ছাত্রীর সোদপুর। আমি ছাত্রকে বলি, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মেয়েটির বাবা-মাকে সঙ্গে নিয়ে আরজি করে যেতে। কিন্তু দেহ দেখার জন্য তাঁদের দু’ঘণ্টা বসিয়ে রাখা হয়েছিল বলে শুনেছি।”
জেএনএমের এক শিক্ষকের দাবি, সে দিন একাধিক বার ওই ছাত্রের সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে। কিন্তু প্রথম দিন ব্লু টুথ বা হেডফোনের তারের কথা বাড়ির লোককে বলা হয়নি। পরের দিন হেডফোনের বিষয়টি সামনে আনা হয়। কৌস্তভ বলেন, “আমার ছাত্র মানসিক ভাবে ভেঙে চুরমার হয়ে গিয়েছে। ওরা পরস্পরকে খুবই ভালবাসত। কিছুতেই মানতে পারছি না। প্রকৃত অপরাধীদের চিহ্নিত করা হোক। ন্যায়বিচার হওয়ার জন্য যা প্রয়োজন, তা করা দরকার।”