শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়।
কয়েক বছর আগে ছোটদের জন্য সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের একটি জনপ্রিয় লেখার ফিল্মি স্বত্ব নিয়ে জটিলতা আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছিল। হয়রানির শিকার হয় তাঁর পরিবার।
শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের একটি গল্প নিয়েও টানাপড়েন কম হয়নি। জনৈক পরিচালকের অনুরোধে এক প্রযোজককে সেই গল্প থেকে ছবি তৈরির অনুমতি দিয়েছিলেন তিনি। পরে সেই প্রযোজক ও পরিচালকের মধ্যে গোলমালের জেরে ছবির কাজটাই ভেস্তে যাচ্ছিল। এই পরিস্থিতিতে স্নেহভাজন পরিচালককে উদ্ধারের জন্য সামান্য অদলবদল করে শিরোনাম পাল্টে গল্পটি আবার লিখতে হয় শীর্ষেন্দুবাবুকে।
গল্প-উপন্যাসের ফিল্মি স্বত্ব বিক্রি থেকে জনপ্রিয় লেখার রয়্যালটি আদায় নিয়ে অনেক বাঙালি সাহিত্যিকই ঝামেলায় পড়েন। অন্য কোনও ভাষায় অনুবাদ হয়ে বই বেরোলেও কানাকড়ি আসে না লেখকের হাতে। এই সব সমস্যার মোকাবিলায় একটি ফোরাম বা মঞ্চ গড়ে উঠতে চলেছে। এ বার বইমেলায় আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশও ঘটেছে সেই ফোরামের।
এই মঞ্চের পুরোভাগে রয়েছেন শীর্ষেন্দুবাবুর মেয়ে দেবলীনা মুখোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, ‘‘বাংলা ভাষার সাহিত্যিকদের লেখার প্রচার বা তা আরও বড় পরিসরে অবঙ্গভাষীদের সামনে মেলে ধরার কথা ভেবেই এই পদক্ষেপ।’’ কপিরাইট আইন অনুযায়ী কী ভাবে ভিন্ রাজ্যের এক জন প্রকাশক বা চলচ্চিত্র প্রযোজকের সঙ্গে চুক্তি করা উচিত, অনেক সাহিত্যিকই সেই বিষয়ে ওয়াকিবহাল নন।
ফলে চুক্তিপত্রের ভিতরে লুকোনো নানা শর্তে তাঁদের নাজেহাল হতে হয়। পেশাদার আইনজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী সাহিত্যিকদের সাহায্য করতে চায় ফোরাম। সাহিত্যিকদের সঙ্গে পাঁচ বছরের সমঝোতাপত্র সই করে কাজটা শুরু করতে চায় তারা।
সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের ছেলে সৌভিকও আইনজীবীদের সঙ্গে যোগাযোগ করানো থেকে শুরু করে এই উদ্যোগটিকে গোড়া থেকে নানা ভাবে সাহায্য করে চলেছেন। আপাতত পশ্চিমবঙ্গের কয়েক জন লেখককে সঙ্গে নিয়েই এগোনো হচ্ছে। সমরেশ মজুমদারের কথায়, ‘‘সাহিত্যিকদের আইনি পরামর্শের দরকার হয়েই থাকে। শেষ পর্যন্ত ওঁরা আমাদের সাহায্য করতে পারলে তো ভালই।’’