—প্রতীকী ছবি
অগস্ট থেকে এখনও পর্যন্ত পেনশনের টাকা না পাওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন কলকাতা পুরসভার অবসরপ্রাপ্ত কর্মীরা। পুরসভা সূত্রের খবর, গত অগস্টে ৩৫০ জন কর্মী অবসর নিয়েছেন। কিন্তু এখনও তাঁরা পেনশনের প্রাপ্য টাকা হাতে পাননি। এক দিকে, বেতন বন্ধ। অন্য দিকে, পেনশনও হাতে না আসায় আর্থিক সঙ্কটে পড়েছেন তাঁদের অনেকেই। সেই টাকা পাওয়ার আশায় রোজ পুরসভার সদর দফতরে হন্যে হয়ে ঘুরছেন তাঁরা।
সম্প্রতি পুরসভার সদর দফতরের পেনশন বিভাগে গিয়ে দেখা গেল, বেশ কয়েক জন অবসরপ্রাপ্ত কর্মী সেখানে অপেক্ষা করছেন। গত পাঁচ মাস ধরে পেনশনের একটি টাকাও পাননি তাঁরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এমনই এক প্রৌঢ়ের কথায়, ‘‘সামনের মাসে আমার মেয়ের বিয়ে। এই সময়ে টাকার খুব প্রয়োজন। চার মাসের বকেয়া টাকাটা পেলে খুব ভাল হত।’’ আর এক জন অবসরপ্রাপ্ত কর্মীর কথায়, ‘‘আমার স্ত্রী ক্যানসারে আক্রান্ত। আমাকেও ওষুধ খেতে হয়। টানা পাঁচ মাস পেনশন না পাওয়ায় চরম সঙ্কটে রয়েছি।’’
পেনশনের বকেয়া টাকাই শুধু নয়, ২০১৯ সালের নভেম্বর মাসে রাজ্য সরকার ঘোষণা করেছিল, ২০১৬ সালের জানুয়ারির পরে অবসর নেওয়া পুরকর্মীরা বেতন কমিশনের বর্ধিত হারে পেনশনের টাকা পাবেন। কিন্তু ২০১৬ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত যে সমস্ত পুরকর্মী অবসর নিয়েছেন, তাঁরা এখনও ২০১৬-র বেতন কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী বর্ধিত হারে পেনশন পাননি। পুরসভা সূত্রের খবর, ৬৭৪০ জন অবসরপ্রাপ্ত কর্মী এই দুর্ভোগের শিকার। তাঁরা প্রতি মাসে প্রায় দশ হাজার টাকা কম পাচ্ছেন।
আরও পড়ুন: কমছে সংক্রমণ, রাজ্যে এক হাজারের নীচে নেমে এল দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা
আরও পড়ুন: সোমে কলকাতায় বাইক র্যালিতে শোভন-বৈশাখী, সঙ্গে কৈলাসও
কলকাতা পুরসভায় বর্তমানে প্রায় ১৮ হাজার কর্মী রয়েছেন। পেনশনভোগী রয়েছেন ৩১ হাজারের কিছু বেশি। প্রতি মাসে গড়ে ২০০ জন করে কর্মী অবসর নিচ্ছেন। বেতন বাবদ মাসে ৮৪ কোটি টাকা খরচ করতে হয় পুরসভাকে। পেনশন বাবদ খরচের পরিমাণ মাসে ৫৬ কোটি টাকা।
অবসরপ্রাপ্ত কর্মীরা এই ধরনের ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন কেন? পুরসভা সূত্রের খবর, পুর কোষাগারের অবস্থা এখন বেহাল। সেই কারণেই পেনশন দিতে সমস্যা হচ্ছে অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের। যদিও এ প্রসঙ্গে পুর অর্থ দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘অবসরপ্রাপ্ত প্রত্যেক কর্মীর যাবতীয় বকেয়া শীঘ্রই মিটিয়ে দেওয়া হবে।’’ এ বিষয়ে জানতে চেয়ে পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান ফিরহাদ হাকিম এবং পুর কমিশনার বিনোদ কুমারকে একাধিক বার ফোন করা হলেও তাঁরা ধরেননি। উত্তর দেননি টেক্সট মেসেজেরও।