প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে ঢোকানো হচ্ছে হাসপাতালে। — নিজস্ব চিত্র।
আলিপুরের বেসরকারি হাসপাতালে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে দেখতে গেলেন বিজেপি নেতা তথা মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য।
রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টচার্যের ফুসফুসের সংক্রমণ এবং শ্বাসকষ্টের সমস্যা রয়েছে। তাঁকে নন-ইনভেসিভ ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছে। তাঁর যাবতীয় পরীক্ষা হয়েছে। সেই রিপোর্ট আসার অপেক্ষা করা হচ্ছে। বুদ্ধদেবের শারীরিক অবস্থা নিয়ে বিবৃতি জারি করে জানিয়েছে আলিপুরের বেসরকারি হাসপাতালটি।
বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের মেডিক্যাল রিপোর্ট। — নিজস্ব চিত্র।
বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের চিকিৎসার জন্য তৈরি মেডিক্যাল বোর্ডে রয়েছেন, কৌশিক চক্রবর্তী, ধ্রুব ভট্টাচার্য, সৌতিক পণ্ডা, সুস্মিতা দেবনাথ, আশিস পাত্র, অঙ্কন বন্দ্যোপাধ্যায়, সপ্তর্ষি বসু এবং সরোজ মণ্ডল।
চিকিৎসক সপ্তর্ষি বসু এবং কৌশিক চক্রবর্তীর তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা চলছে রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর। এ ছাড়াও মেডিক্যাল বোর্ডে রয়েছেন আরও কয়েক জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। জানা গিয়েছে, যে ক্রিটিক্যাল কেয়ার অ্যাম্বুল্যান্সে করে বুদ্ধদেবকে হাসপাতালে আনা হয়, তাতে উপস্থিত ছিলেন সপ্তর্ষি।
কেমন আছেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য? কী সমস্যা হয়েছিল তাঁর? এখনও পর্যন্ত এ ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক ভাবে কিছুই জানায়নি আলিপুরের বেসরকারি হাসপাতাল। তবে হাসপাতাল সূত্রের খবর, আর কিছু ক্ষণের মধ্যেই প্রকাশ করা হবে পূর্ণাঙ্গ মেডিক্যাল বুলেটিন। সেখানে বুদ্ধদেবের শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে বিশদ ধারণা পাওয়া যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।
চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। অক্সিজেনের মাত্রা কিছুটা স্বাভাবিকের পথে। পরিস্থিতি এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে, জানিয়েছেন সিপিএম নেতা রবীন দেব।
দক্ষ চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে রয়েছেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। আশা করছি দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবেন তিনি। বুদ্ধদেবকে দেখতে আলিপুরের বেসরকারি হাসপাতালে গিয়ে এমনই জানিয়েছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস।
আলিপুরের বেসরকারি হাসপাতালের ৫১৬ নম্বর কেবিনে আইসিইউ-তে ভর্তি রয়েছেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য।
বুদ্ধদেবের রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা বৃদ্ধি করতে ইতিমধ্যেই সি-প্যাপ সাপোর্ট দেওয়া হয়েছে বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে। মেডিক্যাল টিমে রয়েছেন, পালমোনোলজিস্ট, ক্রিটিক্যাল কেয়ার বিশেষজ্ঞ। এ ছাড়াও রয়েছেন, মেডিসিনের চিকিৎসকেরা।
বুদ্ধদেব গুরুতর অসুস্থ জানার পরেই আলিমুদ্দিনে সাংবাদিক বৈঠকে থাকা সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেন, ‘‘আমরা অসুস্থতার কথা জানি। তিনি দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ। আজ (শনিবার) সকাল থেকেই তাঁর শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হয়। আমরা খুব বেশি উতলা হচ্ছি না, আবার ঝুঁকি নিতেও চাইনি।’’
বুদ্ধদেবের চিকিৎসা বরাবরই করেন চিকিৎসক কৌশিক চক্রবর্তী। তিনিও রয়েছেন বেসরকারি হাসপাতাল গঠিত মেডিক্যাল বোর্ডে। প্রাথমিক ভাবে তাঁর রক্তচাপ স্বাভাবিক বলেই হাসপাতালের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে। রক্তে অক্সিজেনের মাত্রাও সামান্য বেড়েছে বলে জানা গিয়েছে।
বুদ্ধদেবকে দেখতে আলিপুরের বেসরকারি হাসপাতালের আসতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর আগেও অসুস্থ বুদ্ধদেবকে দেখতে তাঁর পাম অ্যাভিনিউয়ের বাড়িতে গিয়েছিলেন মমতা।
বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে দেখতে আলিপুরের বেসরকারি হাসপাতালে যাচ্ছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। শনিবারই তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
সূত্রের খবর, শনিবার সংস্কৃত কলেজে একটি অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন রাজ্যপাল। সেখানেই তিনি বুদ্ধদেবের অসুস্থতার খবর পান। তার পরেই সিদ্ধান্ত নেন, তিনি আলিপুরের হাসপাতালে যাবেন।
শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ার পর পাম অ্যাভিনিউয়ের বাড়িতেই বুদ্ধদেবকে অক্সিজেন দেওয়া হয়। কিন্তু সূত্রের খবর, তিনি অক্সিজেন নিতে পারলেও ‘রেসপন্ড’ করছিলেন না। তার পরেই হাসপাতালে নেওয়ার সিদ্ধান্ত।
কয়েক দিন ধরেই জ্বর ছিল বুদ্ধদেবের। শনিবার সকাল থেকে রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা ৭০-এর নীচে নেমে যায়, সঙ্গে শ্বাসকষ্ট। তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়। কিন্তু রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব নিজে হাসপাতালে ভর্তি হতে চাননি। এর আগেও হাসপাতালে ভর্তি হওয়া নিয়ে নিজের আপত্তি তিনি পরিবারের লোকেদের কাছে জানিয়েছিলেন। তবে এ যাত্রায় বুদ্ধদেবের কথা মানেননি চিকিৎসকেরা। তাঁকে আলিপুরের বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর চিকিৎসার জন্য আলিপুরের বেসরকারি হাসপাতালে তৈরি করা হয়েছে মেডিক্যাল বোর্ড। সেই বোর্ডের চিকিৎসকরাই আপাতত বুদ্ধদেবের চিকিৎসা করবেন।