প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। — ফাইল ছবি।
এখনও ভেন্টিলেশনেই রয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। তবে আপাতত তাঁর অবস্থা স্থিতিশীল বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে। শনিবার রাতে ভেন্টিলেশনে দেওয়ার পর থেকে তাঁর অবস্থার নতুন করে কোনও অবনতি হয়নি। রবিবার দুপুরে তাঁর ‘সিটি স্ক্যান’ করানোর পরিকল্পনা রয়েছে মেডিক্যাল বোর্ডের। তার পরেই বোঝা যাবে, ঠিক কত দিন ভেন্টিলেশনে রাখতে হতে পারে বুদ্ধদেবকে।
রবিবার সকালে বুদ্ধদেবের চিকিৎসার জন্য তৈরি করা মেডিক্যাল বোর্ড পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে তা ঠিক করতে বৈঠকে বসবে। সেখানেই ওঁর চিকিৎসার ভবিষ্যৎ দিশানির্দেশ স্থির করা হবে বলে জানা যাচ্ছে। দুপুর নাগাদ তাঁর সিটি স্ক্যান করানো হতে পারে। চিকিৎসক মহল জানাচ্ছে, সংক্রমণের জেরে ফুসফুসের কতটা ক্ষতি হয়েছে, বুকের সিটি স্ক্যান করে তা বোঝার চেষ্টা করা হবে। ওঁর সিওপিডি কী অবস্থায় আছে তা-ও সিটি স্ক্যান থেকে জানা যাবে। এ ছাড়াও নিউমোনিয়া কতটা গুরুতর অবস্থায় সেটাও জানতে ভরসা সিটি স্ক্যান। ফলে সিটি স্ক্যানের রিপোর্ট দেখে চিকিৎসকরা প্রাথমিক ভাবে বুঝতে পারবেন বুদ্ধদেবকে কত দিন ভেন্টিলেশনে রাখতে হতে পারে। তবে এখন বুদ্ধদেব স্থিতিশীল রয়েছেন। রাতে নতুন করে কোনও সমস্যা হয়নি। রক্তচাপ, হৃদ্স্পন্দনের গতি, প্রস্রাবের পরিমাণ এবং রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে।
সিপিএম সূত্রে খবর, দুপুরের পর বুদ্ধদেবের ‘সিটি থোরাক্স’ নামে একটি পরীক্ষা করানো হবে। মূলত ফুসফুসের অবস্থা বোঝার জন্য এই পরীক্ষাটি করা হয়। সকাল সাড়ে দশটায় সিপিএম নেতৃত্বকে এ কথা জানিয়েছেন মেডিক্যাল বোর্ডের অন্যতম চিকিৎসক সপ্তর্ষি বসু।
শনিবার বিকেলে গুরুতর শ্বাসকষ্ট এবং রক্তে অক্সিজেনের পরিমাণ কমে যাওয়ার উপসর্গ নিয়ে আলিপুরের বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন বুদ্ধদেব। তাঁকে আইসিইউতে রেখে চিকিৎসা শুরু হয়। প্রাথমিক ভাবে বুদ্ধদেবকে ‘নন-ইনভেসিভ ভেন্টিলেশন’-এ দেওয়া হয়। রাতে আশানুরূপ উন্নতি না হওয়ায় তাঁকে ‘ইনভেসিভ ভেন্টিলেশন’-এ দেওয়া হয়। চিকিৎসকেরা জানিয়েছিলেন, রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর দু’টি ফুসফুসেই ভাল রকম সংক্রমণ ছড়িয়েছে। এ ছাড়া তিনি ‘বাইল্যাটারাল নিউমোনিয়া’-তে আক্রান্ত। শরীরে ‘ড্রাগ রেজিস্ট্যান্ট ব্যাকটেরিয়া’-র উপস্থিতি পাওয়া গিয়েছে। তা থেকেই নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন বুদ্ধদেব। তবে শরীরে জ্বর নেই তাঁর। স্যালাইনের মাধ্যমে চলছে উচ্চমাত্রার অ্যান্টিবায়োটিক।