প্রতীকী ছবি।
ইলিয়ট পার্কে সাপ দেখে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন। এর পরেই শহর এবং শহরতলির বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সাপ ধরার জন্য আবেদন আসতে শুরু করেছে বন দফতরে। প্রচুর সংখ্যায় আবেদন আসতে থাকায় কার্যত হিমশিম খেতে হচ্ছে বন দফতরের কর্মীদের। এই অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে শহরের বিভিন্ন জায়গায় সাপ নিয়ে সচেতনতা শিবির করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বন দফতর।
রাজ্য বন দফতরের এক কর্তার কথায়, ‘‘সাপ দেখা গেলে বন দফতরকে জানালে সঙ্গে সঙ্গেই বন দফতর সেখানে গিয়ে ধরে আনে। সারা বছরই সাপ ধরার অভিযান চলে। বর্ষার সময়ে তুলনামূলক ভাবে বেশি ফোন পাওয়া যায়। তবে এ বারে ফোনের সংখ্যা প্রচুর।’’ ওই আধিকারিক জানান, ক’দিন আগে সাপ দেখে মুখ্যমন্ত্রী উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন। শহরের অন্যান্য বাসিন্দাদের অনেকের মধ্যেই সাপ নিয়ে ভীতি রয়েছে। কিছু কিছু সাপ বিষধরও। সেই কারণেই সাপ নিয়ে সচেতনতা বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া নেওয়া হচ্ছে। বিভিন্ন জায়গায় শিবির করে সাপের প্রকৃতি এবং শ্রেণিভাগ নিয়ে পাঠ দেওয়া হচ্ছে। এই শিবিরে বন দফতরের কর্মীরা ছাড়াও সর্প বিশারদেরাও থাকছেন।
রাজ্য বন দফতর ১১ জুলাই থেকে ২৩ জুলাইয়ের মধ্যে কলকাতা শহরে সল্টলেকের সিটি সেন্টার, ইলিয়ট পার্ক, মানিকতলা সরকারি আবাসন, রাজডাঙায় শপিং মলের কাছে শান্তিপল্লি অঞ্চলে সাপ নিয়ে সচেতনতা শিবির করেছে। আরও কয়েকটি জায়গায় এই শিবিরের পরিকল্পনা করা হয়েছে। এর মধ্যে শহরের বাইরেও গ্রাম ও মফঃস্বল শহরের মধ্যে উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট এবং হুগলির নালিকুলের মতো জায়গা রয়েছে।
সাপ এবং সরীসৃপ বিশেষজ্ঞ অনির্বাণ চৌধুরী বলেন, ‘‘ শহর এবং শহরতলিতে সাধারণ ভাবে বিষধর এবং নির্বিষ— দু’ধরনেরই সাপ দেখা যায়। কিন্তু সাপ সম্বন্ধে প্রাথমিক জ্ঞান না থাকার ফলেই নাগরিকেরা ভয় পান। সেই কারণেই ভীতি দূর করতে সচেতনতা গড়ে তোলা প্রয়োজন। বন দফতরের উদ্যোগ প্রশংসনীয়। শুধু তাই নয়, খবর পেলে তাঁরা সঙ্গে সঙ্গেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে সাপ ধরেন।’’
শহরে কী ধরনের সাপ দেখা যায়?
অনির্বাণবাবু জানান, খোদ কলকাতা শহরে নির্বিষ সাপেদের মধ্যে রয়েছে জলঢোঁড়া, হেলা এবং ঘরচিতি। বিষধরের মধ্যে রয়েছে চন্দ্রবোড়া এবং কেউটে। কিন্তু বিষধর সাপগুলিকে বেশির ভাগই পাওয়া গিয়েছে শহর থেকে একটু দূরে শহরতলি অঞ্চলে। তবে সাপ একেবারে নির্মূল করা উচিত নয়। সে ক্ষেত্রে বাস্ততন্ত্রের ক্ষতি হবে বলেও তিনি জানান।