শিবা ভগত। নিজস্ব চিত্র
খাবার পৌঁছে দিতে গিয়ে একটি অনলাইন খাবার সরবরাহকারী সংস্থার কর্মীকে বেধড়ক মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠল। শনিবার রাতে, মধ্যমগ্রামের বসুনগর এলাকার ঘটনা। শিবা ভগত নামে নিগৃহীত ওই যুবক গুরুতর জখম অবস্থায় বারাসত জেলা হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। তিনি এ বিষয়ে মধ্যমগ্রাম থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।
তবে রবিবার রাত পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি। মধ্যমগ্রামের মিলনপল্লির বাসিন্দা শিবা জানান, ঘটনার দিন রাতে মধ্যমগ্রাম চৌমাথার একটি রেস্তরাঁ থেকে বসুনগর ৩ নম্বর গেট এলাকার একটি বাড়িতে খাবার পৌঁছে দেওয়ার ভার পড়েছিল তাঁর উপরে। খাবার নিয়ে তিনি ওই এলাকায় পৌঁছে যান। কিন্তু তার পরে গ্রাহকের বাড়ি ঠিক কোনটি, সে বিষয়ে নির্দিষ্ট জানা না জানায় শিবা ফোন করে ওই গ্রাহককে এসে খাবার নিয়ে যেতে অনুরোধ করেন। এই নিয়ে ফোনেই দু’পক্ষের বচসা বাধে।
পুলিশের কাছে অভিযোগে শিবা জানিয়েছেন, এর পরে এক তরুণীকে সঙ্গে নিয়ে দু’জন যুবক খাবার নিতে আসেন। তাঁদের মধ্যে এক জন শিবাকে বলেন, ওই খাবারের অর্ডার বাতিল করে দিতে। কিন্তু শিবা তাঁদের জানান, তিনি অর্ডার বাতিল করলে আগামী তিন দিন তাঁকে কোনও খাবার সরবরাহের কাজ করতে দেওয়া হবে না। তাই ওই গ্রাহককেই সেই অর্ডার বাতিল করে দেওয়ার অনুরোধ করেন তিনি। শিবার অভিযোগ, মত্ত অবস্থায় থাকা ওই যুবক এর পরে একটি খাবারের প্যাকেট তাঁদের দিয়ে অন্যটি শিবাকে নিয়ে চলে যাওয়ার কথা বলেন। কিন্তু
তাতেও আপত্তি জানান শিবা। কারণ, এমন কাজ করলে তিনি কর্মচ্যুত হতে পারেন বলেও ওই যুবককে জানান শিবা।
অভিযোগ, এর পরেই শিবার হাত থেকে খাবারের প্যাকেট কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন অভিযুক্ত। এমন সময়ে অপর যুবক শিবার চোখে ঘুষি মারেন বলেও অভিযোগ। শিবা তাঁকে পাল্টা ধাক্কা দিলে অভিযুক্তেরা তাঁকে মারধর করতে শুরু করেন। এর মধ্যে বাইকে করে ঘটনাস্থলে চলে আসেন আরও দুই যুবক। সকলে মিলে শিবাকে বেধড়ক মারধর করেন বলে অভিযোগ। মারের চোটে শিবা মাটিতে লুটিয়ে পড়লে সেখান থেকে চলে যান অভিযুক্তেরা।
এর পরে শিবাকে জখম অবস্থায় রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখে তাঁর সংস্থার এক কর্মী অন্যদের খবর দেন এবং মধ্যমগ্রাম গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করান। এর পরেই পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। পরে শিবার মা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
শিবার আঘাত গুরুতর হওয়ায় পরে তাঁকে বারাসত হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। তাঁর মুখে ও চোখে গুরুতর আঘাত রয়েছে। যে ফোন নম্বর থেকে সে দিন ওই খাবারের অর্ডারটি দেওয়া হয়েছিল, সেই নম্বরে ফোন করে অভিযুক্ত গ্রাহকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও দেখা গিয়েছে যে, ফোনটি বন্ধ রয়েছে। বারাসত পুলিশ জেলার সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, “এই ঘটনায় একটা অভিযোগ দায়ের হয়েছে। পুলিশ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করবে।”