১৪তম মরণোত্তর অঙ্গদানে একসঙ্গে নতুন জীবন পেলেন পাঁচ জন। প্রতীকী ছবি।
গোটা বছরে মাত্র ১৪টি। সংখ্যাটা খুবই কম। কিন্তু বছর শুরুর দু’দিন আগে, ১৪তম মরণোত্তর অঙ্গদানে একসঙ্গে নতুন জীবন পাচ্ছেন পাঁচ জন। পূর্বাঞ্চলে এমন ঘটনা সচরাচর ঘটে না বলেই জানাচ্ছেন অঙ্গদান আন্দোলনে যুক্ত ব্যক্তিরা। শুক্রবার যার সাক্ষী থাকল কলকাতা। এক নাট্যকর্মীর ব্রেন ডেথের পরে তাঁর দু’টি কিডনি, যকৃৎ, ফুসফুস, হৃৎপিণ্ড দান করা হল।
গত বুধবার বর্ধমানের হিরণ্ময় ঘোষাল (৫৪) ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত হন। আচমকাই মাথার যন্ত্রণা ও খিঁচুনি শুরু হয়। প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে ও পরে কলকাতায় এনে মেডিকার স্নায়ুরোগ চিকিৎসক সুনন্দন বসুর অধীনে ভর্তি করা হয় তাঁকে। হিরণ্ময়ের ভাই বিপ্লব ঘোষাল বলেন, “দাদার মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বেঁধে ছিল। বুধবার রাত থেকেই বোঝা যাচ্ছিল ব্রেন ডেথ হচ্ছে। বৃহস্পতিবার রাতে তা নিশ্চিত করেন চিকিৎসকেরা।”
হাসপাতালের ডেপুটি মেডিক্যাল ডিরেক্টর অমিত রায় জানান, ব্রেন ডেথের পরে হিরণ্ময়ের পরিবার অঙ্গদানের ইচ্ছা প্রকাশ করে। ‘রিজিয়োনাল অর্গ্যান অ্যান্ড টিসু ট্রান্সপ্লান্ট অর্গানাইজ়েশন’ (রোটো)-এর সঙ্গে যোগাযোগ করায় তারা পাঁচ গ্রহীতাকে খুঁজে বার করে। রোটো-র যুগ্ম অধিকর্তা, চিকিৎসক অর্পিতা রায়চৌধুরী বলেন, “পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ একসঙ্গে দানের ঘটনা বিরল।”
শুক্রবার শুরু হয় অঙ্গ তোলার কাজ। ওই হাসপাতালেরই এক প্রৌঢ় পান হৃৎপিণ্ড। একটি কিডনি পেয়েছেন পিজির এক যুবতী। ওই হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন এক দন্ত চিকিৎসকের শরীরে যকৃৎ প্রতিস্থাপন হয়েছে। আর একটি কিডনি প্রতিস্থাপিত হয়েছে চার্নক হাসপাতালের এক প্রৌঢ়ার শরীরে। ফুসফুস পেয়েছেন চেন্নাইয়ের এমজিএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এক মহিলা। হিরণ্ময়ের কর্নিয়াও সংগ্রহ করা হয়েছে। অঙ্গ নিয়ে যেতে বিধাননগর ও কলকাতা পুলিশ গ্রিন করিডর করেছিল। অঙ্গ প্রতিস্থাপনের পরে সব গ্রহীতাই স্থিতিশীল রয়েছেন।