—প্রতীকী চিত্র।
এক ব্যবসায়ীকে অপহরণ এবং তাঁর গাড়িচালককে খুনের ঘটনায় পাঁচ অভিযুক্তকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ দিলেন আলিপুর আদালতের বিচারক। মঙ্গলবার এই সাজা শোনান অতিরিক্ত দায়রা বিচারক মীর রশিদ আলি। সাজাপ্রাপ্তদের নাম দিলীপ শর্মা, রাজকুমার পাণ্ডে ওরফে পিঙ্কু, কামেশ্বর পাণ্ডে ওরফে প্রজাপতি, রাকেশকুমার পাণ্ডে এবং শুকদেব পাণ্ডে। তবে আর এক অভিযুক্ত সোনু পাণ্ডে এখনও পলাতক বলে জানিয়েছে পুলিশ।
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনাটি ঘটেছিল ২০১৩ সালের মার্চ মাসে। কসবার বাসিন্দা অঙ্কুর সাউ নামে ওই ব্যবসায়ীর সঙ্গে কাজের সূত্রে বন্ধুত্ব তৈরি হয়েছিল রাজকুমারের। ২০১৩-র ১১ মার্চ ছিল রাজকুমারের জন্মদিন। সেই উপলক্ষে সে অঙ্কুরকে জানায়, তাঁকে সে দিন হাওড়ার সলপে নিয়ে যাবে। সেই মতো দু’জনে দু’টি গাড়িতে কলকাতা থেকে হাওড়ার দিকে রওনা দেন। হাওড়ার কাছাকাছি আসতেই অঙ্কুরের গাড়িতে তিন জন উঠে পড়ে। অন্য দিকে, রাজকুমারের গাড়িতে ওঠে আরও দু’জন। এর পরে পাঁচ জন মিলে অঙ্কুরের গাড়িচালক জিতেন্দ্র সাউকে বাধ্য করে ঝাড়খণ্ডে গাড়ি নিয়ে যেতে। ১২ তারিখ সকালে রাজকুমারেরা পৌঁছয় গিরিডিতে। সেখানকার এক জঙ্গলে গোপন আস্তানায় নিয়ে গিয়ে অঙ্কুর ও জিতেন্দ্রকে আটকে রাখে তারা। ওই দিন রাতেই জিতেন্দ্রকে খুন করে তাঁর দেহ জঙ্গলে ফেলে দেয় অভিযুক্তেরা।
সরকারি আইনজীবী শিবনাথ অধিকারী ও স্বপন পাঠক জানিয়েছেন, জিতেন্দ্রকে খুন করার পরে অঙ্কুরকে দিয়ে বাড়িতে ফোন করায় অপহরণকারীরা। জানায়, ছ’কোটি টাকা মুক্তিপণ না পেলে তাঁরও জিতেন্দ্রর মতো পরিণতি হবে। এর পরেই ১৩ মার্চ কসবা থানায় অপহরণের অভিযোগ দায়ের করে অঙ্কুরের পরিবার। কসবা থানার পাশাপাশি ঘটনার তদন্তভার নেয় লালবাজারের গুন্ডা দমন শাখা। ঝাড়খণ্ড পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে গিরিডির ওই জঙ্গলে গিয়ে পৌঁছয় তদন্তকারীদের একটি দল। ১৬ মার্চ ভোরে জঙ্গল ঘিরে ফেলে পুলিশ। প্রথমে জিতেন্দ্রর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। এর পরে জঙ্গলের গোপন ডেরা থেকে উদ্ধার করা হয় অঙ্কুরকে।