বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঘটনাটি ঘটেছে সুন্দরবনের পিরখালির জঙ্গলে। —প্রতীকী চিত্র।
সুন্দরবনের নদী-খাঁড়িতে মাছ-কাঁকড়া ধরতে গিয়ে ফের বাঘের আক্রমণে মৃত্যু হল এক মৎস্যজীবীর। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঘটনাটি ঘটেছে সুন্দরবনের পিরখালির জঙ্গলে। এ দিকে, মৈপীঠের নগেনাবাদে লোকালয়ের কাছে চলে আসা বাঘটির গতিবিধি শুক্রবারও স্পষ্ট হয়নি। বাঘ গ্রাম লাগোয়া জঙ্গলে আছে বলে দাবি গ্রামবাসীদের একাংশের। আতঙ্ক রয়েছে এলাকায়।
কুলতলির কাঁটামারির বাসিন্দা অজয় সর্দার (৫১) সপ্তাহখানেক আগে মাছ-কাঁকড়া ধরতে জঙ্গলে গিয়েছিলেন। সঙ্গে ছিলেন প্রতিবেশী কালাচাঁদ সর্দার ও কার্তিক সর্দার। স্থানীয় সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার পিরখালির জঙ্গলে কাঁকড়া ধরার পরে খাঁড়ি থেকে নৌকো নিয়ে বেরোচ্ছিলেন তাঁরা। পিছনে বসেছিলেন অজয়। বাঘ তাঁর উপরে চড়াও হয় বলে অভিযোগ। ঘাড়ে কামড় বসিয়ে তাঁকে জঙ্গলে টেনে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে।
কার্তিক ও কালাচাঁদ লাঠি হাতে রুখে দাঁড়ান। শেষ পর্যন্ত ‘শিকার’ ছেড়ে জঙ্গলে ফিরে যায় বাঘ। জখম অজয়কে নৌকোয় তুলে ফেরার পথ ধরেন সঙ্গীরা। তবে তাঁকে বাঁচানো যায়নি। শুক্রবার ভোরে কাঁটামারি পৌঁছে স্থানীয় গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে জানিয়ে দেন।
স্ত্রী ও পাঁচ ছেলেমেয়ে নিয়ে সংসার অজয়ের। পরিবার সূত্রের খবর, অজয়ই ছিলেন মূল রোজগেরে। মৎস্যজীবীর মৃত্যুতে ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়েছে মানবাধিকার সংগঠন এপিডিআর। বার বার বাঘ ঢোকার ঘটনায় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে।
অন্য দিকে, বৃহস্পতিবারই মৈপীঠের নগেনাবাদে বাঘের পায়ের ছাপ দেখতে পান এলাকার লোকজন। খবর পেয়ে বনকর্মীরা এসে এলাকা ঘিরে ফেলেন। তবে এ দিন নতুন করে বাঘের গতিবিধি বোঝা যায়নি। গ্রামের মানুষের অনেকের দাবি, গ্রাম লাগোয়া জঙ্গলেই রয়েছে বাঘটি। ফলে গ্রাম জুড়ে আতঙ্ক ছিল এ দিনও। বন দফতর জানিয়েছে, নজরদারি চলছে। বাঘের গতিবিধি বোঝার চেষ্টা করা হচ্ছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।