KMC

কর আদায় বেড়েছে, তবু ঘাটতি পুর বাজেট পেশের আশঙ্কা এ বারও

পুরসভার অর্থ দফতরের আধিকারিকেরা মনে করছেন, ঘাটতি বাজেটের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার মূল কারণ পুরসভার আয় কমে যাওয়া। সেই তুলনায় ব্যয় বেশি হওয়ায় এই সমস্যা হচ্ছে।

Advertisement
শেষ আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৭:৪২
Share:

আগামী অর্থবর্ষের জন্য বাজেটে ঘাটতির পরিমাণ আরও বাড়বে বলেই পুরসভা সূত্রের খবর। প্রতীকী ছবি।

আগামী মাসে ২০২৩-’২৪ অর্থবর্ষের পুর বাজেট পেশ করবেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। গত বছরের ২ মার্চ ২০২২-’২৩ অর্থবর্ষের জন্য ১৭৭ কোটি টাকার ঘাটতি বাজেট পেশ করেছিলেন তিনি। ২০২১-’২২ অর্থবর্ষে ঘাটতি বাজেটের পরিমাণ ছিল ১৬১ কোটি টাকা। পুরসভার কোষাগারের অবস্থা সঙ্গিন। আয়ের তুলনায় ব্যয় বেশি হওয়ায় আগামী অর্থবর্ষের জন্য বাজেটে ঘাটতির পরিমাণ আরও বাড়বে বলেই পুরসভা সূত্রের খবর।

Advertisement

পুরসভার অর্থ দফতরের আধিকারিকেরা মনে করছেন, ঘাটতি বাজেটের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার মূল কারণ পুরসভার আয় কমে যাওয়া। সেই তুলনায় ব্যয় বেশি হওয়ায় এই সমস্যা হচ্ছে। গত কয়েক বছরের তুলনায় চলতি আর্থিক বছরে এখনও পর্যন্ত বিভিন্ন বিভাগে কর আদায় বেড়েছে কলকাতা পুরসভার। কিন্তু পুরসভা তাতেও স্বস্তিতে নেই। কারণ, ঋণের বোঝা এতটাই বেড়ে গিয়েছে যে, বকেয়া টাকা পরিশোধ করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে কর্তৃপক্ষকে। সূত্রের খবর, ঠিকাদারদের পাওনা রয়েছে এক হাজার কোটি টাকার বেশি। বকেয়া টাকা পেতে নিত্যদিন তাঁরা পুরসভায় আসছেন। এখন ২০২১ সালের এপ্রিল মাসের বকেয়া মেটানো হচ্ছে বলে পুরসভা সূত্রের খবর। ঠিকাদারেরা ছাড়াও গত বছরের এপ্রিলের পরে অবসর নেওয়া পুরকর্মীরা গ্র্যাচুইটিও কমিউটেশন (পেনশনের একাংশের বদলে এককালীন টাকা) বাবদ টাকা এখনও পাননি। সব মিলিয়ে দেনার পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় আগামী দিনে পুরকর্মীদের বেতন কী ভাবে দেওয়া হবে, তা নিয়েও মাথাব্যথা রয়েছে পুর কর্তৃপক্ষের। পুরসভার অর্থ দফতর সূত্রের খবর, এখন কোনও দফতর পঞ্চাশ হাজার টাকার বেশি বিল পাঠালে তাতে অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে না। মূলত আর্থিক পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখেই বেশি টাকার বিলে ‘কোপ’ পড়ছে।

২০২০-’২১ আর্থিক বছরে পুরসভার সম্পত্তিকর বাবদ আদায় হয়েছিল ১১৭০ কোটি টাকা। ২০২১-’২২ অর্থবর্ষে সম্পত্তিকর বাবদ আয় কমে দাঁড়িয়েছিল ১০০২ কোটি টাকায়। ২০২২-’২৩ সালে এখনও পর্যন্ত সম্পত্তিকর আদায়ের পরিমাণ প্রায় ১০৬০ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে এখনও পর্যন্ত সম্পত্তিকর ছাড়াও অন্যান্য বিভাগে কর আদায় ১৬০০ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। পুরসভার আধিকারিকেরা মনে করছেন, সম্পত্তিকর ছাড়াও অন্যান্য বিভাগে রাজস্ব আদায় না বাড়ালে পুরসভার ঋণের বোঝা দিনে দিনে বাড়বে। বাম কাউন্সিলর তথা অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যান মধুছন্দা দেবের অভিযোগ, ‘‘পুরসভার আয়ের তুলনায় ব্যয় লাগামছাড়া বাড়ছে। আয়ের পথ থাকলেও সেগুলি যথাযথ ভাবে কাজে লাগানো হচ্ছে না। এমন অবস্থা চলতে থাকলে আগামী দিনে ঘোর বিপদ!’’ পুরসভার অর্থ দফতরের এক শীর্ষ কর্তার কথায়, ‘‘গত আট বছরের নিরিখে চলতি বছরে রেকর্ড কর আদায় হয়েছে পুরসভার। কোভিডের জন্য গত দু’বছরে রাজস্ব আদায় কমেছিল। পুরসভার বিভিন্ন বিভাগে যে ভাবে রাজস্ব আদায় বেড়েছে, তাতে আগামী অর্থবছরে রাজস্ব বাড়ার পথ খোলা থাকছে। দুশ্চিন্তার কোনও কারণ নেই।’’

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement