গুরু পরব: শিখদের অনুষ্ঠানে ফিরহাদ হাকিম। শুক্রবার ধর্মতলায়। ছবি: শৌভিক দে।
মেয়র হিসেবে শোভন চট্টোপাধ্যায়ের একটা ডাক নাম ছিল— জল শোভন। মেয়র পারিষদ থাকাকালীন তাঁর হাতে জল সরবরাহ দফতর ছিল। তাঁর অতি বড় সমালোচকও স্বীকার করতেন, শহরের জল বিষয়ক যে কোনও সমস্যার সবচেয়ে তরল সমাধান ছিল শোভনের নখের ডগায়।
সেই জল-ই কলকাতার ভাবী মেয়র ফিরহাদ হাকিমের অগ্রাধিকারের তালিকায়। দু’প্রকার জল। পানীয় এবং নিকাশির। ভাবী মেয়র এই দুই জল নিয়েই ভাবছেন। শোভন চট্টোপাধ্যায় মেয়র পদে ইস্তফা দেওয়ার পরে বৃহস্পতিবারই কলকাতার মেয়র পদের প্রার্থী হিসেবে ফিরহাদের নাম ঘোষিত হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী নিজেও সেই অনুষ্ঠানে জানান, কাজের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতেই ফিরহাদকে ওই দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে।
ফিরহাদ মেয়র হচ্ছেন, তা বৃহস্পতিবার রাতে জানার পর শুক্রবার সকাল থেকে তাঁর চেতলার বাড়িতে শুভেচ্ছা জানানোর ঢল নামে। ফুলের তোড়া নিয়ে শুভার্থীদের লাইন পড়ে যায়। সকাল ন’টা থেকে প্রায় চার ঘণ্টা কলকাতা পুরসভার কাউন্সিলর, মেয়র পারিষদ, বরো চেয়ারম্যান, পুর অফিসার, রাজনৈতিক নেতা, ব্যবসায়ী, শিল্পপতি থেকে সাধারণ মানুষ ভিড় করেন তাঁর বাড়িতে। দুপুরে গিয়ে দেখা গেল, তাঁর ঘরে ঢোকার পথ ফুলের তোড়ায় তোড়ায় ভরা। দুপুরে কিছু ক্ষণের জন্য শহিদ মিনারের কাছে গুরু নানকের জন্মদিনের এক অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন তিনি। শিখ ধর্মের রীতি মেনে অগ্রজ মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে হাতে কৃপাণও তুলে নেন।
আরও পড়ুন: হাতে স্টিয়ারিং, চোখ মোবাইলের ডান্স আইটেমে, এ ভাবেই বাস চালিয়ে গেলেন ড্রাইভার!
এ সবের ফাঁকেই তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয়, কলকাতা শহর নিয়ে। যাদবপুর, টালিগঞ্জ এলাকায় পানীয় জলের সমস্যার দ্রুত সমাধান করার উপর জোর দেওয়া হবে জানান তিনি। ইতিমধ্যেই ওই এলাকার জলের সমস্যা সমাধানে পুরসভাকে তৎপর হতে বলেছেন মুখ্যমন্ত্রীও। পাশাপাশি কেইআইআইপি-র কাজ নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করেন ফিরহাদ। বলেন, ‘‘কেইআইআইপি কাজ করা সত্ত্বেও নিকাশির জলের সমস্যা থেকেই গিয়েছে। কেন, তা দেখতে হবে।’’ কলকাতাকে গ্রিন সিটি, ক্লিন সিটি বানানোর লক্ষ্যে ইতিমধ্যেই কাজ শুরু করেছেন পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী হিসেবে। এ বার মেয়র হয়ে কী করবেন? বললেন, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকার নানা ভাবে বঞ্চনা করছে, প্রকল্প রিপোর্ট জমা দিলেও টাকা বরাদ্দ করতে ঢিলেমি করছে। তা সত্ত্বেও কলকাতাকে দেশের সেরা শহর করার কাজ আমরা চালিয়ে যাব।’’ তিনি জানান, রাজ্য সরকার এর জন্য প্রস্তুত আছে। বলেন, ‘‘কলকাতা শহরের অনেক উন্নতি হয়েছে, হচ্ছে। তার ধারা অব্যাহত রাখতে হবে।’’
আরও পড়ুন: ঠিক যেন ২০১৯-এর মাধ্যমিকের প্রশ্নপত্র! সাজেশনের বিজ্ঞাপনী ভাষা নিয়ে ঘোর বিতর্ক