মেয়র পদে শপথ নেওয়ার পর মেয়র পারিষদদের দায়িত্ব বন্টন করলেন ফিরহাদ হাকিম। নিজস্ব চিত্র
দ্বিতীয় বার মেয়র পথে শপথ নিয়েই মেয়র পারিষদদের দফতর বণ্টনে অভিজ্ঞতাকেই বেশি গুরুত্ব দিলেন ফিরহাদ হাকিম। মঙ্গলবার দুপুরে মেয়র পদে শপথ নেওয়ার পরেই দফতর বণ্টনের বৈঠকে বসেন তিনি। পরে বিজ্ঞপ্তি জারি করে মেয়র পারিষদদের দায়িত্বের কথা প্রশাসনিকভাবে ঘোষণা করে দেওয়া হয়েছে। মেয়র নিজের হাতে রেখেছেন জল বণ্টন, কর ও রাজস্ব, অভিযোগ, সাংস্কৃতিক বিভাগ, লাইসেন্স, কেইআইআইপি, বিল্ডিং, সেন্ট্রাল স্টোর, সম্পত্তিকর মূল্যায়ন ও আদায়, টাউন প্লানিং বিভাগ-সহ যে সমস্ত দফতরের দায়িত্ব বন্টন করা হয়নি সেগুলোও। তবে বেশকিছু দফতর মেয়র পারিষদদের কাছ থেকে নিজের হাতে নিয়ে নিয়েছেন মেয়র।
গত পুরবোর্ডের মতো এ বারও ডেপুটি মেয়র হয়েছেন অতীন ঘোষ। তাঁর হাতে রয়েছে স্বাস্থ্য-সহ পতঙ্গবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণ, জীবানুনাশক ব্যবহার, আর্কাইভ, সেন্ট্রাল মেডিক্যাল স্টোর, ভেজাল রোধ ও পুরসভার টিবি হাসপাতাল। দেবব্রত মজুমদারের হাতে জঞ্জাল সাফাই ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা। দেবাশিস কুমারের হাতে উদ্যান, খেলা, পার্কিং, বিজ্ঞাপন, হকার পুর্নবাসন স্কিম। তারক সিংহের হাতে নিকাশি বিভাগ। স্বপন সমাদ্দারের হাতে বস্তি উন্নয়ন, পরিবেশ ও হেরিটেজ। আমিরুদ্দিন ববি আগের মতোই রয়েছেন বাজার বিভাগের দায়িত্বে। রাম প্যারে রামের হাতে ১০০ দিনের কাজের দফতর।গত পুরবোর্ডেও এই সব কাউন্সিলরেরা মেয়র পারিষদ দফতরের দায়িত্বে ছিলেন। তবে ১৩০ নম্বর ওয়ার্ড থেকে জিতে আসা বিদায়ী পুরবোর্ডের মেয়র পারিষদ অভিজিৎকে শিক্ষা বিভাগ থেকে সরিয়ে পাঠানো হয়েছে রাস্তা ও ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে।বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায়ের হাতে আবাসন, আইন, পিপিপি ও কর্মিবর্গ বিভাগ গিয়েছে।
মিতালী বন্দ্যোপাধ্যায় দায়িত্ব পেয়েছেন সামাজির সুরক্ষা বিভাগের। ২০১০ সালে শোভন চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে মেয়র পারিষদ ছিলেন মিতালী। তাঁকে আবারও ফিরিয়ে আনা হয়েছে। তাঁর দফতর মারফৎ, রাজ্য সরকারের বিভিন্ন সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পকে কলকাতা শহরে ছড়িয়ে দিতে চাইছে পুরসভা। তাই মিতালীর পূর্ব অভিজ্ঞতাকেই গুরুত্ব দিয়েছেন মেয়র ফিরহাদ। ৯৯ নম্বর ওয়ার্ড থেকে জিতে আসা মিতালীকে দিয়ে কন্যাশ্রী, স্বাস্থ্যসাথী, রূপশ্রী, খাদ্যশ্রী-সহ সামাজিক প্রকল্পগুলিকে কার্যকর করা হবে।
অতীনের হাতে থাকা সম্পত্তি কর আদায় বিভাগ নিজের হাতে নিলেন ফিরহাদ। তাঁর হাতে থাকা কর্মিবর্গ দফতর বৈশ্বানরকে দেওয়া হয়েছে। সেন্ট্রাল স্টোরের দায়িত্ব আগে ছিলেন তারক। সেই দায়িত্ব নিজের হাতে নিলেন মেয়র। হকার পুর্নবাসন দফতর নতুনভাবে তৈরি করে দেবাশিসের হাতে রাখা হয়েছে। নতুন মেয়র পারিষদ ৭২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সন্দীপরঞ্জন বক্সী পেয়েছেন আলো ও বিদ্যুৎ দফতর। এই দায়িত্বে আগের পুরবোর্ডে ছিলেন প্রাক্তন মেয়র পারিষদ মনজর ইকবাল। ৫৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জীবন সাহা দায়িত্ব পেয়েছেন এন্টালি ওয়ার্কশপ ও ছাপাখানা এবং গভীর নলকূপ দফতরের। এ সবের দায়িত্বে আগের বোর্ডে ছিলেন প্রাক্তন মেয়র পারিষদ সামসুজ্জমান আনসারি। ৫৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলরসন্দীপন সাহা শিক্ষা ও তথ্য প্রযুক্তি দফতরের দায়িত্ব পেয়েছেন। তৃণমূল কাউন্সিলরদের মুখ্যসচেতক হয়েছেন ১১০ নম্বর ওয়ার্ডের দু’বারের কাউন্সিলর বাপ্পাদিত্য দাশগুপ্ত।