বস্তি এলাকায় ১০০টিরও বেশি ঘর ছিল। অধিকাংশই আগুনে পুড়ে খাক হয়ে গিয়েছে। প্রতীকী ছবি।
সল্টলেকের ফাল্গুনী বাজার এলাকায় অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে ছাই হয়ে গেল শতাধিক ঝুপড়ি। সন্ধে সোয়া ৭টা নাগাদ এলাকায় আগুন লাগে। দ্রুত তা ছড়িয়ে যায় বিস্তীর্ণ এলাকায়। প্রায় আড়াই ঘণ্টার চেষ্টায় সেই আগুন কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হলেও রাত ১০টা পর্যন্ত আগুন পুরোপুরি নেভেনি বলে দমকলসূত্রে খবর। ঘটনাস্থলে পৌঁছন রাজ্যের দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু। বিধাননগরের মেয়র কৃষ্ণা চক্রবর্তী হাজির হন এলাকায়। আগুন নেভানোর কাজে নেমেছিল দমকলের অন্তত ১০টি ইঞ্জিন।
সল্টলেকের ফাল্গুনী বাজারের ওই এলাকায় বেশ কয়েকটি আবাসন রয়েছে। আগুন লাগে সেই আবাসনেরই লাগোয়া ঝুপড়ি এলাকায়। দাহ্য পদার্থ থাকায় ঝুপড়িতে দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ে। ঝুপড়ির ভিতরে থাকা একের পর এক সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হতেও দেখা যায় এলাকায়। যার ফলে আগুন আরও ভয়াবহ আকার নেয় ফাল্গুনী বাজারে। বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত হয় আবাসনের বাড়িগুলিও।
স্থানীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে, ওই বস্তি এলাকায় ১০০টিরও বেশি ঘর ছিল। অধিকাংশই আগুনে পুড়ে খাক হয়ে গিয়েছে। ঝুপড়ির বাসিন্দাদের নিরাপদে বের করে আনা হলেও আশ্রয় হারিয়েছেন বহু মানুষ। প্রথম দু’ঘণ্টায় আগুন বিশেষ নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি। পরে দমকলমন্ত্রী সুজিত হাজির হন এলাকায়। তিনি জানান, এলাকাটি অত্যন্ত সংকীর্ণ হওয়ায় দমকলবাহিনীর সবক’টি ইঞ্জিন পৌঁছতে পারেনি এলাকায়। ফলে এলাকায় দশটি ইঞ্জিন থাকলেও আগুন নেভানোর কাজ করতে পারছিল কেবল চারটি ইঞ্জিন। আবাসনের পাঁচিলের বাইরে থেকে হোসপাইপে করে জল দিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করে বাকি ইঞ্জিনগুলি। ফলে আগুন নেভাতে সময় লাগে।
দমকলমন্ত্রী ছাড়াও পরে ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছন বিধাননগরের মেয়র কৃষ্ণা এবং স্থানীয় কাউন্সিলররা। মেয়র জানিয়েছেন, আপাতত আশ্রয়হীনদের একটি কমিউনিটি হলে থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাঁদের খাওয়া দাওয়ারও ব্যবস্থা করেছে প্রশাসন। কৃষ্ণা বলেন, আপাতত আগুন নেভার অপেক্ষা করছি। এর পর রিপোর্ট দেখা হবে। রিপোর্ট পাওয়ার পর এই আশ্রয়হারাদের সরকারি নিয়মে মাথার ছাদ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।
কিন্তু কী করে আচমকাই আগুন এত বড় আকার নিল? স্থানীয় সূত্রে খবর, সিলিন্ডার বিস্ফোরণের জন্যই দ্রুত আগুন ছড়িয়েছে। অন্তত ৫-৭টি সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হয়েছে। সেই বিস্ফোরণের জেরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ফাল্গুনী আবাসনের বেশ কিছু বাড়ি। বিস্ফোরণের তীব্রতায় ঝুপড়িতে ব্যবহৃত অ্যাসবেস্টসের টুকরো ছিটকে এসে পড়ে তিন তলা আবাসনের ছাদে। দমকলবাহিনী সূত্রে খবর, আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে দ্রুত ঝুপড়ির ভিতর থেকে সিলিন্ডার বের করে এনে তা ঠাণ্ডা করার ব্যবস্থা করা হয়। যাতে আর বিস্ফোরণ না হয়। রাত সাড়ে ন’টা পর্যন্ত ১২ থেকে ১৫টি সিলিন্ডার উদ্ধার করতে পেরেছে দমকলবাহিনী। দমকলমন্ত্রী সুজিত জানিয়েছেন, প্রাণ হাতে করেই দমকলকর্মীরা অত্যন্ত সাবধানে সিলিন্ডার উদ্ধারের কাজ করেছেন। তাই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে দেরি হয়েছে।