মলে আগুন সল্টলেকে, ছড়াল তীব্র আতঙ্ক

দমকল সূত্রের খবর, মোটরবাইক ও প্রাইভেট গাড়ি মিলিয়ে ৪০টি গাড়ি আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে স্থানীয় বাসিন্দা ও শপিং মলের একাংশের মতে, ক্ষতিগ্রস্ত গাড়ির সংখ্যা আরও বেশি।

Advertisement
শেষ আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০১৯ ০৩:৩১
Share:

অগ্নি-যুদ্ধ: আগুন লেগেছে সল্টলেকের এজি ব্লকের একটি শপিং মলে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছেন দমকলকর্মীরা। বৃহস্পতিবার। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য

অগ্নি নির্বাপক যন্ত্রের পাইপ লাগানোর জন্য বেসমেন্টে ওয়েল্ডিংয়ের কাজ চলছিল। তারই মধ্যে সল্টলেকের এজি ব্লকের একটি শপিং মলে আগুন লেগে যাওয়ায় ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বিস্ফোরণের মতো শব্দ হতে থাকায় আতঙ্ক বাড়তে থাকে। বৃহস্পতিবার বেলা ৩টে ১০ মিনিটের ওই অগ্নিকাণ্ডে কেউ হতাহত হননি। কিন্তু বেসমেন্টের দু’টি তলায় রাখা বেশির ভাগ গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দমকলের ১৫টি ইঞ্জিন সাড়ে পাঁচ ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন আয়ত্তে আনে।

Advertisement

দমকল সূত্রের খবর, মোটরবাইক ও প্রাইভেট গাড়ি মিলিয়ে ৪০টি গাড়ি আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে স্থানীয় বাসিন্দা ও শপিং মলের একাংশের মতে, ক্ষতিগ্রস্ত গাড়ির সংখ্যা আরও বেশি। প্রাথমিক তদন্তের দমকলের অনুমান, যেখানে ওয়েল্ডিংয়ের কাজ চলছিল, সেখান থেকেই কোনও ভাবে আগুনের ফুলকি ছড়িয়ে গিয়ে বেসমেন্টে আগুন লাগে।

দমকল ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বেলা ৩টে ১০ নাগাদ বেসমেন্ট থেকে ধোঁয়া বেরোতে দেখেন মলের কয়েক জন নিরাপত্তারক্ষী। ওই মলটি আটতলা। বেসমেন্টের পরে তিনটি তলায় রয়েছে দোকানপাট। চার থেকে আটতলায় অফিস, রেস্তরাঁ। আটতলার ছাদে রয়েছে অ্যাস্ট্রোটার্ফের ফুটবল মাঠ।

Advertisement

চারতলার একটি অফিসের কর্মী তুহিনা বাগচী বলেন, ‘‘টানা ফায়ার অ্যালার্ম বাজতে থাকায় আমরা কনফারেন্স রুমের জানলায় উঁকি মেরে দেখি, বেসমেন্ট থেকে কালো ধোঁয়া বেরোচ্ছে। আতঙ্কিত হয়ে পড়ি। কোনও রকমে অফিস থেকে নীচে নেমে আসি।’’ তবে মলের কয়েক জন জানান, ফায়ার অ্যালার্ম তাঁরা শুনতে পাননি। পাঁচতলার একটি অফিসের কর্মী প্রশান্ত দাস জানান, তাঁরা নীচে নামার সময় বেসমেন্ট থেকে বিস্ফোরণের মতো আওয়াজ পাচ্ছিলেন। কয়েক জন তাঁদের জানান, বেসমেন্টে গাড়িতে আগুন লেগে বিস্ফোরণ ঘটছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বেসমেন্ট থেকে এত ঘনঘন বিস্ফোরণের আওয়াজ হচ্ছিল যে, ভিতরে ঢোকার কেউ সাহস পাননি।

মলের পাশেই পুজো মণ্ডপ। ধোঁয়া দেখে মণ্ডপের মাইক থেকেই মলের ভিতরের লোকেদের সতর্ক করা হয়। ওই পুজো কমিটির শঙ্কর চক্রবর্তী ও আশিস দাসেরা জানান, তাঁরা মানুষকে আতঙ্কিত হতে বারণ করে নীচে নেমে আসতে বলেন। কয়েক জনকে তাঁরাই চারতলা থেকে নীচে নামিয়ে আনেন। ওই মলের এক অফিসের কর্মী প্রহ্লাদ মণ্ডল বলেন, ‘‘বেসমেন্ট বি২-তে আমাদের অফিসের বেশ কয়েক জনের দামি মোটরবাইক, গাড়ি ছিল। বি২-তে পৌঁছতেই পারিনি আমরা। সব গাড়িই বোধ হয় পুড়ে গিয়েছে।’’

মলের ম্যানেজার সানি সিংহ জানান, গ্রিলে ওয়েল্ডিংয়ের কাজ চলছিল। বেসমেন্টের বি১ এবং বি২-তে ওয়েল্ডিং করে অগ্নি নির্বাপক যন্ত্রের পাইপ লাগানোর কাজ হচ্ছিল।

প্রশ্ন উঠছে, এত দিন কি তা হলে ওই শপিং মলের বেসমেন্টে অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থা ছিল না? মলের জলাধারে জল ছিল না বলেও অভিযোগ। দমকলের ডিজি জগমোহন বলেন, ‘‘ওই মলের অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র থেকে শুরু করে ফায়ার লাইসেন্স, সবই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে বলেন, ‘‘আগুনের প্রকৃত কারণ জানতে ফরেন্সিক তদন্ত হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement